শনিবার কোরবানি ঈদ। ঈদকে সামনে রেখে জমতে শুরু করেছে রাজশাহী সিটি পশুহাট। হাটে পর্যাপ্ত কোরবানির দেশি গরু দেখা গেছে। সঙ্গে ক্রেতার উপস্থিতি অন্যদিনের তুলনায় সন্তোষজনক ছিলো বলে জানিয়েছে বিক্রেতারা। আর ক্রেতারা বলছেন, অনেকেই দাম বেশি হাকাচ্ছেন। তবে গত বছরের তুলনায় দাম তেমন বেশি নয়।
সরেজমিনে রোববার (২৬ জুলাই) গিয়ে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে হাটে বাড়তে থাকে কোরবানির পশু, ক্রেতা ও বিক্রেতার সংখ্যা। হালকা-পাতলা বিক্রি চলে। মূলত জমে উঠে দুপুরের পর। দুপক্ষের মধ্যে দরকষাকষির মধ্যে জমে উঠে ক্রেনা-বেচা। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে মিল রেখে অনেকেই পছন্দের কোরবানির পশু কিনছেন।
সিটি হাটে দেখা যায়, প্রচুর গরু উঠেছে। মূলত বিভিন্ন খামারে এবং গ্রামের বাড়িতে পালন করা গরুই বেশি। তুলনামূলক ক্রেতাও রয়েছে। কারণ করোনার কারণে ক্রেতারাই চাইছেন, একবার হাটে এসেই পশু কেনা। তাই সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে দরদাম করছেন অনেকেই। কারণ হাটে যেনো আর না আসতে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে এমনটি ভাবছেন ক্রেতারা।
ক্রেতা আশরাফুল ইসলাম জানান, হাটে করোনার ঝুঁকি রয়েছে। তাই বিগত বছরের মতো ঘোরার সুযোগ নেই। কেনার উদ্দ্যেশেই হাটে এসেছি। যদিও ইদের বেশি দিন নেই। কয়েকদিন বাড়িতে গরুকে খাওয়াতে হবে। সবমিলে একটু বেশি দাম হলেও কিনে নেবো কোরবানির গরু।
খামারি সাইফুল ইসলাম জানান, হাটে দেশি গরুই বেশি। তবে করোনার জন্য দাম কম। মানুষ তেমন দাম বলছে না। ১ লাখ টাকার গরুর দাম বলছে ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা। কেউ কেউ দাম বলতে চাইছেন না। তবে বিগত হাটের চেয়ে এই হাটে ক্রেতা বেশি। তিনি জানান, ‘গরু না কিনুক, দাম বললে ভালো লাগবে।’
নওহাটার বড়গাছি থেকে আসা আবদুর রহমান জানান, ‘হাটে গরুর দাম খারাপ না। তবে ক্রেতা ভালোই আছে। অনেকেই গরু কিনছেন। কেউ কেউ বাজার দর জানতে এসেছেন। তারা দাম শুনে ঘুরে যাচ্ছেন।’ জাহিদ হাসান নামের একজন ক্রেতা বলেন, সাত ভাগের গরু কিনতে এসেছি পাঁচজন। হাটে অনেক দেশি গরু রয়েছে। দাম বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। দেখি এই হাটে গরু কেনা সম্ভব না হলে আগামী হাটে আসবো।
এদিকে রাজশাহী জেলার বাইরে থেকেও হাটে কোরবানির পশু কেনা-বেচা করতে এসেছেন অনেকেই। তারা ভটভটিতে করে গরু নিয়ে এসেছেন হাটে। কেউ কেউ আবার ট্রাকে সাত থেকে ১০টি করে গরু নিয়ে এসেছেন হাটে।
অন্যদিকে, বাইরের জেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম মোটামুটি ঠিকই আছে। করোনার কারণে গরুর দাম একটু কমই আছে। ব্যবসায়ীরা হাট নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে। তাই অল্প সংখ্যক গরু কিনছেন তারা।
মোস্তাক আহম্মেদ নামের ঢাকার এক ব্যবসায়ী জানায়, পশুর হাট নিয়ে একটু সমস্যায় আছি। তাই গরু কম কিনছি। হাটের ঠিকঠাক ব্যবস্থা করা গেলে বেশি পশু কিনবো। ঢাকায় এক লাখের বেশি দামের গরুর চাহিদা বেশি। এই হাটে বিভিন্ন জায়গার বড় গরু আসে।
সিটি হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য ফারুক হোসন ডাবলু বলেন, হাটে কেনাবেচার অবস্থা ভালো না। মানুষ গরু ফেরত নিয়ে যাচ্ছে, ক্রেতা কম। দেখা যাক সামনের হাটে কী হয়। তবে হাটে পর্যাপ্ত দেশি জাতের গরু রয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে, সিটি পশুহাট ছাড়াও রাজশাহীর বড় পশুহাট রয়েছে। এই হাটগুলো হলো- বাগমারার তাহেরপুর, পুঠিয়ার হাট বানেশ্বর, গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট, বাগমারার ভবানীগঞ্জেও কোরবানির গরু উঠতে শুরু করেছে। সেগুলোতেও বেশিরভাগই দেশি গরু।