আইসিসির বেঁধে দেওয়া অদৃশ্য শেকল থেকে মুক্ত বাংলার ক্রিকেটের সুপারম্যান। খেলবেন ফিরবেন ২২ গজের ক্রিকেট ক্যানভাসে। এখন এ দৃশ্য বাস্তবে দেখার অপেক্ষা শুধুই সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু সাকিব কি পারবেন আগের মতো পারফরম্যান্সে ফিরতে। এই চ্যালেঞ্জ কিন্তু সাকিবের জন্য থেকেই যাচ্ছে।
যদিও সাকিবের কোচ সালাউদ্দিন সময় সংবাদে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সাকিবের বোলিং প্রতিভা ‘গড গিফটেড’ আর ব্যাটিং দক্ষতা আরো কার্যকরী হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।
সাকিবের আরেক গুরু নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে, সাকিব জানে কিভাবে কখন নিজেকে মেলে ধরতে হবে। যে কোন কন্ডিশনে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার দারুণ ক্ষমতা আছে তার। আন্তর্জাতিক মঞ্চে নতুন এক সাকিবকে দেখবে ক্রিকেট বিশ্ব। এমনটাই বিশ্বাস সাকিবের গুরুর।
নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা দুই কোচের হাতে গড়ে উঠা এক সময়ের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এমন সব রেকর্ডের জন্ম দিয়েছেন যা তাকে বসিয়েছে কিংবদন্তির আসনে। কিন্তু তারপরও অনেক ক্রিকেট পণ্ডিতের মনে প্রশ্ন, সাকিব ফিরতে পারবেন তো আগের তার মতো হয়ে। কারণ এক বছর যে তিনি সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ছিলেন নির্বাসনে।
আলোচকদের প্রশ্ন আসতেই পারে। কিন্তু এও ঠিক কঠিনকে ভালবেসে বিজয় গল্প রচনা যে এক সাকিবের পক্ষেই সম্ভব। তারপরও কারও কারও মাঝে শঙ্কা সাকিব পারবেন তো?
মনে আছে ২০১৮ সালের মার্চে এক কলঙ্কজনক ঘটনার কথা? কেপ টাউন টেস্ট বল টেম্পারিংয়ের নোংরা এক গল্পের জন্ম দিয়েছিলো মাইটি অস্ট্রেলিয়া। সমালোচনার ঝড় উঠেছিলো বিশ্ব ক্রিকেট আকাশে। এ ঘটনাকে লজ্জা বলে আখ্যা দেন স্বয়ং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী। ঐ ঘটনায় অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট দলের তখনকার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ও সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারকে এক বছর নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
সে সময়ে দলের সেরা দুই পারফর্মার ছিলেন স্মিথ-ওয়ার্নাররা। ফর্মে তুঙ্গে ছিলেন। কিন্তু সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ থাকার পর তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনটা প্রত্যাশিত পারফরম্যান্সেই হয়ে আসছে, এখনো।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রান ভোমরা সাকিবের ক্ষেত্রেও একই চ্যালেঞ্জ থেকেই যাচ্ছে। যেমনটা ওয়ার্নার-স্মিথদের ক্ষেত্রে ছিলো। দুই অজি পেরেছেন। সাকিব পারবেন তো? এই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে স্রোতের বিপরীতে থাকা আলোচকদের মনে।
হয়তো তার এমন সব স্বভাবসুলভ পারফরম্যান্সে দিয়েই মিথ্যা প্রমাণ করবেন সাকিব। তার এমন উদাহরণ আগেও দিয়েছেন মিস্টার সেভেন্টি ফাইফ। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এতো লম্বা সময় পর মাঠের ক্রিকেটে সাকিবের ফেরাটা রাজসিক হবে তো? প্রশ্নটা থেকেই যায়!