হেলথ্ ডেস্ক:
পাথরকুচি ঔষধি উদ্ভিদ। দেড় থেকে দুই ফুট উঁচু। পাতা মাংসল ও মসৃণ, আকৃতি অনেকটা ডিমের মতো। চারপাশে আছে ছোট ছোট গোল খাঁজ। এই খাঁজ থেকে নতুন চারার জন্ম হয়। অনেক সময় গাছের বয়স হলে ওই গাছের খাঁজ থেকে চারা গজায়। পাতা মাটিতে ফেলে রাখলেই অনায়াসে চারা পাওয়া যায়। কাঁকর মাটিতে সহজেই জন্মে, তবে ভেজা-স্যাঁতসেঁতে জায়গায় দ্রুত বাড়ে। পাতা থেকে এ গাছ জন্ম নেয়। আসুন জেনে নিই পাথরকুচির ঔষধি গুণ :
-মেহ :সর্দিজনিত কারণে শরীরের নানা স্থানে ফোঁড়া দেখা দেয়। সে কারণে ব্যথা হয়, যাকে মেহ বলে। এ ক্ষেত্রে পাথরকুচি পাতার রস এক চামচ করে সকাল-বিকেল এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
-সর্দি :যে সর্দি পুরনো হয়ে গেছে সে ক্ষেত্রে এটি বিশেষ উপযোগী। কফ বিকারে পাথরকুচি পাতা রস করে সেটা একটু গরম করতে হবে এবং গরম অবস্থায় তার সঙ্গে একটু সোহাগার খৈ মেশাতে হবে। ৩ চা চামচের সঙ্গে ২৫০ মিলিগ্রাম যেন হয়। তা থেকে ২ চা চামচ নিয়ে সকাল-বিকেলে দু’বার খেতে হবে। এর দ্বারা পুরনো সর্দি সেরে যাবে ও সর্বদা কাশি থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
-কাটা বা থেঁতলে যাওয়া :টাটকা পাতা পরিমাণমতো হালকা তাপে গরম করে কাটা বা থেঁতলে যাওয়া স্থানে সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায়।
-রক্তপিত্ত :পিত্তজনিত ব্যথায় রক্তক্ষরণ হলে দু’বেলা এক চা চামচ পাথরকুচি পাতার রস দু’দিন খেলে সেরে যাবে।
-পেট ফাঁপা : পেট ফুলে যাওয়া, প্রস্রাব আটকে থাকা, আধোবায়ু, সরছে না, সে ক্ষেত্রে একটু চিনির সঙ্গে এক বা দুই চা চামচ পাথরকুচি পাতার রস গরম করে সিকি কাপ পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা মূত্র সরল হবে, আধোবায়ুরও নিঃসরণ হবে, ফাঁপাটাও কমে যাবে।
– শিশুদের পেটব্যথা :শিশুর পেটব্যথা হলে ৩০-৬০ ফোঁটা পাথরকুচি পাতার রস পেটে মালিশ করলে ব্যথার উপশম হয়। তবে পেটব্যথা নিশ্চিত হতে হবে।
-মৃগী রোগী :রোগাক্রান্ত সময়ে পাথরকুচি পাতার রস ২-১০ ফোঁটা করে মুখে দিতে হবে। একটু পেটে গেলেই রোগের উপশম হবে।
-শরীর জ্বালাপোড়া :দু’চামচ পাথরকুচি পাতার রস আধা কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে দু’বেলা সেবনে শরীরের জ্বালাপোড়া দূর হয়।
– কিডনির পাথর অপসারণ :পাথরকুচি পাতা কিডনি ও গলগণ্ডের পাথর অপসারণ করতে সাহায্য করে। দিনে দু’বার ২ থেকে ৩টি পাতা চিবিয়ে অথবা রস করে খেতে হবে।
– জন্ডিস নিরাময় :লিভারের যে কোনো সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে তাজা পাথরকুচি পাতা ও এর রস অনেক উপকারী।
– উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও মূত্রথলির সমস্যা থেকে পাথরকুচি পাতা মুক্তি দেয়।
– পাথরকুচি পাতার রসের সঙ্গে গোলমরিচ মিশিয়ে পান করলে পাইলস ও অর্শ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
– কলেরা, ডায়রিয়া বা রক্ত আমাশয় রোগ সারাতে পাথরকুচি পাতার জুড়ি নেই। ৩ মি.লি. পাথরকুচি পাতার জুসের সঙ্গে ৩ গ্রাম জিরা ও ৬ গ্রাম ঘি মিশিয়ে কয়েক দিন পর্যন্ত খেলে এসব রোগ থেকে উপকার পাওয়া যায়।
– ত্বকের যত্ন :পাথরকুচি পাতায় প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে, যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। সঙ্গে সঙ্গে এর মধ্যে জ্বালাপোড়া কমানোর ক্ষমতা থাকে। যারা ত্বক সম্পর্কে অনেক সচেতন তারা পাথরকুচি পাতা বেটে ত্বকে লাগাতে পারেন। ব্রণ ও ফুসকুড়ি জাতীয় সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
– বিষাক্ত পোকায় কামড়ালে এ পাতার রস আগুনে সেঁকে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।