আজ ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস। সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও পর্যটন কেন্দ্রের সাথে সেতুবন্ধন গড়ে তোলা।
এছাড়াও, পর্যটনের ভূমিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উপযোগিতাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া এ দিবসের অন্যতম লক্ষ্য।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বজুড়ে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটলে ১৯৭০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন সংস্থা গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন করে জাতিসংঘ। তবে সংস্থাটি পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করে ১৯৭৪ সালে। সংস্থার বার্ষিক সম্মেলনে ১৯৮০ সালে বিশ্ব পর্যটন দিবস পালনের প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ বিকেল ৩ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রোকসানা রহমান।
কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত খাত হিসেবে অনিশ্চয়তার সামনে দাঁড়িয়ে এ বছর পালিত হচ্ছে দিবসটি। জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা এ বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘পর্যটন ও গ্রামীণ উন্নয়ন’।
কৃষি, মৎস্য ও বনজ সম্পদের বাইরে গ্রামীণ পর্যটনও বাংলাদেশের জন্য করোনা-পরবর্তী এক বিশাল সম্ভাবনার ক্ষেত্র হতে পারে। যেমন এ দেশের ধানচাষ পদ্ধতি, গ্রামীণ দেশীয় মৎস্যচাষ, চারু ও কারুশিল্প, তাঁত ও জামদানি, গ্রামীণ পিঠা, পাহাড়ি ঝরনা ও হ্রদ, জুমচাষ ইত্যাদি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গ্রামীণ পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ হতে পারে। শহরের টেপাখোলা লেকটির সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ সম্পন্ন হলে এটাও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে অত্যতম ভুমিকা রাখবে। এই লেকের পাশেই রয়েছে ভুবনেশ্বর নদী। পদ্মার সাথে যদি এই নদীর সংযোগ করে রিভার ক্রুজের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে পর্যটকদের আকর্ষণ করা সম্ভব। এছাড়া ভাংগার এক্সপ্রেস হাইওয়েটিও পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলি মনে করি।
কক্সবাজার, সিলেট ও সুন্দরবন ছাড়া গ্রামীণ পর্যটনকে যথাযথভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে পারলে বিদেশি অতিথিদের জন্য পর্যটনের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে। এছাড়া দেশের নদী, পাহাড়, হ্রদ, ঝরনা ইত্যাদি অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রামকেন্দ্রিক। এসব জায়গায় পর্যটক আগমন বৃদ্ধি পেলে গ্রামীণ উন্নয়ন ও গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা সচল হবে, মজবুত হবে দেশের অর্থনীতিও; মানুষও তার করোনা-পরবর্তী হারানো মনোবল ও কর্মচাঞ্চল্য ফিরে পাবে। এজন্য গ্রামীণ জনপদের শিক্ষা, পরিবেশ ও সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। এসব যথাযথভাবে পূরণ করতে পারলেই এবারের পর্যটন দিবসের প্রতিপাদ্য সার্থকতা অর্জন করবে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আঃ রশিদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ মনিরুজ্জামান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিক প্রফেসর মোঃ শাহজাহান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক মোল্লা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, নেজারত ডাপুটি কালেক্টর আশিক আহমেদ, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোশার্রফ আলী, সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর কাজী গোলাম মোস্তফা, সরকারি ইয়াছিন কলেজের অধ্যক্ষ শীলা রাণী মন্ডল, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজভী জামান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বিষ্ণু পদ ঘোষাল, এ্যাডঃ শীপ্রা গোস্বামী প্রমুখ।