• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
রাজশাহীতে মেসভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে বিপাকে শিক্ষার্থীরা

মোঃ আলাউদ্দিন মন্ডল, রাজশাহী

রাজশাহীতে নতুন বছরে এসে ১০০ থেকে ২০০ টাকা মেসভাড়া বৃদ্ধি করেছে বেশ কিছু ছাত্রাবাস। মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা এমন অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে মেসমালিকদের ভাষ্য, করোনাকালে তাঁদের বিদ্যুৎ বিলসহ রাজশাহী সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ বা কমানো হয়নি। বর্তমানে মেসমালিকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাঁরা নতুন বছরে মেসে সংস্কারকাজও করেছেন।

এ কারণে তাঁরা খুব অল্প পরিমাণ অর্থ বৃদ্ধি করেছেন।শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনার মধ্যে আবাসিক হল বন্ধ রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা চলছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক অনেক শিক্ষার্থীরাও কোচিং করতে এসে মেসে থাকছেন। আবার অনেকে লেখাপড়া শেষ করে রাজশাহীতে মেসে থেকে চাকরির জন্য পড়াশোনা করছেন। করোনায় সবার পরিবার অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে রয়েছে। এ অবস্থায় মেসভাড়া বাড়ানো অমানবিক, অযৌক্তিক।নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজশাহী কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে রাজশাহী নগরের কুমারপাড়ায় একটি মেসে থাকা এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার মেসে মোট ২০ জন বর্ডার আছি। গত বছর এই মেসে থাকাকালে প্রতি মাসে ভাড়া দিতাম ১ হাজার ৩০০ টাকা করে। এবার জানুয়ারি থেকে মেসমালিক আরও ২০০ টাকা বাড়িয়ে ভাড়া দেড় হাজার টাকা করেছেন।

আমরা এর প্রতিবাদ করেও কোনো ফল পাইনি।আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এই সময় যেখানে মেসের ভাড়ায় ছাড় দেওয়া উচিত, সেখানে ভাড়া বাড়িয়ে আমাদের বিপদে ফেলা হচ্ছে। এই করোনাকালে চাকরিপ্রত্যাশী হিসেবে ২০০ টাকা বাঁচাতে পারলেও আরেকটি চাকরিতে আবেদনের ফি জোগাড় করতে পারি। কিন্তু বাড়ির মালিক মেসের কিছু সংস্কারের নামে এই ভাড়া বাড়িয়েছেন।

তিনি বলেন, মেসমালিক জানিয়েছেন, আগামী মার্চ থেকে আরও ১০০ টাকা বৃদ্ধি করা হবে।বোয়ালিয়া এলাকার একটি মেসের এক শিক্ষার্থী জানান, তাঁর ভাড়া এ মাসে ১৩০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। তিনি ওই মেসে মাত্র কয়েক মাস হলো উঠেছেন। মেসের কোনো সিট খালি নেই যে সিট-সংকটের কথা বলা যাবে। এই অবস্থায় মেসভাড়া বাড়ানো অযৌক্তিক।নগরের রইছ ছাত্রাবাসের মালিক রইছ উদ্দিন বলেন, ২০২১ সালে মেসের ভাড়া বাড়ানো হবে, এটা আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। যেখানে ৫০০ টাকা বাড়ানোর কথা ছিল, সেখানে মাত্র ২০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। সেটাও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বাড়ানো হয়েছে।

রইছ উদ্দিনের দাবি, তিনি করোনার প্রকোপের সময়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মেসভাড়াই নেননি।রাজশাহী নগরের ঘোড়ামারা এলাকার নূর মহল ছাত্রীনিবাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এই ছাত্রীনিবাসের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি ভাড়া সেই অর্থে বাড়াননি। অনেকের ভাড়া যেখানে ১ হাজার ৬৫০ টাকা ছিল, সেই ভাড়া ১ হাজার ৭০০ করেছেন শুধু। এ রকমভাবে খুব সামান্য টাকা বাড়িয়েছেন। তিনি এটি মেসমালিক সমিতিকে অবগত করেই করেছেন। শিক্ষার্থীরা এতে কোনো আপত্তি করেননি বলে দাবি করেন তিনি।
করোনাকালে মেসভাড়া বৃদ্ধি করা অমানবিক হবে উল্লেখ করে রাজশাহী মহানগর মেসমালিক সমিতির সভাপতি এনায়েতুর রহমান জানান, নতুন বছরে কোনো ধরনের মেসভাড়া বৃদ্ধি করেননি তারা। এছাড়া তাদের কাছেও শিক্ষার্থীরা এ ধরনের অভিযোগ করেছেন। পরে তাঁরা ওই সব মেসে গিয়ে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করেছেন। এখন তাঁদের সমিতির বাইরের মেসগুলোর ভাড়া বৃদ্ধি করলে তাতে তাঁরা কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারছেন না।তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে পরামর্শ রাখেন, যেন এমন মেস ভাড়া নেন, যেটা সমিতির অন্তর্ভুক্ত। তাহলে সেখানে শিক্ষার্থীদের যেকোনো ধরনের সমস্যার ব্যাপারে তাঁরা কথা বলতে পারবেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।