নিজস্ব প্রতিবেদক মধুখালী ফরিদপুর
বৃষ্টির অভাবে মধুখালীর কৃষকেরা করেছেন বিপাকের মধ্যে।
কেননা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পাট কাটা হয়ে গেলেও পানির অভাবে জাগ দিতে কষ্ট হচ্ছে তাদের।
ফরিদপুর জেলার মধুখালীতে বৃষ্টির জন্য চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করছেন পাট চাষিরা। এরই মধ্যে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে। এ বছর পাটের ভালো দাম পেয়ে চাষিরা খুশি হলেও এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ জমির পাটই কেটে জাগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না পর্যাপ্ত পানির অভাবে। কৃষক ও কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এবার আষাঢ় মাসে বৃষ্টি ততটা হয়নি শ্রাবণ মাসেও এখন পর্যন্ত তার সম্ভাবনা কম। অন্যদিকে এ অঞ্চলের ডোবা-নালা, খাল-বিলে পানি জমেনি। এ কারণে পাট জাগ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনমত পানি না পেয়ে জমি থেকে পাট কাটতে পারছেন না কৃষক। পাট শুকাতে শুরু করেছে জমিতে। মধুখালী পৌরসভার ভাটিকান্দি মথুরাপুর গ্রামের পাটচাষি মনু মৃধা বলেন, এ বছর এক একর জমিতে পাট চাষ করেছি। পাটের ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে পাট কেটে জাগ দিতে পারছি না। শুখনার উপরে কলাগাছ দিয়ে ঢেকে রেখেছি। মেসিনে সেচ দিয়ে পানি দিতে হবে। যা অনেক ব্যয়বহুল। আড়পাড়া ইউনিয়নের পাটচাষি মোঃ আকরাম জানান, এ বছর যেসব জমিতে পাট চাষ করেছিলাম পানির অভাবে সেসব জাগ দিতে পারছি না। বাড়ির পাশে কাদাপানিতে কোনো রকম চুবিয়ে রেখেছি পাট। জানালেন, পাট কেটে ওই জমিতে এখন ধান লাগাতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে পাট কেটে এখানে চুবিয়ে রাখছি। বৃষ্টির অপেক্ষায় আছি। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সব এলাকার অবস্থা প্রায় একই। কৃষকরা জানান, এ বছর রোগবালাই খুব একটা না থাকায় পাটের ফলন খুব ভালো হয়েছে। আবার পাটের দামও গত বছরের চেয়ে বেশি হওয়ায় পাট চাষে লাভের আশা দেখছেন তারা। মধুখালী উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, উপজেলাতে এ বছর ৮ হাজার ৫শ ৫৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ৩ হেক্টর পরিমান বেশি। প্রতিমণ পাট বর্তমানে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলভীর রহমান জানান, পানিস্বল্পতায় পাট জাগ দেওয়া যাচ্ছে না। ভারিবর্ষণ না হলে খাল-বিলে পানি জমবে না। সেক্ষেত্রে কৃষকদের সেচ দিয়ে জাগ দিতে হবে।
সবকিছু মিলে কৃষকেরা এখন মারাত্মক একটা কঠিন ব্যাপার করছেন।