জিল্লুর রহমান রাসেল, ফরিদপুর প্রকৃতির প্রতিশোধ বড়ই নির্মম। তার আক্রোশ পারমাণবিক বোমার ক্ষয়ক্ষতির চেয়ে বিশেষ কম নয়। প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর জুলুম করার ফলে মানুষের সমাজে নতুন নতুন ধরনের বিপদ আসে, যা প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণ কঠিন। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প, দাবানলের মতো নতুন রোগের মহামারি বিশ্ববাসীকে বিপর্যস্ত করে দিতে পারে। কী কারণে নতুন নতুন ভাইরাসের দ্বারা মহামারির প্রাদুর্ভাব ঘটছে, তা বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বলতে পারবেন। কিন্তু ঘটনা ঘটার পর তা মোকাবিলা করা শুধু চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের কাজ নয়, রাষ্ট্রযন্ত্রের অনেকের ভূমিকা রাখতে হয়।
আরও পড়ুনঃ চারটি বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
মহাজগতে এবং পৃথিবী গ্রহে যেখানে যা-ই ঘটুক, আমাদের গায়ে তাপ না লাগা পর্যন্ত নির্লিপ্ত থাকাই বাঙালির স্বভাব। তারপর বিপদ দোরগোড়ায় এলে শুরু হয় হাহাকার। সে হাহাকার দেখা গেছে তিন বছর আগে চিকুনগুনিয়ার সময় এবং গত বছর ডেঙ্গু যখন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়। সরকারি হিসাবেই দেড়’শর বেশি মারা যায়। গণমাধ্যমের হিসাবে দেখা গেছে ২০০-এর মতো। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করায় ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে, তবে আগামী বর্ষার মৌসুমে আবার যে দেখা দেবে না, তা বলা যায় না। সম্মিলিতভাবে দুর্দৈব মোকাবিলার চেয়ে প্রতিদিন গণতন্ত্রের চতুর্দশ পুরুষ উদ্ধারে আমাদের আগ্রহ বেশি এবং তাতে যদি বড় রকমের কোন ক্ষতি হয় তাতেও কারও করুণার উদ্রেক হয় না।বর্তমানে মহামারিতে রুপ নেয়া করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে ঠিক তেমনটিই ঘটছে।
বাজারে লোকজনের সমাগম দেখে মনে হয় এটা তেমন কোন ব্যাপারই নয়। ভাইরাসই তো একটা। যেখারে সরকার বারংবার নিষেধ করছে ভীড় না করতে, দুজন একসাথে না চলতে, নির্দিষ্ট দুরত্ব বজায় রাখতে অথচ এ কথাগুলো যেন কারো কানেই যাচ্ছে না। কবে বাঙ্গালী সচেতন হবে? সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৩২,১৮০ জন, মোট আক্রান্ত ৬,৮৪,৩৮৪ জন আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১,৪৬,৪০০ জন। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত আক্রান্ত ৪৮ জন, সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ১৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।
এমপি মোশাররফ হোসেন ৫০০ পিপিই দিলেন চিকিৎসকদের মাঝে
আজকের বাজারের চিত্র দেখে কথা হয় কোতোয়ালী থানার ওসি মোরশেদের আলমের সাথে, তাকে বাজারের এই অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, জনগনের সাথে সহনশীল আচরণ করার নির্দেশ রয়েছে তাই আমরা কঠোর হতে পারছি না আর কঠোরতা অবলম্বন না করে যদি মুখে বলি ভাই আপনারা ভীড় করবেন না, অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হবেন না তাহলে এরা এই মিষ্টি কথা কানেই নেয় না, যখন লাঠি হাতে দুজন পুলিশ রাস্তায় দাড়ায় দেখা যায় মুহুর্তেই রাস্তা ফাঁকা। শহরে রিক্সায় দুজন করে যাত্রী চলাচল করতে দেখা যায়। হাট বসা নিষেধ থাকা সত্ত্বেও বেশকিছু লোক দোকান নিয়ে হাটে বসেছে আর এই দোকানগুলোতে ক্রেতারা গায়ের সাথে গা মিশে দাড়িয়ে কেনাকাটা করছে। কবে এই বাঙ্গালীর বোধোদয় হবে? প্রশ্ন এটাই!