• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ ইং
গাজরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

ফাইল ছবি

গাজরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ প্রচুর। গাজর আমাদের খুব পরিচিত সবজি। এটি যদিও শীতকালীন সবজি তথাপি এখন সারা বছর গাজর পাওয়া যায়। গাজরের পুষ্টিগুণ প্রচুর থাকায় এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।গাজরের উপকারিতা এবং পুষ্টি উপাদান আধিক্যতার কারনে গাজরকে বলা হয় সুপার ফুড।কাচাঁ ও রান্না দুভাবেই গাজরকে খাওয়া যায়, তাই এটিকে সবজি এবং ফল দুটাই বলা যায়।নানা প্রকার খাদ্য তৈরিতে গাজর ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে ভাঁজি,তরকারি, হালুয়া ও সালাদ হিসেবে গাজর অত্যন্ত জনপ্রিয়। ফলে সর্বোচ্চ পুষ্টিগুনের লাভের জন্য কাচা গাজর খাওয়াই সর্বোত্তম।তাই কাঁচা গাজর অথবা গাজরের জুস বানিয়ে খেলে গাজরের পুষ্টি উপাদান সর্বোচ্চ পাওয়া যায়। নিয়মিত গাজর খেলে শরীর সুস্থ থাকবে।

গাজরের পুষ্টিগুণ
আমাদের পরিচিত সবজির মধ্যে গাজর অন্যতম। আমরা অনেকই গাজরের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানি না। অন্যান্য সবজির তুলনায় গাজরের পুষ্টিগুন অনেক বেশি। নিচে প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরের পুষ্টিগুণ আলোচনা করা হল

উপাদান পরিমাণ
খাদ্যশক্তি ৪১ কিলোক্যালরি
শর্করা ৯.৫৮ গ্রাম
আমিষ ০.৯৩ গ্রাম
ফাইবার ২.৮ গ্রাম
ভিটামিন এ ১৬৭০৬ আইইউ
চর্বি ০.২৪ গ্রাম
বিটা ক্যারোটিন ৮২৮৫ মাইক্রোগ্রাম
পটাশিয়াম ৩২০ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ৫.৯ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ৩৩ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ১২ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ৬৯ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ৩৫ মিলিগ্রাম
লৌহ ০.৩ মিলিগ্রাম
কোলেস্টেরল ০ মিলিগ্রাম
জিংক ০.২৪ মিলিগ্রাম
গাজরের উপকারিতা
স্বাস্থ্য রক্ষায় গাজরের উপকারিতা প্রচুর। কারন গাজরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুন এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য উপকারিতা।আসুন আমারা সেই উপকারিতা গুলো জেনে নেই..

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
গাজর এ প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা শরীরে থেকে ফ্রি র‌্যাডিকেলস দূর করে। ফ্রি র‌্যাডিকেলস হল শরীরের উচ্ছিষ্টাংশ যা শরীরের উপকারী কোষ নষ্ট করে এবং ক্যান্সার সহ আরও অনেক জটিল রোগ সৃষ্টি করে। তবে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গাজরে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান গুলো ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই আমরা নিয়মিত গাজর খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলোন ক্যান্সার ও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কম থাকে। এতে বুঝা যায় স্বাস্থ্য রক্ষায় গাজরের উপকারিতা অনেক।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে
গাজরে থাকা উপাদান চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বিটা-ক্যারোটিন (ভিটামিন এ) দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গাজরে প্রচুর পরিমাণ বিটা-ক্যারোটিন নামের এক ধরনের উপাদান থাকে। এই উপাদানটি শরীরে ভিটামিন এ তে পরিণত হয়। তাই গাজরে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় চোখের কোষকলা তৈরীতে সাহায্য করে রাতকানা, গ্লুকোমা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ করে। এছাড়া চোখকে সুস্থ রাখতে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।

হৃদরোগ প্রতিরোধ করে

গাজরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পলিএসিটিলিন ও ডায়েটরি ফাইবার হৃদরোগ প্রতিরোধে ভালো কাজ করে। এই উপাদানগুলো ধমনির ওপর কোন কিছুর আস্তর জমতে না দিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে এবং হার্টকে সুস্থ রাখে। গাজরের উচ্চমান সম্পন্ন ক্যারোটিনয়েডস হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত গ্রহণে গাজরের বিটা ও আলফ ক্যারোটিন রক্তনালী সংকোচন, অ্যাসিডিটির প্রকোপ কমায়।

ওজন কমায়
গাজরে ক্যালরি এবং সুগারের পরিমাণ খুবই কম থাকে তাই এটি ওজন কমাতে ভাল কাজ করে। এটি খেলে পেট ভরা থাকে বলে ক্যালরিবহুল অন্য খাবারের প্রয়োজন কম হয়। তাছাড়া গাজর চর্বি কমাতে সহায়তা করে বলে ওজন কমে। তাই ওজন কমাতে প্রতিদন বেশি বেশি গাজর খান।অল্প দিনের মধ্যে ওজন কমা শুরু করবে।

অ্যান্টি অ্যাজিং ও ত্বকের সুস্থতা রক্ষা করে

গাজরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে এবং ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে। তাই এটা আমদের মুখের তারুণ্য ধরে রাখতে সক্ষম একটি খাবার। ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধ করতে গাজরের ভূমিকা অন্যতম। তাছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পটাশিয়ামের মতো খনিজের উপস্থিতি ত্বক শুকিয়ে যাওয়া, স্কিন টোনকে উন্নত করা এবং ত্বকে দাগ পড়া থেকে রক্ষা করে।

কোলেস্টরেল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে

গাজরে ক্যালরি এবং সুগারের উপাদান খুবই কম থাকে। গাজরে থাকা পটাশিয়াম কোলেস্টরেল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। গাজর চর্বি কমাতে সহায়তা করে বলে ওজনও কমে। তাছাড়া ডায়াবেটিস প্রতিরোধে যে সব ভিটামিন এবং খনিজের প্রয়োজন তাও বিদ্যমান।

রোধ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
গাজরে থাকা ক্যারটিনয়েড যাহা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে ক্ষতিকর জীবাণু, ভাইরাস এবং বিভিন্ন ধরনের প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে। তাছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে বিষমুক্ত করে, হৃদরোগ এবং ক্যানসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে। গাজরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ছাড়াও নানা ধরনের খনিজ যেমন,ফসফরাস পটাশিয়াম, ইত্যাদি থাকে যা হাড় গঠন, নার্ভাস সিস্টেমকে শক্ত করা ও মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

এছাড়াও গাজরে বিদ্যমান প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বককে ব্রণ থেকে রক্ষা করে, চুল পড়া রোধ করে, চুলকে শক্ত, মজবুত ও ঝলমলে করে। নিয়মিত গাজরের জুস খেলে চুলের গোড়া মজবুত হয়। তাই, প্রতিদিন একটি করে গাঁজর হতে পারে আমাদের স্বাস্থ্যরক্ষা ও সৌন্দর্যচর্চার অংশ।তাই গাজরের উপকারিতা জেনে প্রতিদিন গাজর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মার্চ ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« ফেব্রুয়ারি    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।