• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
রাজশাহীতে শীত-কুয়াশা উপেক্ষা করে  চলছে বোরো রোপণ

মোঃ আলাউদ্দিন মন্ডল, রাজশাহী:-

রাজশাহীর প্রতিটি  উপজেলার মাঠে মাঠে চলছে বোরো ধান রোপণ। প্রচণ্ড শীত আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করেই বীজতলা তৈরি, মাঠ প্রস্তুত ও চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করেছেন এখানকার কৃষকরা। এখন গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপণের কাজ চলছে। কোনও জমিতে চলছে চাষ, বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে বীজ, চলছে রোপণ। তবে রোপণে দেরি হওয়ায় ফলন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

সাধারণ কৃষকরা বলছেন, এক ফসল বিক্রি করে অন্য ফসল আবাদ করা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে বার বার লোকসান হওয়ায় কৃষকরা ধান চাষ থেকে অনেকটাই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এ কারণে উপজেলার কৃষকরা পাইকারী হারে কৃষি জমিগুলো লিজ দিয়ে তৈরি করছেন মাছ চাষের পুকুর। এতে করে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তিন ফসলি কৃষিজমি। বাজারে এখন ধানের দাম কম। অন্যদিকে আবাদের উপকরণের দাম বাড়তি। ফলে চাষিরা নিজেরাও আবাদের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। অপরদিকে ধানের দাম না থাকায় সবচেয়ে বিপাকে আছেন বর্গাচাষিরা।
করজগ্রামের কৃষক দুলাল জানান, গত বছর তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে বোরোর আবাদ করেছিলেন। এবার করছেন তিন বিঘা। এর মধ্যে নিজের দুই বিঘা আর এক বিঘা অন্য মালিকের। প্রচণ্ড শীত আর ঘনকুয়াশা উপেক্ষা করে প্রায় জমি তৈরির কাজ শেষের দিকে। আর ক’দিনের মধ্যে চারাগাছ রোপণ করা শুরু করবেন। তিনি বলেন, ‘ধানের দাম না থাকার কারণে আবাদের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছি। দিন যাচ্ছে আর আবাদ খরচও বেড়ে যাচ্ছে। গত বছর বিঘাপ্রতি আবাদে খরচ হয়েছে সাড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এবার বিঘা প্রতি খরচ ছয় হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’মহব্বতপুরের কৃষক  মিজানুর বলেন, ‘শ্রমিকের মজুরি ৫০০ টাকার ওপরে দিতে হচ্ছে। ড্যাপ সার প্রতি বস্তা ৭৮০ থেকে ৭৯০ টাকা। ইউরিয়া বস্তা প্রতি ৮০০, এমওপি ৭৫০ টাকা। এছাড়াও রয়েছে অন্যান্য খরচ। সব মিলে ধান চাষ করা এখন ক্ষতির বিষয়।’
ধুরইল গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘পৌষ মাসের শুরুতেই বোরো ধান রোপণ করা শেষ হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু প্রচণ্ড শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে কৃষকরা মাঠে নামতে পারেননি। তাই চলতি মৌসুমে বোরো রোপণে কিছুটা দেরি হয়ে গেলো। এতে করে ফলনও একটু ব্যাহত হতে পারে। বাজারে ধানের দাম ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা মণ বিক্রি করতে হচ্ছে। ধানের এমন দামে আবাদ করলে চাষাবাদের খরচও উঠবে না বরং ঋণের বোঝা আরও বৃদ্ধি পাবে।’উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোছাঃ রহিমা বেগম বলেন, ‘ধানের দাম না থাকায় গত কয়েক বছর যাবৎ বোরোর আবাদ আশঙ্কাজনক হারে কম হচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য ফসলের তুলনায় বোরোতে অধিক পরিমাণে সেচ দিতে হয়। আর সেচ দেওয়ার জন্য গভীর নলকূপের ওপর ভরসা করতে হয়। ফলে ভূগর্ভস্থ পানি অধিক পরিমাণে তোলার কারণে পানির স্তরও নিচে নেমে যাচ্ছে। বাড়াতে হবে আমন, আউশ, গম, আলুসহ বিভিন্ন লাভজনক রবি শস্যের আবাদ। এতে করে একদিকে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমবে। তিনি আরও জানান, মোহনপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত উপজেলায় প্রায় শতকরা ৪০ শতাংশ জমিতে রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুত উপজেলার সব জমিতে রোপণ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদী। এছাড়াও উপজেলার কৃষকদের বোরো বীজতলা তৈরি করা থেকে শুরু করে জমিতে চারা রোপণ পর্যন্ত সব পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। কৃষি অফিস যেকোনও প্রয়োজনে যেকোনও সময় কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ জন দেওয়ার জন্য পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত রয়েছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।