• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
রোগ প্রতিরোধে বাঁধা কপির জুড়ি নাই

ছবি প্রতিকী

বাঁধা কপি বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় পুষ্টিকর শীতকালীন সবজি। বাঁধা কপি দেশের সর্বত্রই চাষ হয় এবং হাট বাজারে কম দামেই প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। বাঁধা কপির কচি পাতা সবজি হিসেবে এবং মাছ মাংস দিয়ে তরকারি করে খাওয়া যায়। বাঁধা কপি একটি পাতা সবজি। পাতা গুলো কুন্ডলী আকারে একত্রে জড়ো হয়ে থাকে। আলো তাপ ও বাতাসের সংস্পর্শে পাতার ক্লোরোফিল মাটি থেকে নেয়া উপাদান দিয়ে গ্লুকোজ তৈরী করে। এ গ্লুকোজ বা শর্করা উদ্ভিদের অন্যান্য অংশে পরিবাহিত হয়। বাঁধা কপিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, বি, সি, ই, কে, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও লৌহ পাওয়া যায়। মানব দেহের পুষ্টির চাহিদা পূরণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাঁধাকপি উদ্ভিদ জগতের ঈৎঁপরভবৎধব পরিবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সবজি। এর বৈজ্ঞানিক নাম ইৎধংংরপধ ঙষবৎধপবধ। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী বাঁধা কপিতে খাদ্য উপাদান হলোঃ প্রোটিন ১.৩ গ্রাম, শর্করা ৪.৭ গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, খনিজ লবণ ০.৫ গ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.০৬ মিলিগ্রাম, বি২ ০.০৫ মিলিগ্রাম, সি ৬০ মিলিগ্রাম, ই ৬.৪ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩১ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.৮ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৬০০ মাইক্রোগ্রাম, খাদ্য শক্তি ২৬ কিলোক্যালরি। বাঁধা কপিতে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান দেহের নানা রোগ প্রতিরোধ করে। এতে থাকা ভিটামিন সি দাঁত, মাড়ি ও পেশি মজবুত করে। সর্দি কাশি ও ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা করে। চামড়ার সৌন্দর্য, চর্ম রোগ এবং মুখের ঘা প্রতিরোধ করে। ভিটামিন এ প্রচুর পরিমাণে বাঁধা কপিতে থাকে বিধায় এ সবজি নিয়মিত খেয়ে ভিটামিন “এ” এর অভাব জনিত রোগ থেকে বাঁচা যায়।

ভিটামিন এ এর অভাবে চোখের নানা সমস্যা ও দৃষ্টি শক্তি কমে যায়। শিশুদের রাতকানা রোগ দেখা দেয়। বাঁধা কপিতে ভিটামিন ই বা টোকোফেরল থাকে যা মহিলাদের বন্ধাত্ব বা শিশু জন্ম দানের অক্ষমতা প্রতিরোধ করে। বাঁধা কপিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে। যা বাড়ন্ত শিশুদের হাঁড় ও দাঁত গঠনের জন্য বেশী প্রয়োজন। তাছাড়া যেসব মায়েরা গর্ভবতী এবং যারা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান তাদের ক্যালসিয়াম প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজন।

এর অভাবে টিটেনি নামক রোগ হয়। মাংস পেশীতে সংকোচন হয় ফলে ব্যথা বেদনা করে। বাঁধা কপিতে প্রচুর লৌহ পাওয়া যায়। লৌহের অভাবে দেহে “এনিমিয়া” বা রক্তশূণ্যতা রোগ দেখা দেয়। ফলে দেহে অপুষ্টি জনিত রোগে শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। ছোট ছেলে-মেয়েরা গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েরা এ রোগে বেশী আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে ওঠতি বয়সের মেয়েদের মাসিকের পর এ রোগটি বেশী দেখা দেয়। তাই শিশু কিশোর, কিশোরী ও গর্ভবর্তী এবং প্রসূতি মায়েদের জন্য বাঁধা কপি একটি উৎকৃষ্ট সবজি। এতে ভিটামিন “কে” থাকে। যা স্মৃতি শক্তি বাড়তে সহায়তা করে।

এ ভিটামিন চৎড়ঃযৎড়সনরহ নামক এক প্রকার পদার্থ তৈরী করে যা শরীর কেটে গেলে রক্ত জমাট বাধতে সাহায্য করে। বাঁধা কপিতে আছে “ইনডলস” নামক একটি উপাদান যা অন্ত্র ও মলদ্বারের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। তাছাড়া এ সবজিতে “জেনিস্টেন” নামক একটি উপাদান থাকে যা স্তন, প্রস্টেট ও মস্তিষ্কের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। বিজ্ঞানীদের মতে বাঁধা কপিতে “গ্লুটামিন” নামক এক প্রকার অ্যামাই এসিড থাকে যা পাকস্থলীতে রক্ত প্রবাহ বাড়ায় এবং পাকস্থলীর আবরণী কলাকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। ফলে বাঁধা কপি আলসার নিবারণ করে। বাঁধা কপিতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে। ফলে হজম শক্তি বেশী হয় ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। বাঁধা কপি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

তাছাড়া মানব দেহের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। বাঁধা কপিতে ফ্রি র‌্যাডিকেল ফাইটিং প্রোপার্টি আছে যা ত্বকের যেকোনো সমস্যা সমাধানে কাজ করে। পরিশেষে বলা যায় যাদের হাঁড়ের সমস্যা আলসার, দেহের ওজন বেশী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা নিয়মিত বাঁধা কপি খান খুবই উপকার পাবে। শীতকালে নানা প্রকার টাটকা শাক সবজি পাওয়া যায়। তাই পরিবারের সবাই মিলে বেশী করে সবুজ, লাল ও রঙিন শাক সবজি খান, সুস্থ থাকুন।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মার্চ ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« ফেব্রুয়ারি    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।