• ঢাকা
  • শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
৪০টি রোগের কারণ চিনি

ছবি প্রতিকী

চিনির ক্ষতিকর প্রভাবগুলো খুব অল্প সময়ে চোখে পড়ে না। তাই আমরা সহজে বিশ্বাস করি না যে, চিনি আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর

সাদা অতি স্বচ্ছ যে উপাদানকে আমরা চিনি বলে জানি তা সম্পূর্ন অপ্রাকৃতিক একটি উপাদান যা আখ বা মিষ্টি বিট থেকে তৈরি হয়। শিল্প-কারখানায় রিফাইনিং পদ্ধতিতে আখের রস থেকে চিনি তৈরি করার সময় ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন, এনজাইম এবং অন্যান্য উপকারী পুষ্টি উপাদান দূর করা হয়। কেন চিনি আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর? এর প্রধান কারণ হলো এটি সম্পূণর্ রাসায়নিক একটি উপাদান (হেরোইনের মতো) এবং যখন রিফাইন করা হয় তখন সব ধরনের প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান দূর করা হয় যা স্বাভাবিকভাবেই একটি গাছে থাকে। হেরোইন এবং চিনির রেফাইনিং প্রক্রিয়া প্রায় একই রকম। হেরোইন তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমে পপি গাছের বীজ থেকে অনিয়াম আলাদা করা হয়। তারপর অপিয়ামকে রিফাইন করে মরফিন এবং মরফিনকে আবার রিফাইন করে হেরোইন তৈরি করা হয়। ঠিক একই রকমভাবে আখ বা বিট থেকে রস বের করা হয় এবং রিফাইন করে মেলোসেস তৈরি করা হয়। তারপর একে রিফাইন করে ব্রাউন সুগার এবং সবশেষে রিফাইন করে সাদা স্বচ্ছ চিনি (ঈ১২ঐ২২ঙ) প্রস্তুত করা হয় যা মানবদেহের জন্য অনুপযোগী একটি রাসায়নিক উপাদান।

চিনির ক্ষতিকর ৪০টি কারণ :

বেশিরভাগ মানুষ সকালে চা বা কফির সঙ্গে এক থেকে দুই চামচ চিনি মিশিয়ে খেয়ে থাকেন, কিন্তু তারা জানেন না যে এ অতিরিক্ত চিনি আমাদের দেহের জন্য কতখানি ক্ষতিকর। কারণ চিনির ক্ষতিকর প্রভাবগুলো খুব অল্প সময়ে চোখে পড়ে না তাই আমরা সহজে বিশ্বাস করি না যে, চিনি আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। আর ক্ষতিকর চিনির উপস্থিতি বেশি দেখা যায় জাংক ফুডে (ঔঁহশ ভড়ড়ফং)। এ ছাড়াও প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে চিনি এবং অন্যান্য আটিির্ফশিয়াল মিষ্টি বিদ্যমান থাকে।

আমরা বিভিন্ন খাবার যেমন ফল, শস্য, বাদাম এবং শাকসবজি থেকে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় এক ধরনের চিনি পেয়ে থাকি। আমরা মনে করি, এসব খাবারে আসলে কোনো চিনি থাকে না এজন্য অতিরিক্ত মিষ্টি হিসেবে রিফাইন্ড বা দানাদার চিনি যোগ করি। কিন্তু এই চিনি আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। বিøচিং এবং সালফোনেশন পদ্ধতিতে চিনি রিফাইন্ড করা হয় এবং সেখানে সালফার ব্যবহৃত হয়। এ সালফার বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান এবং আমরা যখন চিনি বা চিনিজাতীয় যেকোনো মিষ্টিদ্রব্য গ্রহণ করি তখন খুব অল্প পরিমাণে এ বিষাক্ত উপাদান আমাদের দেহে প্রবেশ করে। আমাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় খাদ্য তালিকায় যে শকর্রা জাতীয় খাবার থাকে তাতে যে পরিমাণ চিনি বিদ্যমান থাকে তা আমাদের দেহে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। প্রথমে এ চিনি গøুকোজে রূপান্তরিত হয় এবং পরে দেহে শক্তি উৎপাদন করে। যখন দেহে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি চিনি গ্রহণ করা হয় তখন তা দেহের জন্য উপকারী না হয়ে বরং ক্ষতির কারণ হয়ে দঁাড়ায় এবং প্রচুর শারীরিক অসুবিধা দেখা দেয়। বতর্মানে বেশিরভাগ খাবারে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। যেমন আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি, কাবোের্নটেড ড্রিঙ্কস এবং অন্যান্য সফট ড্রিঙ্কস, এনাজির্ ড্রিঙ্কস এবং প্রক্রিয়াজাত অনেক খাবারে। আমরা রোগের জন্য সব সময় ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য প্যাথোজেনকে দায়ী করি কিন্তু চিনিকে করি না, কারণ চিনির প্রভাব দ্রæত আমাদের শরীরে পড়ে না।

যদি এখনো কারো মনে চিনি বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকে যে,

কেন চিনি আমাদের জন্য ক্ষতিকর হবে। তাহলে নিচের তালিকাটি লক্ষ করুন এবং জানুন দেহে চিনির ক্ষতিকর প্রভাব সম্বন্ধে :

১. দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়,
২. দেহে খনিজ লবণের ভারসাম্য নষ্ট করে,
৩. শিশুদের হাইপার অ্যাক্টিভিটি, বদমেজাজি, অমনোযোগী এবং একরোখা আচরণের জন্য দায়ী চিনি,
৪. দেহের ট্রাইগিসারাইডের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেয়,
৫. ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের (সংক্রামক রোগ) বিরুদ্ধে শরীরে যে প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকে তা দুবর্ল করে দেয় বা কমিয়ে দেয়,
৬. টিস্যুর স্থিতিস্থাপকতা এবং কাযর্ক্রম কমিয়ে দেয়,
৭. উপকারী হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন কমিয়ে দেয়,
৮. শরীরে ক্রোমিয়ামের অভাব দেখা দেয়, ৯. ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় বিশেষ করে স্তন, ওভারি, প্রোস্টেট ও রেকটাম, ১০. অনাহার বা অভুক্ত অবস্থায় গ্লুকোজ লেভেল বাড়িয়ে দেয়,
১১. কপারের অভাব দেখা দেয়,
১২. ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম শোষণে বাধা দেয়,
১৩. দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে দেয়,
১৪. নিউরোট্রান্সমিটারের লেভেল বাড়িয়ে দেয়, যেমন; ডোপামিন, সেরোটনিন এবং নরএপিনেফ্রিন,
১৫. হাইপোগ্লাইসেমিয়ার জন্য চিনি দায়ী, ১৬. এসিডিটি তৈরি করে,
১৭. শিশুদের এড্রিনালিন লেভেল দ্রæত বৃদ্ধি করে,
১৮. অকালে বাধর্ক্য আনে,
১৯. অ্যালকোহলিজমের ঝুঁকি বাড়ায়, ২০. দঁাতের ক্ষয় করে,
২১. স্থূল হতে সাহায্য করে,
২২. অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ অন্ত্রনালির প্রদাহ এবং আলসারেটিভ কলিটিসের ঝুঁকি বাড়ায়,
২৩. গ্যাস্ট্রিক বা ডিওডেনাল আলসারের কারণ হতে পারে,
২৪. আথর্্রাইটিসের অন্যতম কারণ,
২৫. অ্যাজমা হতে পারে,
২৬. এক প্রকার ছত্রাক ইস্টের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়,
২৭। পিত্তথলির পাথর হওয়ার কারণ,
২৮. হৃদরোগের কারণ, ২৯. অ্যাপেনডিসাইটিসের কারণ,
৩০. অশের্র কারণ চিনি,৩১. মাল্টিপল স্কেলরোসিস হয়,
৩২. ভেরিকোসভেইন (রক্তনালির স্ফীতি) হতে পারে,
৩৩. যারা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল গ্রহণ করেন চিনি তাদের গ্লুকোজ এবং ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়,
৩৪. দন্ত রোগের ঝুঁকি বাড়ায়,
৩৫. অস্ট্রিওপরোসিস (হাড়ক্ষয়) হতে পারে,
৩৬. স্যালাইভা অ্যাসিডিটি হতে পারে,
৩৭. ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা কমায়,
৩৮. রক্তে ভিটামিন ই-এর পরিমাণ কমায়, ৩৯. গ্রোথ হরমোন (বৃদ্ধি হরমোন) কমায়, ৪০. কোলেস্টেরল বাড়ায়।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।