মাহবুব পিয়াল,২২ নভেম্বর,ফরিদপুর।।
ফরিদপুর সদর উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নের শিবরামপুর গ্রাম। ওই গ্রামের বাসিন্দা রিক্সা চালক শাকিল হাসান (৩২)। শাকিলের স্ত্রী আমেনা বেগমের (২৬)ঔরসে জন্ম নেয় একটি শিশু।
বাড়িতে স্বাভাবিক ভাবেই জন্ম নেয় শিশুটি। কিন্তু জন্মের পরে শিশুটিকে দেখে শিউরে উঠে বাড়ির সকলে। শিশুটির দুইটি পা’ই বাঁকা এবং শিশুটির প্রসাব পায়খানার রাস্তা নেই। শিশুটির পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, পরদিন ২০নভেম্বর শনিবার শিশুটিকে নিয়ে মা ও নানা আবু তালেব আসেন ফরিদপুর শিশু হাসপাতালে। শিশুটিকে ওই হাসপাতালে ভর্তি না করে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
১দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর ‘শিশুটির যথাযত চিকিৎসা সেখানে নেই’ জানিয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
দরিদ্র রিক্সা চালক শাকিল হাসানের স্ত্রীর আগেও দুইবার গর্ভবতী হয়ে ছিলেন। তবে দুইটি বাচ্চা পেটে থাকতে পরিণত হওয়ার আগেই নষ্ট হয়ে যায়। তাই এবারের শিশুটি নিয়ে তাই উচ্ছ্বসিত ছিল দরিদ্র এই পরিবার সদস্যরা। কিন্তু সন্তান জন্ম নেয়ার পরে চরম হতাশার মধ্যে পড়ে যায় পরিবারটি।
আজ সোমবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন পরিবারের সদস্যরা।
অর্থাভাবে ঢাকা নিতে না পেরে শিশুটিকে নানা বাড়িতে নিয়ে তারা। কোন ভাবে টাকা ম্যানেজ করতে না পেরে দেশবাসীর কাছে শিশুটিকে বাঁচানোর আকুতি জানান মা আমেনা বেগম।
ফরিদপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান জানান, ‘শিশুটি অনেক গুলো সমস্যা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেছে। এ অবস্থায় বিশেষায়িত কোন হাসপাতালে শিশুটিকে চিকিৎসা দিতে হবে।
তিনি বলেন, এ ধরনের চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি) ও ঢাকা শিশুতে হয়ে থাকে। শিশুটির বেশ কয়েকটি অস্ত্রপচার করতে হবে, এই চিকিৎসা বেশ ব্যয় বহুলও বটে।
শিশুটির নানা আবু তালেব জানান, তার জামাই রিক্সা চালায়। এই দিয়ে যা আয় হয় তাতে কোন রকম সংসার চলে। আমিও দরিদ্র মানুষ। ঠিকমত খাওয়া দাওয়াই চলেনা এই শিশুর চিকিৎসা করাবো কিভাবে? আমাদের পক্ষে এই শিশুর চিকিৎসা করানো সম্ভব না।
তিনি বলেন, দেশের দশ জন যদি সাহায্য করে তাহলে হয়ত আমার নাতিটার চিকিৎসা হবে। আমি দেশের মানুষের কাছে নাতিটাকে বাচানোর জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
শিশুটির মা কান্না জাড়িত কন্ঠে বলেন, আমার বাচ্চাটার চিকিৎসা যাতে করাতে পারি সেই ব্যবস্থাটা আপানারা দশজনে করে দেন।
বিষয়টি জেনে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার তাৎক্ষণিক ভাবে পাঁচ হাজার টাকা প্রদান করেন। জেলা প্রশাসক বলেন, প্রয়োজন হলে পরবর্তীতে আরো সহায়তা দেবে জেলা প্রশাসন।