শনিবার ঈদুল আযহার দিনে শহরের পৃথক, পৃথক স্থানে ৩টি রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে। ঝুলন্ত অবস্থায় ২জনের মৃত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপরদিকে পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার বিকেলে ফরিদপুর শহরের পূর্বখাবাসপুর এ্যাডঃ নজরুল সড়কস্থ মাতৃ ছায়ার দ্বিতীয় তলা থেকে গলায় ওড়না পেচানো ঝুলন্ত অবস্থায় সুপ্রিয়া দাস (২৩) নামে এক তরুনির মৃত দেহ কোতয়ালী থানা পুলিশ উদ্ধার করে। এর কিছুক্ষণ পর শহরের গোয়ালচামট সুন্দরবন আবাসিক হোটেল-এর একটি কক্ষ থেকে রানা (২৪) নামে এক যুবকের ওড়না দিয়ে পেচানো ঝুলন্ত মৃত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর ঘন্টাখানেক পর ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে নৌকা থেকে পড়ে গিয়ে বাচ্চু শেখ (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিখোজ রয়েছে মর্মে খবর প্রকাশ পায়। স্থানীয় জনতা সাথে সাথে নদীতে নেমে তার অনুসন্ধান চালায় কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। রাতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডুবুরি দিয়ে খুঁজেছে তাতেও সন্ধান পাওয়া যায়নি। রবিবার সকাল পর্যন্ত তার মৃত দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পূর্ব খাবাসপুরে নিহত সুপ্রিয়া দাস (২৩) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স (গণিত)-এ প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তার পিতা শুকুমার দাস সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষক। পরিবারের সূত্রে জানা যায় বিকেল ৪টার দিকে সে মায়ের সঙ্গে টিভি দেখছিল। এমন সময় প্রকৃতির ডাকে টয়লেটে যাবার কথা বলে পাশের রুমে আসে, কিছুক্ষণ পর পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে সে ঝুলছে। এর পুলিশ খবর পেয়ে মৃত দেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
গোয়ালচামট হোটেল সন্দরবন থেকে উদ্ধারকত রানা (২৪)-এর বাড়ী গোপালগঞ্জ সদরের বড়াশি গ্রামে। সে ভুলু মোল্যার পুত্র। শহরে তার শশুর বাড়ীতে এসে সেখান থেকে সাংসারিক বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সাথে মনমালিন্যের এক পর্যায়ে সে শুক্রবার রাত ২টার দিকে শহরের সুন্দরবন আবাসিক হোটেলে একটি কক্ষ ভাড়া নেয় অবস্থান করার জন্য। শনিবার বিকেলে কক্ষের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেচানো অবস্থায় ঝুলতে দেখে হোটেল বয় পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে মর্গে নিয়ে আসে। অন্য দিকে সদর উপজেলার ডিক্রির চর ইউনিয়নের তাইজদ্দিন মাতুব্বর ডাঙ্গী থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় মাঝিসহ পাঁচজন সিএন্ডবি ঘাটে নোঙর করতে গিয়ে একটি সিমেন্টের জাহাজ (এমবি পীর মেছের শাহ)-এর সাথে ধাক্কা খেয়ে মাঝিসহ কয়েকজন নদীতে পড়ে যায়, বাকীরা সাতার কেটে উপরে উঠতে পারলেও বাচ্চু শেখ সাতার না জানায় নদীতে ডুবে যায়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মেহেদী হাসান মিন্টু ফকির। এ বিষয়ে কোতয়ালী থানা পুলিশের সাথে কথা হলে জানা যায়, পৃথক পৃথক অপমৃত্যু মামলা রুজু হচ্ছে। তদন্ত ও ময়না তদন্তের পর বিষয়টি পরিষ্কার হবে।