• ঢাকা
  • শনিবার, ২৫শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং
রাজশাহীতে মোবাইল ফোনে রোগীর চিকিৎসা দেয়ার হার বেড়েছে,জনগণের সাধুবাদ
করোনা ভাইরাস সব কিছু ওলট পালট করে দিয়েছে।কারন কে যে করোনা ভাইরাস বহন করছে তা টেস্ট ছাড়া বলা মুশকিল।এমতাবস্থায় ডাক্তারগণ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য টেলি মেডিসিনের অর্থাৎ মোবাইল ফোনে চিকিৎসা পদ্ধতি চালু করেন।যা এখন ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কল্যাণ সাধন করেছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের বাড়ি থেকে টেলিফোনে চিকিৎসা নেয়ার হার বেড়েছে। তাঁরা এখন ফোন দিয়েই ওষুধ, খাবার ও পরিচর্যার বিষয়গুলো জেনে নিচ্ছেন চিকিৎসকদের কাছে থেকে। অবস্থা জটিল হলে হাসপাতালে ভর্তি করছেন রোগীর স্বজনেরা।
রাজশাহীতে টেলিমিডিসিন সেবা দিচ্ছেন এমন চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাড়িতে অবস্থান করে রোগীরা জানতে চান, পরিস্থিতি খারাপ হলে তাঁরা কী করবেন, অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করবেন কীভাবে, বিশেষায়িত সেবা পাবেন কোথা থেকে এবং কে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেবেন, না কি হাসপাতালে ভর্তি হতে হেÑ তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা অস্পষ্টতা আছে। পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে গেলে একজন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে, তার একটি নির্দেশনা আছে কোভিড-১৯ চিকিৎসাবিধিতে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, বাড়িতে থাকা রোগীদের ফোনে সেবা নেয়ার সংখ্যা বাড়ছে। সকল রোগীর কার্যকর চিকিৎসা ও ফলোআপ আরও ফলপ্রসূ করার পন্থাও আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। গত কয়েক সপ্তাহ আগে যেখানে কয়েক সপ্তাহে ৫০০ জন রোগী ফোনে সেবা নিচ্ছিলো এখন প্রায় ২০০০ মানুষ ফোনে সেবা নিচ্ছে। হাসপাতালের ১৫ জন চিকিৎসক এই সকল সেবা দিচ্ছেন।
তিনি আরো জানান, আগে বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগের ভর্তিসহ সেবা নিতো প্রায় চার হাজার রোগী। আর এখন মাত্র ২০০ জন রোগী বহির্বিভাগে সেবা নিচ্ছে। তাই বলা যায়, মানুষও সচেতন হয়েছে। জরুরি না হলে হাসপাতালে আসছে না।
রামেকের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক আবু-শাহীন জানান, ফোনে সেবা নেয়ার সংখ্যা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে প্রতিদিন আমার কাছে প্রতিদিন ১০ জনের নিচে ফোন আসতো। কিন্তু এখন প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন ফোন করে সেবা নিচ্ছেন। তবে ফোন করে সেবা নেয়া রোগীদের অনেকেই সব ধরনের সমস্যার ব্যাপারে পরামর্শও নিচ্ছেন।
এরআগে রাজশাহীতে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে রোগী শনাক্ত হয় উপজেলার পুঠিয়াতে। আক্রান্ত ব্যক্তি ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়ি এসে আত্মগোপনে ছিলেন। তার শরীরে করোনার উপসর্গ থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র নিয়ে তার নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাঠালে তার করোনা পজেটিভ আসে। এরপর উপজেলার বাগমারা, মোহনপুর, বাঘা, পবা, দূর্গপুর, তানোরে করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়। তবে কেউ বাসা থেকে আক্রান্ত হয়নি। যারা আক্রান্ত হয়েছে সবাই ঢাকা কিংবা নারায়গগঞ্জ থেকে আসা।
পরে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে সাধারণ রোগী হিসেবে ভর্তি হওয়ার চারদিন পর এক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়। তার সংস্পর্শে আসা সবাইকে চিহ্নিত করে পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আর হাসপাতালের ৪২ জন চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডবয়কে চিহ্নিত করে যারা করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ১৮ জনের নমুনা ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। তবে কেউ আক্রান্ত হয়নি। তার পরেই গত ২৬ এপ্রিল রাজশাহীতে প্রথম করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। তার বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গাওপাড়া গ্রামে। কিন্তু গত বৃহস্পবিার তার রিপোর্টিতে করোনা নেগেটিভ আসায় এখন ল্যাবের সঠিক কার্যকারিতা নিয়ে সঙ্কোশ প্রকাশ করেছে নাম না প্রকাশে কয়েকজন চিকিৎসক। তারা বলেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। এটা তাঁদের অধিকার। আর জরুরি না হলে হাসপাতালে না এসে রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে ফোন করে সেবা নেয়ায় একমত রোগী-স্বজন ও চিকিৎসকরা। এর পরেই ফোনে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে।
অন্যদিকে ফোনে সেবা নেয়াতে চিকিৎসকরাও একটু সমস্যায় পড়েছেন। অনেক সময় রোগী-স্বজন ওষুধের নাম ঠিক মতো বুঝতে না পারায় বানানসহ উল্লেখ করতে হচ্ছে। আর অনেক সময় চিকিৎসকরা রোগী-স্বজনদের জানাচ্ছেন আশে-পাশে ফার্মেসি আছে কি না? এমন সময় ফার্মেসির কর্মরতদের সাথে কথা বলে এভাবেই সেবা দিতে হচ্ছে।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আজিজুল হক আজাদ জানান, ফোনে প্রায় সকল প্রকার রোগীই সেবা নিচ্ছে। সাধারণ প্রাথমিক অবস্থায় মানুষের যে সমস্য হয় এমন রোগীর সংখ্যাই বেশি। আমরা তাদের আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।
লিভার বিভাগের প্রধান ডা. হারুণ আর-রশীদ গণমাধ্যমকে  জানান, আমার কাছে প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ২৫ জনের ফোন আসছে। কিন্তু কিছুদিন আগেও ফোন সংখ্যা কম ছিলো। এখন মানুষ হাসপাতালে কম আসছে। তাই ফোনে সেবা নেয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এটাতে সবাই অনেকটা নিরাপদেও থাকছে।
রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে সেবা নেয়া একজন জানান, একদিন আমি পেট ব্যথায় ভুগতে থাকায় মেডিসিন বিশেষজ্ঞকে ফোন দিয়ে কথা বলি। তিনি সমস্যা শুনে দুইটা ওষুধের নাম লিখে দেয়। আমি সেই ওষুধ খেয়ে এখন সুস্থ আছি।
পুঠিয়ার কান্দা এলাকার  আরেক রোগী জানান, আমার একদিন জ্বর ও সর্দি শুরু হয়। প্যরাসিটামল খেয়ে জ্বর না কমায় হটলাইনে চিকিৎসকের কাছে ফোন দিয়ে পরামর্শ চাই। রামেক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হারুণ আর-রশীদ আমায় কিছু ওষুধের পরামর্শ দেন। দুইদিন পরে আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠি।
নগরীর শিরোইল এলাকার দুই সন্তানের জননী  জানান, এখন বাইরে বের হওয়া সমস্যা। এর মাঝে আমার ছোট ছেলের অসুস্থ হয়। আমি শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বেলালকে ফোন দিলে তিনি খাতা কলম নিতে বলেন এবং সুন্দরভাবে প্রতিটি ওষুধের নাম লিখতে বলেন। বানানগুলোও পরে আবার জেনে নেন। এই সেবা পাওয়ার পরে আমার ছেলে এখন সুস্থ আছে।
এদিকে করোনাভাইরাস নিয়ে তথ্য আদান প্রদান ও প্রাপ্ত তথ্যাদি রেজিস্ট্রারভুক্ত করার জন্য হটলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম ও মোবাইল নম্বর দিয়েছেন তারা।যা জনকল্যাণে নিম্নে বর্ণনা করা হল
ডা. আজিজুল হক আজাদ (০১৭১৫৩৬৭৮৪৪), ডা. জহুরুল হক (০১৭১২০০০৯১৮), ডা. সৈয়দ মাহাবুব আলম।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

নভেম্বর ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« অক্টোবর    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।