ধনপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হযরত আলী কালা চানঁ মিয়া কর্তৃক ইউনিয়নের ঘরবন্দি করোনা আতংঙ্ক উপকারভোগী ভিজিডির কার্ডধারী মানুষদের মাঝে ওজনে চাল কম দেয়ার প্রতিবাদ করায় ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গত ২৪ মে ইউনিয়নের সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য মোছাঃ চানঁ বানু বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে এ অভিযোগটি দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে গত ২১ মে সরকারের বরাদ্দকৃত উপকারীভোগী ৫৭৩ জন ভিজিডির কার্ডকারী প্রত্যেককে ৩০ কেজি করে চাল দেয়ার কথা থাকলে ও চেয়ারম্যান প্রতিজনকে ২০,২২ ও ২৫ কেজি করে ওজনে চাল কম দেয়ার প্রতিবাদ করেন অভিযোগকারী ইউপি সদস্য মোছাঃ চান বানু। এতে চেয়ারম্যান ও আরেক ইউপি সদস্য মোঃ নিজাম উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ তার লুঙ্গী উঠিয়ে বার বার দেখানোসহ শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। পাশাপাশি একজন কার্ডধারীকে চাল দেয়ার পর ঐ কার্ডধারীর কার্ড দিয়ে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিনের পছন্দের অন্য লোকজনকে দিয়ে চাল উত্তোলন করে নিতে থাকার ও প্রতিবাদ করেন চানঁ বানু। এ সময় চেয়ারম্যান ৩জন মহিলা সদস্যকে ইউনিয়ন অফিসের উপরে ডেকে নিয়ে আবারো লুঙ্গী উপরে উঠিয়ে দেখানোর পাশাপাশি বলতে থাকেন তোরা আমার কি করবে দেখি কর। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা এই তিন মহিলা সদস্যকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালান। চেয়ারম্যান কালাচান বিভিন্ন সময় ভিজিডি,ভিজিএফ এর চাল বিতরণে অনিয়ম আর র্দূনীতি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি করলে ও দেখার যেন কেউ নেই। তার এমন অনিয়ম ও র্দূনীতির বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে দাবী জানান লাঞ্চিত তিন মহিলা সদস্য।
এ ব্যাপারে ধনপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ নিজাম উদ্দিন তার বিরুদ্ধে মহিলা সদস্যদের সাথে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এর বিষয়টি অস্বীকার কবরে বলেন ভিজিডির চাল বিতরণে কোন ধরনের অনিময় র্দূনীতি ও ওজনে চাল কম দেয়া হয়নি বলে জানান।
এ ব্যাপারে ধনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হযরত আলী কালাচানঁ তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,তিনি কোন ধরনের শ্লীলতাহানি কিংবা চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন বিষয়টি সুষ্টু তদন্ত হওয়ার দাবী জানান।
এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমীর বিশ্বাস এর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য গত ২১মে ইউনিয়নের ভুক্তভোগী ছাতারকোণা গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে সামছুল আলম, গামাইরতলা গ্রামের আলাল মিয়ার স্ত্রী হালিমা বেগম, ইসলামপুর গ্রামের আফছর উদ্দিনের স্ত্রী সহরবানু জানান, ২০১৯ ও ২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ভিজিডি কার্ডের মাধ্যমে প্রতিজনকে ৩০কেজি করে চাল দেয়ার কথা থাকলে ও ঐ চেয়ারম্যান গত ২১মে তার ইউনিয়নের ৫৭৩ টি পরিবারের কার্ডধারী প্রত্যেককে ৩০কেজি করে চাল দেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তিনি প্রতিজনকে ২০ কেজি/২২কেজি ও ২৫ কেজি করে চাল দিয়েছেন ।
এ ছাড়া ও ধনপুর ইউনিয়নের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্যা মোছাঃ চানবানু চেয়ারম্যান কালাচান মিয়া কর্তৃক কার্ডধারী প্রতিজনকে ওজনে চাল কম দিয়ে তিনি নিজেই বাকি সব চাল আত্মসাধ করেছেন। ওজনে চাল কম দেয়ার বিষয়টি প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান ও তার লাঠিয়াল বাহিনী ঐ ইউপি সদস্যাকে মারার জন্য তেরে আসনে। পরে উপস্থিত লোকজন চেয়ারম্যানকে প্রশমিত করেন। খবর পেয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল দৈনিক সুনামগঞ্জ বাণী ২৪ ডটকমের সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক সদস্যদের সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। তখন এই সংবাদকর্মী চেয়ারম্যান হযরত আলী কালাচাঁন এর নিকট ওজনে চাল কম দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ঐ সংবাদকর্মীর সাথে অশালীন আচরণ করেন।