• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ইং
করোনা : ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল পার করার অর্থ কী?

ছবি প্রতিকী

বর্তমানে কভিড-১৯-এর ছয়টি ভ্যাকসিন তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে, যা টেস্টিংয়ের চূড়ান্ত পর্যায়। এ ট্রায়ালের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভ্যাকসিন বনাম প্ল্যাসেবোর মাঝে সুরক্ষা ও কার্যকারিতার তুলনা করে দেখা। যাই হোক, বিএমজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর নতুন একটি রিপোর্টে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘কার্যকারিতা’ মানে আসলে কী?

অগ্রসরমান তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে এটা নির্ধারণ করা যে ভ্যাকসিন কি কভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে একজন রোগীকে লক্ষণসম্পন্ন হওয়ার ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে পারে কিনা। কভিড-১৯ কেস হিসেবে গণ্য হতে ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের সোয়াব টেস্টে পজিটিভ আসতে হবে, পাশাপাশি লক্ষণগুলোর সংজ্ঞায়িত তালিকা থাকতে হবে, যা কিনা একটি পরীক্ষা থেকে অন্যটিতে পরিবর্তিত হয়। এসব লক্ষণ মৃদু মাথাব্যথা থেকে এমন মারাত্মক কিছু হতে পারে যে রোগীকে আইসিইউতে রাখার প্রয়োজন হতে পারে। কন্ট্রোল গ্রুপে কতজন থাকতে পারে, তা নির্ধারণে প্রতিটি ট্রায়াল পজিটিভ কেসের নিজস্ব সংজ্ঞা ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ, মডার্নার ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল প্রটোকল কাজ করছে এ ধারণার ওপর ভিত্তি করে যে ১৩৩ জনের মাঝে একজনের ছয় মাসের মধ্যে কভিড-১৯-এর লক্ষণ প্রকাশ পাবে।

যদি ভ্যাকসিন ৬০ শতাংশ কার্যকর হয়, জটিল পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ বলে, ৩০ হাজার রিক্রুটের কেবল ১৫১ জনের এ মাত্রার সুরক্ষার জন্য লক্ষণসহ সংক্রমিত হতে হবে।

উদ্বেগের কারণ?

এ ধরনের ট্রায়াল ডিজাইন নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এটা বলা সম্ভব নয় যে এর মধ্য দিয়ে একটি ভ্যাকসিন মারাত্মক অসুস্থতা বা মৃত্যু থেকে বাঁচাতে পারে কিনা। প্রকৃতপক্ষে প্রথম ধাপের ট্রায়ালের ডিজাইন প্রাথমিক বিশ্লেষণে কভিড-১৯-এর মৃদু থেকে মারাত্মক পরিস্থিতিকে আলাদা করতে পারে না।

স্বাভাবিকভাবেই কভিড-১৯-এ মৃদু লক্ষণ বিকাশের তুলনায় খুব অল্প লোকই মারা যায়। এখন একটি ভ্যাকসিন মারাত্মক অসুস্থতা কিংবা মৃত্যুর দিক থেকে সুরক্ষা দেয়, এটি প্রমাণ করতে হলে আরো অনেক মানুষকে প্রত্যেক ট্রায়ালে রিক্রুট করতে হবে। এরই মধ্যে ট্রায়ালে কয়েক হাজার অংশগ্রহণকারী জড়িত, যা এ পর্যায়ে মোটেই বাস্তবসম্মত নয়।

শেষ পয়েন্ট হিসেবে মারাত্মক অসুস্থতা ও মৃত্যুর ট্রায়াল সম্পন্ন করতে অনেক সময় ও টাকার প্রয়োজন। তাই তিনটি ধাপকে ডিজাইন করা একটি ভারসাম্যপূর্ণ কাজ।

আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে যেখানে রোগের তীব্রতা পরীক্ষার ফলাফলের কেন্দ্রবিন্দু নয়, চলমান সবগুলো ট্রায়াল এখনো সতর্কতার সঙ্গে কভিড-১৯-এর সব তীব্রতা পর্যবেক্ষণ করছে। এখনো এ পরিসংখ্যান থেকে মূল্যবান সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব। এমনকি পরিসংখ্যানগত তাত্পর্য যদি প্রমাণ নাও করা যায়।

তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের ব্যাপারে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যেসব মানুষকে সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা দেয়া প্রয়োজন সেই বয়স্ক ও দুর্বল ইমিউন সিস্টেমসম্পন্ন মানুষকে এখানে রিক্রুট করা হয় না। কিন্তু এ স্ট্যান্ডার্ডটি যেকোনো ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই এটা অপ্রত্যাশিত নয়।

এর অর্থ হচ্ছে যে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার সিদ্ধান্ত যখন নেয়া হচ্ছে তখন উপরোক্ত মানুষেরা ট্রায়ালের বাইরে থেকে যাচ্ছে। তার পরও একটি ভ্যাকসিন স্বাস্থ্যবান প্রাপ্তবয়স্কের উপসর্গ হ্রাস করতে পারে তা জরুরি। যেমন সেটি দুর্বল গোষ্ঠীর মানুষের সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।

সাম্প্রতিক এসব ট্রায়ালের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। কিন্তু এগুলোকে বড় ত্রুটি হিসেবে বিবেচনা করা অনুচিত। যেকোনো ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট অংশের জনগণকে দিয়ে দেখানো যে গোটা জনসংখ্যার মাঝে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কেমন হতে যাচ্ছে।

সায়েন্স অ্যালার্ট

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

সেপ্টেম্বর ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« আগষ্ট    
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।