সনতচক্রবর্ত্তী: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার যুগিবরাট গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় মোঃশরিফুল মোল্লা(২২) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। শরিফুল মোল্লা যুগিবরাট গ্রামের সাইদ মোল্লার ছেলে। সে বোয়ালমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
সোমবার (২৩.০৫.২২) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যায়।
মঙ্গলবার (২৪.০৫.২২) দুপুরে সরেজমিনে গেলে নিহত শরিফুলের চাচা ইসলাম মোল্যা(৫৮) কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, গত ৩০ এপ্রিল শনিবার বিকালে বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের নদেরচাঁদ বাওড়ে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের যুগিবরাট গ্রামের হুমায়ুন মোল্যা (৬০) ও বিল্লাল মোল্যা (৪০) এর সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই রেশ ধরে গত ২১ মে শনিবার সকাল ৯ টার দিকে ভাতিজা শরিফুল কে সাথে নিয়ে যুগিবরাট মাদ্রাসার সামনে গেলে জানতে পারি ইয়াকুব মোল্যার বাড়ির পাশে কিছু লোকজন জড়ো হয়েছে। এ সময় এক প্রতিবেশি বলেন, এখানে পুলিশ আসছে, এ কথা শুনে আমি আমার ভাতিজাকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত বাওড়ে আমাদের জমিতে যাওয়ার জন্য রওনা দেই। প্রতিমধ্যে ইয়াকুবের বাড়ির কাছে পৌছালে দেখতে পাই পাঁচুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের দুই নং ওয়ার্ড সদস্য গিয়াস ব্যাপারী (৩২) এর সমর্থকরা ঢাল শরকি, রামদাসহ ৫০-৬০জন লোক জড়ো হয়ে আছে। সাথে সাথে ওই লোকগুলো আমাকে ও আমার ভাতিজা শরিফুলকে ঘেরাও করে যুগিবরাট গ্রামের মান্নান শেখের ছেলে আজিজুল শেখ (২৬), চান মিয়ার ছেলে জিয়ার শেখ (৩৫), নূরু গাজীর ছেলে হেমায়েত গাজী (৩০), সোবহান গাজী (২০) ও বিটু শেখের ছেলে এজাজুল শেখ (২২) এলোপাথারি মারধোর ও রামদা দিয়ে কোঁপাতে থাকে। এসময় তারা আমার ভাতিজা শরিফুলকে আমার কাছ থেকে আলাদা করে নিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ফেলে রেখে চলে যায়। দ্রুত শরিফুলকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখান থেকে ২২ মে রবিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের লোকজন তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরিফুল সোমবার রাত ৯ টার সময় মারা যায়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর লাশ যুগিবরাট বাড়িতে নিয়ে আসলে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মো. গিয়াস ব্যপারী মোবাইল ফোন দিলে তিনি বলেন, হত্যা কান্ডের সাথে যারা জড়িত তারা আমার কেউ দলিয় লোক না। আমি অল্প বয়সে সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় কিছু মাতুব্বর ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে একটি পক্ষে ফেলা হচ্ছে। আমাকে সবাই ভোট দিয়েছিল। এ ঘটনার সাথে আমি জড়িত না।
আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, শরীফুলকে আহত করার ঘটনায় গত ২২ মে রবিবার থানায় একটি মামলা হয়েছিল। এ ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছে। যেহেতু ছেলেটি মারা গেছে আগের অভিযোগটি এখন হত্যা মামলা হিসেবে গৃহিত হবে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ান আছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে ।