কবীর হোসেন,আলফাডাঙ্গা ফরিদপুর প্রতিনিধি
পরিবেশ বান্ধব মালচিং পেপার ব্যবহার করে খাদ্য গুণাগুন সমৃদ্ধ উচ্চমূল্যের উন্নত জাতের করলা চাষ করে সফল হয়েছেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চান্দড়া গ্রামে রফিকুল ইসলাম তুহিন নামে এক শিক্ষিত যুবক।
তুহিন স্নাতক পাশ করার পর এক সময় ভালো বেতনে ঔষধ কোম্পানিতে চাকুরি করতেন। পরে সিদ্ধান্ত নেন নিজস্ব মেধাশক্তি ও পরিশ্রম কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হবেন। সেকারণেই গতবছরের নভেম্বরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজ এলাকায় বাড়ির পাশে কৃষি চাষাবাদ শুরু করেন তুহিন।
জানা গেছে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষিত কৃষক তুহিন ফলনও পেয়েছেন আশানুরূপ। বাজারে দাম ভালো হওয়ায় লাভবান হওয়ার আশা তার। গতবছরের নভেম্বরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজ এলাকায় কৃষি চাষাবাদ শুরু করেন।মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে এ বছর তিনি অন্যান্য সবজির সঙ্গে করলা চাষ শুরু করেন। গাছ বেড়ে ওঠার জন্য পুরো ক্ষেতে মাচা তৈরি করেছেন । উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করায় ফসলে রোগবালাই কম হয়। উৎপাদন খরচের তুলনায় করলা চাষে লাভ বেশি। যে কারণে বাড়ির পাশের ২০ শতাংশ জমিতে এ বছরের এপ্রিলের শুরুতে উন্নত জাতের করলা চাষ শুরু করেন তুহিন। সবমিলিয়ে এতে চাষাবাদে তার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা।
কৃষক তুহিন বলেন, করলা পাইকারদের কাছে প্রতি কেজি ৪৫-৫০ টাকা দরে বিক্রি করছি। বাজারে দামও ভালো। বাজারে চাহিদা থাকায় পাইকাররা ক্ষেত থেকেই কিনে নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে আমি করলা বিক্রি করে ৮০ হাজার টাকা আয় করেছি। আরও ২০ হাজার টাকার করলা বিক্রি করার আশা রয়েছে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, করলা বছরের যে কোনো সময় চাষ করা যায়। এ সবজি চাষে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন খুব কম হয়। এ ছাড়া রোগবালাইও কম হয়। এজন্য ধান কিংবা অন্যান্য মাঠ ফসলের তুলনায় করলা চাষ বেশি লাভজনক হওয়ার কারণে সারাবছর বাজারে চাহিদা থাকে। তিনি বলেন, তুহিন একজন সফল সবজি চাষি। তিনি শসা, মরিচ, পেঁপে চাষেও সফলতা দেখিয়েছেন। উন্নত পদ্ধতিতে করলা চাষেও সফল হয়েছেন। অন্যান্য কৃষকও অনুপ্রাণিত হবেন। কৃষি বিভাগ এ বিষয়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হাসান বলেন, করলা তেঁতো স্বাদের সবজি। তবে এর মধ্যে রয়েছে নানা গুণ। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী সবজি। নিয়মিত খেলে করলা ওজন এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়া এটি চর্মরোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।