ভারসাম্যহীন মানুষের হাতে ইউএনও পূরবী গোলদারের খাদ্য
মো.সাব্বির হাসান,সদরপুর, ফরিদপুর :সমাজে যে মানুষ গুলো ঠিক মতো কথা বলতে পারে না, অন্যের জমি দখল করে বসতি গড়তে চায় না, ব্যাংক লুটের নেশায় মত্ত হতে উম্মাদ হয়না, সমাজের আধিপত্য বিস্তারে যারা আসে না, সংসার থেকে জম্মদাতা পৈত্তিক ওয়ারিশ হারিয়ে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে জীবন যাপন করে তাদের আর কি বলা যেতে পারে? পাগল আমার বলতে কষ্ট হয় এ শব্দটি। চলমান সমাজে ফেরারী এক মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ তারা। প্রতিদিন রাত হয়, রাত শেষে আবার সকাল হয়। সভ্য সমাজের মানুষেরা ক্ষুধার আহার শেষ করে কর্মে বের হয়। ওদের রাত শেষ হয় কখনো প্রবল ঝড়ের মধ্যে, আবার কখনো কনকনে হাড় কাঁপানো বস্ত্রহীন শীতে। অনাহার তাদের কখন শেষ হয় এ খবর জানা নেই কারোর। এ সব মানুষ গুলাকে নিয়ে ভিন্ন আয়োজন করেছেন একজন নারী ইউএনও। তিনি হচ্ছেন ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূরবী গোলদার। করোনা ভাইরাসের মহামারিতে সারাদেশ যখন অবরুদ্ধ হয়ে আছে। বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ যখন ঘরে ফিরে গেছে। বাজারের সব দোকান বন্ধ রয়েছে। ঠিক এমনি সময়ে নিম্ম আয়ের মানুষের মাঝে ত্রান বিতরণ করছে সরকার।
কিন্তু সমাজের ভারসাম্যহীন মানুষের অনাহারের কথা চিন্তা করেনি কেহ। এবার ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়ে নিজ প্রেরণায় তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ইউএনও পূরবী গোলদার। ভারসাম্যহীন এসব মানুষ খুব ক্ষুধার্ত। ক্ষুধার্ত মানুষের মাঝে নিজ হাতে খুজে খুজে খাবার তুলে দিচ্ছেন সে। যতদিন এ করোনা ভাইরসা থাকবে তারা যতক্ষন অন্যের থেকে খাবার সংগ্রহ করতে না পারবে তিনি চালিযে যাবেন তার এ মহৎ প্রচেষ্টা। গুনী এ মানুষ তিনি তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তার স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে……“ভাবনাগুলো একান্তই আমার” প্রতিদিন অফিসে আসা যাওয়ার পথে ওদের সাথে দেখা হয়। কখনো বা হলরুমের বারান্দায় বসে আছে কখনো অফিস প্রাঙ্গণে হাঁটছে। রাস্তা বা বাজারেও দেখা হয়। মাঝে মাঝে ওরা খাবার সংগ্রহ করতে কোথায় যেন চলে যায়। আবার ফিরে আসে। গত কয়েকদিন ধরে ওরা আর কোথাও যাচ্ছে না। বসেই আছে। মলিন ক্লান্ত চেহারা গুলো আরও মলিন। একটু খেয়াল করে বুঝলাম দোকান পাট,খাবার হোটেল বন্ধ থাকায় ওরা না খেয়ে আছে। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় কাপড় চোপড়ও নোংরা। কারো বাড়িতে গিয়ে খাবার সংগ্রহের সুযোগও নেই ওদের।
আমরা দিনান্ত পরিশ্রম করছি। দিনমজুর, খেটে খাওয়া অসহায় মানুষকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দিচ্ছি। যারা বলতে পারছে,হিসেবের ভেতরে আছে তারা সহায়তা পাচ্ছে। কিন্তু ওরা?ওরা তো কারো হিসেবের ভেতরেই নেই। তবুও ওদের ক্ষুধা পায়,খাবারের অভাবে ওরা কষ্ট পায়।
এই দুর্যোগে আমি আমার উপজেলা কমপ্লেক্স এবং সদরপুরের বিভিন্ন বাজারের মানসিক ভারসাম্যহীন ১০/১১ জন মানুষের খাবারের দায়িত্ব নিয়েছি। আমরা সবাই চাইলেই পারি ওদের পাশে দাঁড়াতে। যাদের পরিবার নেই,আশ্রয় নেই, হই না তাদের একটু আশ্রয়। আসুন আমাদের চারপাশে তাকিয়ে দেখি এমন কেউ আছে কিনা। “জীবন জীবনের জন্য”। মন্তব্য- আসুন তার এ যাত্রায় আমরাও এগিয়ে আসি এসব ভারসাম্যহীন মানুষের পাশে।
বাংলাদেশে করোনা চিকিৎসায় ১১হাজার স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসক দল