চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের টিলারচর গ্রামের বানার হালট নামক জনচলাচলের একমাত্র রাস্তাটি মাটিবাহী বড় চাকা বিশিষ্ট ট্রলি গাড়ী ও ট্রাক চলাচল করে ধ্বংস করে দিয়েছে। স্থানীয় মাটি ব্যাবসায়ী ওবায়দুল বারী দীপু খান (৫৫) উক্ত গ্রামের ফসলী মাঠের মধ্যে এক গৃহস্থ পরিবারের ভিটি বাঁধার কাজ চুক্তি নিয়ে রাস্তার ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। উক্ত গ্রামের ইব্রাহিম খান নামক এক গৃহস্থর ভিটি বাঁধার জন্য সাড়ে ৬ লাখ টাকা চুক্তি নিয়ে ট্রাক ও লড়ি গাড়ী দিয়ে রাস্তাটি ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে এলাকার মেম্বার কামরুল হাসান রাস্তা ধাবংসকারী উক্ত মাটি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওই মাটি ব্যবসায়ী গত এক মাস ধরে দিনরাত ভারী গাড়ী দিয়ে মাটি সরবরাহ করার ফলে প্রায় দেড় কি.মি. গ্রাম্য রাস্তা বালুস্তুপে পরিনত হয়েছে। এতে উক্ত গ্রামের জনচলাচলের রাস্তাটি বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
রোবার উক্ত এলাকার ০১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামরুল হাসান জানান, উপজেলার বানার হালট নামক একমাত্র কাচা রাস্তাটি দিয়ে দীর্ঘদিন গ্রামবাসী যাতায়াত করে আসছে। সম্প্রতী স্থানীয় মাটি ব্যাবসায়ী ওবায়দুল বারী দীপু খান উক্ত গ্রামের মাঝামাঝি পয়েন্টে ফসলী মাঠের মধ্যে একটি ভিটা বাঁধা কাজের চুক্তি নেয়। সে উপজেলার আরজখার ডাঙ্গী গ্রামের পদ্মা নদী পার হতে বালুমাটি ট্রাক ও লড়িগাড়ীতে লোড দিয়ে উক্ত ভিটে বাঁধার কাজে মাটি সরবরাহ করে চলেছে। এতে উপজেলার টিলারচর গ্রামের একমাত্র ২ কি.মি. কাচা রাস্তার মধ্যে প্রায় দেড় কি.মি. রাস্তা ধ্বংস হয়ে গেছে। রাস্তাটি বালুমাটি বাহী ট্রাকের লোডে খালের ন্যায় দেবে গেছে। এমনকি রাস্তাটি খানাখন্দে ভরে গেছে এবং নিচ থেকে বালুস্তুপ উপরে উঠে এসে যেকোন যানবাহন বা জনচলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। উক্ত ইউপি সদস্য আরও জানান, “ জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি ও স্থানীয় গ্রামবাসী বহুবার মাটি ব্যাবসায়ী দীপু খানকে ট্রাক চলাচল বন্ধ করতে অনুরোধ করেছি, কিন্ত তিনি কারো কথা কর্ণপাত করছে না। বরং গাড়ীর ড্রাইভার দিয়ে বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকী দিচ্ছে”।
উক্ত গ্রামের বিল্লাল শেখ জানায়, “ মাটি ব্যবসায়ীরা রাস্তার যে অবস্থা করেছে তাতে এমনিতে পায়ে হাটতে পারি না আর একটু বৃষ্ট্ িহলে তখন আমাদের আর ভোগান্তির শেষ থাকবে না। তিনি আরও জানান, আমরা অনেকবার নিষেধ করেছি, আমাদের কথা কেউ শোনে না”। আর মাটি ব্যবসায়ী ওবায়দুল বারী দীপু খানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “ আমার বৈধ গাড়ী রাস্তায় চলাচল করলে মেম্বার কামকরুল হাসানের মাথাব্যাথা হবে কেন। রাস্তাটি গাড়ী চলাচল অযোগ্য ছিল। আমি রাস্তার কোনো কেনো স্থলে মাটি ফেলে গাড়ী চলাচলযোগ্য করে মাটি সরবরাহ করেছি”। এ ব্যপারে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ কাউছার বলেন, “ উপজেলার গুটিকয়েক মাটি ব্যবসায়ী নিজেদের ব্যাক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে উপজেলা জুড়ে মাটিবাহী ট্রাক ও বড় ট্রলি দিয়ে প্রায় সমস্ত গ্রাম্য জনপথ বিধ্বস্ত করে দিয়েছে, তাদের হীনকর্মকান্ডে সরকারের অনেক উন্নয়ন কর্মকান্ড ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তাই তিনি মাটি ব্যাবসায়ীদের হীনকর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন”। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা বলেন, “ উক্ত রাস্তাটি ক্ষতি করার দায়ে মাটি ব্যবসায়ী দীপু খানকে নগদ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং সর্বোচ্চ তিনদিনের মধ্যে সে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তিাটি মেরামত করে দিবে বলে ওয়াদা করেছেন”।