তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে
চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি ঃ-
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীর গোপালপুর-মৈনট দিয়ে গত দু’দিন ধরে নারের টানে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। তীব্র তাপদাহর মধ্যে চরাঞ্চলের উতপ্ত বালুভুমির পথ পেরিয়ে আপন মুখগুলোর সান্নিধ্যে ছুটছেন ঈদ যাত্রীরা। বছর ঘুরে
ঈদুর ফিতরের আনন্দ আরও ভারী করতে এ নৌরুট দিয়ে মায়ের কোলে ফিরছেন বেশীরভাগ রাজধানী ঢাকার চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশায় কর্মরতরা।
প্রতিকুল আবহাওয়া ও পদ্মা নদীর উত্তাল ঢেউ ডিঙিয়ে ষ্পিড বোট ও ট্রলারযোগে গোপালপুর-মৈনট ঘাট দিয়ে প্রতিদিন পার হয়ে আসছেন অন্ততঃ দশ হাজার ঈদ যাত্রী।
জানা যায়, চরভদ্রাসন সহ আশপাশের দুই উপজেলার যাত্রীদের রাজধানী ঢাকা থেকে যাতায়াতের সবচেয়ে সহজ পথ হচ্ছে গোপালপুর-মৈনট ঘাট দিয়ে পদ্মা পারাপার। ঢাকার গুলিস্থান থেকে বাসযোগে মাত্র দেড় ঘন্টা ব্যবধানে উপজেলা পদ্মা
নদীর অপর পারে চর মৈনট ঘাটে নেমে ট্রলার ও ষ্পিডবোটে যাত্রীরা খুব সহজে বাড়ী ফিরতে পারেন। তাই এ ঘাট দিয়ে ঈদ যাত্রীদের উপচে পড়া ভীর লেগে থাকে।
শনিবার দুপুরে পদ্মা নদীর ঘাট ঘুরে জানা যায়, এ নৌরুটে ঈদ যাত্রী পারাপারের জন্য সর্বদা ৩২টি ষ্পিডবোট ও ৫০টি ট্রলার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
উপজেলার গোপালপুর ঘাটে ১৫টি স্পিডবোট, ২০টি ট্রলার এবং মৈনট ঘাটে ১৭টি ষ্পিডবোট ও ৩০টি ট্রলার যাত্রী পারাপারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে ঘাট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। প্রতিটি ছোট ষ্পিডবোটে ১০ জন বড় বোটে ২০ জন করে এবং প্রতিটি ট্রলারে শতাধিক যাত্রী পারাপার হচ্ছেন। প্রতিদিন ঢাকা থেকে হাজার হাজার ঈদযাত্রী বাসযোগে উপজেলা পদ্মা নদীর অপর পারের মৈনট ঘাটে এসে ভীর জমাচ্ছেন। সেখান থেকে স্পিডবোট ও ট্রলার বোঝাই করে পদ্মান দী পার হয়ে ঘরে ফিরছেন ঈদযাত্রীরা। ঈদযাত্রীদের সুবিধার্থে ট্রলার ও ষ্পিডবোট
ছাড়ার জন্য সময় নির্ধারন বাতিল করা হয়েছে। যাত্রী বোঝাই হলেই পদ্মা বুক জুড়ে ছুটে চলছে ট্রলার ও ষ্পিডবোট।
শনিবার বাড়ীফেরা এক চাকুরীজীবি শাখাওয়াত হোসেন (৫০) জানান, “স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ী ফিরতে যত কষ্টই হউক, এ কষ্টের মধ্যে এক অনাবিল আনন্দ নিহিত রয়েছে। সারাটা বছর হৃদয় কঁাদে মা-মাটির মানুষগুলো পাশে সঙ্গ দিতে। কিন্ত পেশাগত দায়িত্ব পালনের স্বার্থে সারা বছর
বাড়ী ফেরা হয় না বা অন্য সময় বাড়ীতে গিয়েও সব স্বজনদের কাছে পাই না।
কিন্ত ঈদে বাড়ী ফেরা মানেই সবার সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে ঈদ উদযাপন করা যা শহরে পড়ে থাকলে সেই আনন্দ পাওয়া সম্ভব না”।
আরেক যাত্রী হাসিনা আক্তার বলেন, “ আমার আনন্দতো আমার মা, আমার মাটি, আমার সেই শৈশব, কৈশরের স্মৃতিগুলি ফিরে পাওয়া। সে আনন্দগুলো ফিরে পেতে হলে বাড়ীতে ঈদ করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই, তাই হাজারো কষ্ট,হাজারো প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ঈদ আনন্দ ভোগ করতে মায়ের কোলে ফিরে যাচ্ছি”।