আসছে শীতে বাংলাদেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের সেকেন্ড ওয়েব শুরু হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা যে ধারণা করছেন, তা মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের হাত থেকে আমাদের দেশে-প্রবাসে যারা আছে, সবাই যেন মুক্তি পায়। সবাইকে অনুরোধ করবো স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে।
“নুতনভাবে এই প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে ইউরোপে এবং ইউরোপে যখন আসে এই ধাক্কাটা আমাদের দেশেও আসে। কিন্তু আমরা এখন থেকে প্রস্তুত, আমরা এখন থেকে তৈরি হচ্ছি। বিভিন্নভাবে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রত্যেকটা জেলা হাসপাতালকে আমরা প্রস্তুত রাখছি।”
করোনাভাইরাসের মধ্যেও স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটা মানুষ যখন একটা সমাজের জন্য, একটি জাতির জন্য, একটি দেশের জন্য অবদান রাখে, তাদের একটা সম্মান করা, গুণীজনের সম্মান করা, এটা মনে করি আমাদের কর্তব্য।
পঁচাত্তরের নির্মম হত্যকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সেই যুদ্ধাপরাধী, তাদের বিচার বন্ধ করা হয়। তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। যারা অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছিল, মিলিটারি ডিকটেটর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেই এই যুদ্ধাপরাধীর বিচার বন্ধ করে দিয়ে যারা কারাগারে বন্দি ছিল, তাদেরকে মুক্তি দেয়। আর যারা দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিল, এমনকি পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিল তাদেরকেও ফিরিয়ে আনে।
জিয়াউর রহমান খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, এই স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে একবার চিন্তা করে দেখেন, আপনাদের দেশ স্বাধীন দেশ বাংলাদেশের দূতাবাসে কারা ছিল? অথবা দূতাবাসের প্রতিনিধি হিসাবে? তারা হল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের খুনি, হত্যাকারী। তাহালে সে দেশের ভাবমূর্তি কি হতে পারে? সেইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনাগুলি একে একে তা নসাৎ করা হয়
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া, লেখাপড়া এবং শিক্ষার ব্যবস্থা যেন প্রতিটি মানুষ পায় তা ব্যবস্থা করা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা, প্রত্যেক ঘরে ঘরে আলো জ্বালানো, প্রতিটি গৃহহারা ভূমিহীন মানুষের ঘর বাড়ি তৈরি করে দেওয়া, অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভরশীল করা, এ লক্ষ্য নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছি।
করোনাভাইরাসের কারণে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা হোচট খাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সেটা মোকাবিলা করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। যেন আমাদের দেশের মানুষগুলি সুরক্ষা পায় এবং মানুষ যেন ভালভাবে চলতে পারে এবং আমাদের অর্থনীতি যেন গতিশীলতা না হারায়।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল।