বিশেষ প্রতিনিধি: ফদিপুরের বোয়ালমারী উপজেলার আমরদী গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রী অনন্যা(২৪) এর বিরুদ্ধে ভুমিষ্ট শিশুকে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে। মো: লিয়াকত আলীর স্ত্রী অনন্যা গতকাল শুক্রবার বিকেলে স্বামীর বাড়ীতেই এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। সে সময় শিশুটিকে গলাটিপে হত্যা করেছে তার মা এমন অভিযোগ করে অনন্যার শশুর বাড়ীর পরিবার। দীর্ঘদিন তিন বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি দেয়া প্রবাসী লিয়াকতের স্ত্রীর সন্তান ভুমিষ্ট ও মৃত্যু নিয়ে রহস্য ও নানা গুনজনের সৃষ্টি হয়েছে। সন্ত্মান জন্ম হওয়ার সময় অন্যন্যা গুরুত্বর অসুস্থ হওয়ায় মৃত সন্ত্মান নিয়ে গতকাল শুক্রবার রাতেই ফরিদপুর শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শনিবার অনন্যা কিছুটা সুস্থ হলে জানায়, তার চাচাতো দেবর আরিফ(২৮) তার মোবাইলে একটি খারাপ ছবি পুজি করে তাকে গত ২/৩ বছর ব্লাকমেইল করে আসছে। ওই খারাপ ছবিটি স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দিবে ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে মাঝে মধ্যে অনেক টাকা নিতো। আবার শারীরিক মেলামেশা করত। আরিফ ফরিদপুর শামসুল আলম মাদ্রাসায় পড়ার সময় তাকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছি ও পড়ালেখার খরচও দিতাম। কয়েক মাস আগে টাকা দিতে অস্বীকার করায় সেই খারাপ ছবিটি আমার স্বামীর মোবাইলে পাঠিয়ে দেয়। আরিফকে এই সন্ত্মানের পেটে আসার কথা জানালে সে বলে ওই শিশুটিকে মেরে ফেলবো।
এদিকে ব্লাকমেইল করে অর্থআত্মসাৎ ও পরকীয়া এবং সন্ত্মানের কথা জানতে চাইলে আরিফুল ইসলাম আরিফ সব অস্বীকার করে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স ইনচার্জ শরিফুর নাহার জানান, গতকাল নাইট শিফটে এসে শুনি ঐ নারীটি মৃত শিশু বাচ্চাসহ গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে। ডাক্তার তার চিকিৎসা করে ভর্তি রেখেছেন ও মৃত বাচ্চাটি হাসপাতালের ডেড বডি রুমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
২০১২ সালে বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মৃত আলী মিয়া মেয়ে অনন্যার সাথে ওই উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের আমরদী গ্রামের ইউনুস ফকিরের ছেলে লিয়াকত আলীর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে আট বছরে একটি ছেলে ও চার বছরের একটি মেয়ে আছে।
অনন্যার মা আঞ্জুয়ারা বেগম জানান, আমার মেয়েটা গত ছয়মাস তার স্বামীর বাড়ীতেই ছিল। গতকাল শেখানেই তার একটি কন্যা সন্ত্মান জন্ম সেখানেই মারা যায়। মেয়ে অসুস্থ শুনে আমি হাসপাতালে ওর পাশে একাই আছি। এই সন্ত্মান কার ও কিভাবে মারা গেছে ওই ভাল বলতে পারে, ওর কাছে জিগান? তবে এই ঘটনায় আমার মেয়ের যে ক্ষতি করেছে তার শাস্তি চাই আমি।
অনন্যার জা নাছিমা আক্তার জানান, অনন্যা গতকাল বিকেলে ভাবি ভাবি বলে চিৎকার করে ডাকলে ঘরের বাইরে থেকে বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনি। আমি দৌড়ে ওর ঘরে গেলে দেখি বাচ্চাটা ওর দুই পায়ের মাঝে পড়ে আছে অনন্যা বাচ্চার গলায় হাত দিয়ে ধরে আছে। সে গুরম্নত্বর অসুস্থ থাকায় বাচ্চাসহ তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো: নুরুল আমিন জানান, মৌখিকভাবে বিষয়টি শুনেছি তবে এবিষয়ে আমরা এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। মৃত শিশুটি ও তার মা হাসপাতালে আছে। প্রবাসীর স্ত্রী ওই মেয়েটি যদি কারো বিরুদ্ধে ধর্ষন মামলা করে তাও আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।