মোঃ নুরুল ইসলাম, সদরপুর থেকে
গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহ আর বর্ষা শেষে শরতে ফরিদপুরের প্রকৃতি সেজে উঠেছে আপন মনে। পদ্মা তীর ছেয়ে গেছে কাশফুলে। যেদিকে চোঁখ যায় শুধু কাশফুল আর কাশফুল। ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার ২ নম্বর আকোটের চর ইউনিয়নের আকোট বাজার সংলগ্ন পদ্মা নদীর চর। বিশাল এ চরজুড়ে ছেয়ে গেছে সাদা কাশবন। সাদা এত বড় কাশবন ফরিদপুরে আর কোথাও নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইট-পাথরের শহরের একঘেয়েমি জীবনের ক্লান্তি দূর করে কেউ পরিবারসহ আবার কেউ বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন দিগন্তজোড়া কাশফুলের রাজ্যে। ছবি ও সেলফি তুলতে ব্যস্ত দর্শনার্থীরা।
সদরপুর থেকে ঘুরতে আসা ফাতেমা ইসলাম দোলা বলেন, ‘মুগ্ধ হওয়ার মতো একটি জায়গা। কাশফুলের নরম ছোঁয়ায় মানুষের কঠিন মনটাও যেন নরম হয়ে আসে।’
আকোটচর ইউনিয়নের মনিকোঠা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা শিপন বেপারি বলেন, ‘কালের গর্ভে ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় সদরপুর থেকে দিন দিন শরতের কাশফুল যেন হারিয়ে যাচ্ছে। একটা সময় ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায় কাশবনের দেখা মিলতো। এখন সদরপুরের গ্রামগঞ্জে কাশফুল তেমন চোখে পড়ে না। সেগুলোও হারিয়ে যাচ্ছে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানান, বিশাল এই বালুচরে ভালো কোনো ফসলাদি হয় না। শরতকালে এ চর কাশবন ছেয়ে যায়। তিনি বলেন, কাশবন বপন করা লাগে না। নিজ থেকেই চরজুড়ে কাশফুলে ছেয়ে যায়।
এ বিষয়ে সদরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান বলেন, ‘এটা একটা বিশাল চর। কয়েকশ একর জমি হবে। বিশাল এই চরে মালিকানা ও খাসজমি রয়েছে। গত কয়েকবছর ধরে শরতকালে বিশাল এই চরটি কাশফুলে ভরে উঠছে। কাছে ও দূরের অসংখ্য মানুষ এখানে ভিড় জমান।’
ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জিয়াউল হক বলেন, কাশবন চাষে বাড়তি পরিচর্যা ও সার-কীটনাশক প্রয়োগের দরকার হয় না। আপনা আপনি কাশবনের সৃষ্টি হয়। কাশ বা ছন কৃষকরা ঘরের ছাউনি হিসেবেও ব্যবহার করে থাকেন। তবে আগের মতো গ্রামগঞ্জে কাশফুল দেখা যায় না। পদ্মার চর এলাকাসহ ফরিদপুরের কিছু নদী এলাকায় কাশবন দেখা যায়।
মোঃ নুরুল ইসলাম
সদরপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুর