মোঃ রমজান শিকদার,ভাঙ্গা (ফরিদপুর) সংবাদদাতা-২২/৮/২০২৪ ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গারপাড় গ্রামের যুবক শেখ নাঈম(২৫) উন্নত জীবনের আশায় ইতালিতে যাওয়ার পথে লিবিয়ার মাফিয়া চক্রের হাতে আটক হয়। আটকের পর দীর্ঘ আট মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার পরিবারের লোকজন জানতে পারে শেখ নাঈমকে মাফিয়াচক্র মেরে ফেলেছে। নাঈম ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া অবস্থায় দালালের খপ্পরে পড়ে ইতালির পথে রওনা দেয়। শেখ নাইম উক্ত গ্রামের শেখ নূর হোসেনের পুত্র। মৃত্যু সংবাদ পেয়ে পরিবারের লোকজন শোকে পাথর হয়ে যায়। নাঈমের মা-বোনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে তাদের সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করে।
শেখ নাঈমের পিতা শেখ নূর হোসেন জানায়, শেখ নাঈম ঢাকাতে পড়ালেখা অবস্থায় ইতালি প্রবাসী দালাল মেহেদির খপ্পরে পড়ে। সে নাঈমকে বলে ১৪ লাখ টাকা দিতে পারলে তাকে ইতালি নিয়ে যাওয়া হবে। আমি আমার জমি বিক্রি করে দালাল মেহেদির মা ও মামার হাতে ১৪ লাখ টাকা তুলে দেই। দালাল মেহেদির বাড়ি আমার বাড়ীর পাশেই হওয়ায় আমাদের বিশ্বাস ছিল আঘাত। এরপর নাঈমকে গত জানুয়ারি মাসে লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শেখ নাঈমকে মাফিয়াচক্র আটক করে তার উপর নির্যাতন চালায় এবং সেই ভিডিও অডিও কলে আমাদের কাছে পাঠিয়ে টাকা দাবি করে। আমরা তখন দালাল মেহেদীর সাথে যোগাযোগ করলে সে বিভিন্ন টাল বাহানা করতে থাকে। এর পর কয়েক মাস কেটে গেলে আমরা জানতে পারি ভাঙ্গার আরো ২ সহযোগী নাঈমের সাথে মাফিয়াচকের হাতে আটক। এরপর আমরা নাঈমের আর কোন খোঁজ খবরই পাচ্ছিলাম না। আমরা মেহেদির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আরো ২০ লাখ টাকা দিলে নাঈমকে ছেড়ে দিবে। আমরা আবারো সহায় সম্বল বিক্রি করে নাঈমের মামা ও মার হাতে আরো ২০ লাখ টাকা তুলে দেই। টাকা দেওয়ার কয়েক মাস পার হলেও নাঈমের কোন খোঁজখবর আমরা পাচ্ছিলাম না। পরবর্তীতে নাঈমের সাথের সহযোগী মালিগ্রামের বাড়িতে যোগাযোগ করলে তারাও তাদের সন্তানের কোন খোঁজ খবর পাচ্ছিল না বলে জানান। আজ (২২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার) সকালে নাঈমের ঐ সহযোগী মাফিয়া চক্রের হাত থেকে মুক্তি পায়। তার বাড়ি ভাঙ্গা উপজেলার চান্দা ইউনিয়নের মালিগ্রামে। সে ফোনে তার পরিবারের লোকজনের কাছে জানায় কয়েক মাস আগেই নাঈমকে মেরে ফেলেছে মাফিয়াচক্র। কোন ভাবেই যেন নাঈমের পরিবার আর কোন টাকা পয়সা ওদের হাতে না দেয়।
অথচ এই ২০ লাখ টাকা নেওয়ার বেশ কিছুদিন আগেই নাঈমকে মেরে ফেলে লিবিয়ার মাফিয়াচক্র। দালাল মেহেদী সবকিছু জেনেও আমাদের কাছে গোপন করে একের পর এক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে । আমার সন্তান নাঈমকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এ পর্যন্ত প্রায় ৩২ লাখ টাকা নিয়েছে সে । আমি আমার সন্তান হারানোর বিচার চাই।