রাজশাহীর বাঘা উপজেলায়
রাজশাহীর বাঘায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় উপজেলাধীন গড়গড়ী ইউনিয়নের সরেরহাট এলাকার মৃত এমদাদুল হক ইনুর মেয়ে প্রতিবন্ধী আরজুমান বানু(বানী) নিজ পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমি দখল পেয়েছে।
গত (২১জুন)রবিবার বিভিন্ন জাতীয় ও অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় কর্তৃপক্ষের নজরে আসে বিষয়টি । গতকাল (২৭জুন) গড়গড়ি ইউনিয়নের চেয়াম্যানের উপস্থিতিতে প্রতিবন্ধী বানীর সম্পত্তি সীমানা করে বুঝিয়ে দিয়েছে। আরজুমান বানু একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী (৪০), স্বামী হাবিবুর রহমান ও তাদের ৪ বছরের একটি কন্যা রয়েছে। আরজুমান বানুর সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের বাঘা উপজেলা সমাজ সেবা কর্তৃক প্রতিবন্ধী কার্ড নং ১২৯ বলে জানা যায়। সরেজমিনে, এমদাদুল হক ইনুর মৃত্যুর সময় নিজ নামিও ৪৮.৫৩ শতাংশ জায়গা-জমি রেখে যান। তার স্ত্রী আজমিরা এবং ২ ছেলে,২ মেয়ে রয়েছে। পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তির প্রতিবন্ধী বানু ছাড়া অন্য সকলেরই ভোগ-দখল রয়েছে। ২০১৭ সাল হতে বিভিন্ন সময় এই অসহায় প্রতিবন্ধীকে হয়রানি মুলক মামলা, লাঞ্ছিতসহ বিভিন্ন প্রকার পারিবারিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আসছিল( জমি বুঝে চাওয়ায়) । শারীরিক প্রতিবন্ধী বানু ঠিকমত কথা বলতে পারে না।
বানীর পক্ষে স্বামী হাবিবুর রহমান জানান,তার শ্বশুরের সম্পত্তির মধ্যে বাঘা উপজেলার সরেরহাট মৌজা,জে এল নং ১৫০ এর আর এস খতিয়ান নং ২৪১ও ২৮৪ দাগের হতে ওয়ারিশ সূত্রে ৬.৯৪ শতাংশ সম্পদের প্রাপ্ত হয় প্রতিবন্ধী আরজুমান বানু।
ঐ এলাকার লেঃ কর্ণেল রমজান আলী সরকার(অবঃ) ও ডাঃ স্বপনসহ অনেকেই চাচ্ছিলেন এই প্রতিবন্ধীর সঠিক প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়ার এবং সামাজিক পরিবেশ ও রক্তের সম্পর্ক বজায় রাখতে।
শারীরিক প্রতিবন্ধী বানুর প্রতি হয়রানিমূলক মামলা সহ পারিবারিক সমস্যা অবসান ঘটাতে গত ১২জুন শুক্রবার গড়গড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে সঠিক সীমানা নির্ধারণ করেন। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী আরজুমান বানুর জায়গা-জমি দেখিয়ে দেন অত্র এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ সঙ্গে নিয়ে। শালিসী কপিতে পাওয়া যায় প্রতিবন্ধী আরজুমান বানুর ভাইদ্বয়ের নির্মিত বসত-বাড়ি সংলগ্ন জমিসহ বাড়ী বহাল রাখিয়া বর্তমান এনামুল হকের বাড়ীর দক্ষিণে এবং রায়হান মুন্সীর ঔষধের দোকানের উত্তরে অবস্থিত ফাকা জমি যাহার পূর্ব হতে পশ্চিমে ৬৪ ফিট এবং উত্তর হতে দক্ষিণে সাড়ে ২৪ ফিট মোট ৩.৬৪ শতাংশ জমি যাহা বানু খাতুন(শারীরিক প্রতিবন্ধী) কে সরেজমিনে ভোগ-দখলের জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
২নং গড়গড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার অনেক আগ থেকেই তাদের জমিজমা সংক্রান্ত জটিলতা দেখে আসছি। নির্বাচিত হওয়ার পর বেশ কয়েক বার নিজ উদ্দ্যোগে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য তাদের ডেকেছি। কিন্তু প্রতিবন্দ্বী বানু উপস্থিত হলেও প্রতিপক্ষ এনামুলদ্বয় উপস্থিত হন নি। সর্বশেষ শুক্রবার (১২জুন) শুক্রবার আদালতের নির্দেশ মোতাবেক জমির সমাধান করার জন্য গ্রাম্য শালীসী বৈঠক বসে। উক্ত বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রতিবন্ধী বানু কে তার ন্যায্য অংশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় পরের দিন জানতে পারি শালীস অমান্য করে বানুর অপরপক্ষ শালীসে দেওয়া সীমানা তুলে ফেলেন ও প্রতিবন্ধী বানুর স্বামীসহ কয়েকজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পরে উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিতে আসে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আমি সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে প্রতিবন্ধী বানীর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
সেই সময় উপস্থিত ছিলেন, কালাম সরকার ( ৪নং ওয়ার্ড সদস্য গড়গড়ী ইউনিয়ন),কলাম-উনূর স্বপন (বিশিষ্ট সমাজসেবক),সাজদার রহমান (সহকারী শিক্ষক), আমিরুল ইসলাম রান্টু (৪নং ওয়ার্ড সভাপতি বাংলাদেশ আওমীলীগ),আরব মাস্টার (৪ নং ওয়ার্ড সাধারন সম্পাদক বাংলাদেশ আওমীলীগ),হাবিবুর রহমান (৩নং ওয়ার্ড সদস্য গড়গড়ী ইউ.পি )তোছাদ্দেক হোসেন চান্দু, এছারুল ইসলাম (চেনু) জালাল উদ্দিন (প্রভাষক) প্রমুখ।