কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার মনোহরদিয়া মধ্যপাড়া গ্রামে জমিজমা বিরোধের জের ধরে মনোহরদিয়া ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেলিম মেম্বার গং রা সের আলী (৬৫) নামের ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। জানা যায়, গতকাল জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ইউপি সদস্য সেলিম মেম্বার তার বাহিনী নিয়ে আপন বড় চাচা সের আলী (৬৫) এর উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম। এ সময় মৃত সের আলী ছেলে ইমদাদুল হাসান (৩৫) ও নিহত সের আলীর স্ত্রী শাহিদা খাতুনুকে কুপিয়ে মারাত্ম আহত করে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে সের আলীসহ ৩ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। গতকাল বিকেলে নিহত সের আলী ও তার স্ত্রী শাহিদার অবস্থা আশংকাজনক হলে রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করে। রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে আজ বেলা সাড়ে ১১টার সময় সের আলী মৃত্যুবরণ করেন। তার স্ত্রী শাহিদা খাতুন আশংকাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নিহতের ছেলে ইমদাদুল হাসান কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পরিবারের আহাজারি
এ ব্যাপারে নিহত সের আলীর ছেলে মোস্তাক আহমেদ জানান, দীর্ঘদিন আগে আমার দাদী রাহেলা বেগমের নিকট থেকে বাড়ি ও মাঠের প্রায় ৪ বিঘা জমি গোপনে লিখে নেয় ইউপি সদস্য সেলিম মেম্বাসহ বাবা তৈয়ব আলী, চাচা ডাক্তার শবত ও জহুরুল। বাদ যায় সেলিম মেম্বারের বড় চাচা নিহত সের আলী ও ছোট চাচা কুদ্দুস। এরপর নিহত সের আলী ও কুদ্দুসের বাড়ির যে জমি আছে সেই জমি ইউপি সদস্য সেলিম মেম্বার গংরা গতকাল দখল করতে যায়। এ সময় নিহত সের আলী বাধা দিলে হাবিব মন্ডল, সরোয়ার হোসেন ও শরিফুল ইসলামের ইন্ধনে সেলিম মেম্বারের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র রামদা, বাকি, হাসুয়া, রড, হকস্টিক, শাবল দিয়ে তাদের উপর হামলা চালায় ডাক্তার শবত আলী, তৈয়ব, ঝরু, সেলিম, সাঈদ, ঝন্টু, সজিব, সিমা, রিনাসহ প্রায় ১৫/২০জন। এ ব্যাপারে মনোহরদিয়া পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই উজ্জল ঘটনার দিন সের আলী হত্যার মুল ঘাতক সেলিম মেম্বার এবং অপর পক্ষের মৃত আন্দায় মন্ডলের ছেলে নিজাম উদ্দিন (৫০) ও মুস্তাকের ছেলে তুষার আহমেদ (২৫)কে আটক করে। এই ঘটনায় নিহত সের আলীর ছেলে মুস্তাক বাদী হয়ে ইবি থানায় ৭জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এই ঘটনায় মনোহরদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম জানান, গতকাল সেলিম মেম্বার ও তার চাচা সের আলীর সাথে জমিজায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মারামারি হয় যেহেতু সেলিম মেম্বার ও সেরা আলী আপন চাচা-ভাতিজা। পুলিশ সেলিম মেম্বারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আমি নিজেও থানায় যেয়ে মুসলেকা দিয়ে এই মারামারি মিমাংসা করতে যায়। ওসি সাহেব বলেন, যেহেতু ভিকটিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাই সেলিম মেম্বারকে ছাড়া যাবে না। আজ সকালে শুনতে পায় সেলিম মেম্বারের চাচা সের আলী মারা গেছে। এ ব্যাপারে ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আরিফ জানান, এই ঘটনায় পৃথক পৃথক ২টি মামলা হয়েছে। নিহত সের আলীর ছেলে মুস্তাক বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। সের আলী হত্যা মামলার প্রধান আসামী ইউপি সদস্য সেলিম মেম্বারকে আটক করা হয়েছে এবং পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থেকে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত সের আলীর লাশ তার গ্রামের বাড়ি মনোহরদিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় চলছে চরম উত্তেজনা। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।