কভিডে বিশ্বজুড়ে শুধু আতঙ্কই তৈরি করেনি বদলে দিতে পারে বিশ্ব নেতৃত্বের চিত্রও। বৈশ্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে এখন বর্ণনা করা হচ্ছে সুয়েজ মোমেন্ট হিসেবে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র যথাযথ সাড়া দিতে না পারলে নড়ে যাবে শীর্ষস্থান। নির্ধারক হিসেবে চলে আসতে পারে চীনের নাম।
সারা বিশ্বের জন্যই সময়টা ভালো যাচ্ছে না। সময় ভালো নয় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের জন্যও। কভিড নিয়ে দুই দেশই দোষারোপ করছে পরস্পরকে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার একে “চীনা ভাইরাস” বলে দাবি করছেন। অন্যদিকে চীনের দাবি, এই ভাইরাস ছড়িয়েছে মার্কিন সেনারাই। তবে এখন কেবল বাক্যুদ্ধ নয় প্রশ্ন উঠছে আগামীতে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে আসবে কে ?
১৮ মাসের বাণিজ্যযুদ্ধ বন্ধে চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রাথমিক চুক্তি সই করে বিশ্ব অর্থনীতির দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরতে শুরু করে। ঠিক তখনই বিস্তার ঘটে কভিডের। এই ভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করা, দেশব্যাপী লকডাউন, উৎপাদন বন্ধ- এসবই ছিল চীনের সঙ্গে বেমানান।
তবে বিশ্বের কারখানাখ্যাত চীন সেই দুর্দিন কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে। দ্রুতই দেশটির প্রবৃদ্ধির চাকা ঘুরতে শুরু করবে বলছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী তিন মাসের মধ্যেই চোখে পড়ার মতো অর্থনৈতিক উন্নতি আসছে এমন পূর্বাভাস তাদের।
পড়ুন ও জানুন ঃবাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম- ডাঃ খান আবুল কালাম
এর উল্টো চিত্র যুক্তরাষ্ট্রের। কভিড সংক্রমণে কোণঠাসা বিশ্ব অর্থনীতির এক নম্বর পরাশক্তি। ধস নেমেছে দেশটির পুঁজিবাজারে প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনা হয়েছে সুদের হার এবং অর্থনীতিকে রক্ষায় ৭০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসের আশঙ্কা দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে ২৪ শতাংশ কমবে। এছাড়া আগামী মাসে বেকারত্বের হার বেড়ে পৌঁছাবে ১৩ শতাংশে।
অর্থনীতি ছাড়াও নেতৃত্বের আরো নিয়ামক এখন চীনের পক্ষে। করোনা সংকটে ইতালিসহ ইউরোপের অনেক দেশ সহায়তা পেতে ঝুঁকছে চীনের দিকে। চীনও চিকিৎসক দল ও সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে দেশগুলোতে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৮০টিরও বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে জরুরি অর্থ সহায়তা দিয়েছে বেইজিং। আরও পড়ুন ঃ করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যর সাথে কাজ করবে
মহামারি এমন এক সময়ে আঘাত হেনেছে যখন চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আগে থেকেই নেতিবাচক ছিলো। দুই দেশই বাণিজ্যিক উত্তেজনা প্রশমন করে প্রস্তুতি নিচ্ছিল এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে। মহামারি প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র যথাযথ সাড়া দিতে ব্যর্থ হলে হয়তো নীরবেই হাতছাড়া হবে নেতৃত্ব। অন্যদিকে আঞ্চলিক দিক থেকে এরইমধ্যে সুপার পাওয়ার হিসেবে আবির্ভাব ঘটেছে চীনের।