• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
সঙ্গিনীর খোঁজে ৩,০০০ কিলোমিটার পাড়ি ‘বিবাগী’ বাঘের

সঙ্গিনীর খোঁজে ওয়াকার। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।

খাদ্য বা বাসস্থানের সমস্যা ছিল না। এলাকা দখলের লড়াইয়ে নেমে প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে হারতেও হয়নি। শুধু মনের মতো সঙ্গিনীর খোঁজে মহারাষ্ট্রের টিপেশ্বর অভয়ারণ্য ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিল সে। প্রায় ৩,০০০ কিলোমিটার হেঁটে রেকর্ড গড়ে ফেলেছে সাড়ে তিন বছরের বাঘটি।

মহারাষ্ট্রের ৭ জেলা এবং পড়শি রাজ্য তেলঙ্গানার জঙ্গল ঢুঁড়ে ফেলেও অবশ্য সঙ্গিনীর সন্ধান পায়নি সে। মহারাষ্ট্র বন বিভাগের আধিকারিকেরা এখন তার জন্য উপযুক্ত বাঘিনি সন্ধানের কথা ভাবছে। আর নেটাগরিকদের একাংশ রসিকতা করে বলছেন, বাঘদের জন্যেও এ বার ‘টিন্ডার ডেটিং অ্যাপ’ চালু করার কথা ভাবা যেতে পারে।

মহারাষ্ট্র বনবিভাগের খাতায় তার পরিচিতি টি১সি১ নামে। কিন্তু দেশ-বিদেশের বন্যপ্রাণ প্রেমী আর গবেষকদের কাছে ইতিমধ্যেই ‘ওয়াকার’ নামে পরিচিতি পেয়েছে তরতাজা সেই যুবক বাঘ। গলায় লাগানো রেডিয়ো কলারের তথ্য জানাচ্ছে, ২০১৯ সালের জুন মাসে যভতমল জেলার টিপেশ্বর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল ওয়াকার।

পরবর্তী ৯ মাস ধরে মহারাষ্ট্র এবং পড়শি রাজ্য তেলঙ্গানার বিভিন্ন এলাকায় হেঁটে বেড়ায় সে। তেলঙ্গানার আদিলাবাদের জঙ্গলে বেশ কিছু দিন কাটিয়েছিল ওয়াকার। তারপর ফের শুরু হয় ‘পরিব্রাজন’।

গত মার্চ মাসের গোড়ায় ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিসের আধিকারিক পরভিন কাসওয়ান প্রথম ওয়াকারের কথা জানিয়েছিলেন। তত দিনে ২,০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পুরনো ডেরার কাছাকাছি ফিরে এসেছে সে। মহারাষ্ট্রের যভতমল এবং নান্দেড় জেলার সীমানায় পাইনগঙ্গা অভয়ারণ্যে অস্থায়ী আস্তানা বানিয়েছে। পরভিনের মতে, সঙ্গিনীর খোঁজ ছাড়া তার এই যাযাবরবৃত্তির অন্য কোনও কারণ থাকার তেমন সম্ভাবনা নেই।

এপ্রিল মাসে তাকে ধরে রেডিও কলার বদল করা হয়েছিল। এরপর অওরঙ্গাবাদ জেলার অজিণ্ঠা পাহাড়ের বনেও কিছুদিন কাটায় সে। প্রাচীন গুহাচিত্রের জন্য প্রসিদ্ধ এই পর্যটনকেন্দ্রে অবশ্য কেউ দেখা পাননি তার। প্রসঙ্গত, টিপেশ্বরের বাঘিনি টি-১-এর সন্তান টি১সি১-কে ছোটবেলাতেই রেডিও কলার পরিয়েছিল বন দফতর।

মহারাষ্ট্র বনবিভাগের আধিকারিক নিতিন কাকোডকর সম্প্রতি বলেন, ‘‘গত তিন মাসেও বিস্তর পথ হেঁটেছে বাঘটি। আপাতত সে রয়েছে টিপেশ্বর থেকে প্রায় ১,৪৭৫ কিলোমিটার দূরে, বুল্দনা জেলার দয়াগঙ্গা অভয়ারণ্যে। আমরা জিপিএস ট্র্যাকারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছি, এ পর্যন্ত সে প্রায় ৩,০২০ কিলোমিটার পথ হেঁটেছে।’’

পরভিন জানিয়েছেন, ওয়াকার মূলত দিনের বেলায় বিশ্রাম নিয়ে রাতে জঙ্গল, নদী,  রাস্তা পেরিয়ে হেঁটেছে। এই দীর্ঘ পথে বড় লোকালয় এড়িয়ে গিয়েছে সে। মাঝেমধ্যে গবাদি পশু মারলেও মানুষের উপর হামলা করেনি।

কিন্তু কী ভাবে মিটবে সঙ্গিনী সমস্যা? নিতিনের জবাব, ‘‘দয়াগঙ্গা অভয়ারণ্যে চিতাবাঘ, ভালুক, হরিণ, নীলগাই থাকলেও অন্য কোনও বাঘ নেই। রাজ্যেরই অন্য কোনও জঙ্গল থেকে একটি বাঘিনিকে সেখানে আনা যায় কি না, সে বিষয়ে আমরা ভাবনা-চিন্তা করছি।’’

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মার্চ ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« ফেব্রুয়ারি    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।