-
করোনাভাইরাস: সামাজিক গন্ডী ভেদ করে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
-
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার এখন কমিউনিটি ট্রান্সমিশন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যার জন্য এই ভাইরাস মোকাবেলার কাজ আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।
কোন মহামারির কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের মানে হলো রোগটি সমাজের ভেতরে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ছে যাতে এর উৎস খুঁজে পাওয়া আর সম্ভব হয় না। ফলে রোগকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
বিবিসি বাংলার সাথে এক সাক্ষাৎকারে জাহিদ মালেক বলেন, “ইনিশিয়াল স্টেজ (প্রাথমিক স্তর) পার হয়ে আমরা এখন কমিউনিটি সংক্রমণের মধ্যে রয়েছি।”
তিনি জানান, এর ফলে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলে মৃত্যুর হারও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ১৮ জনকে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হিসেব সনাক্ত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত একদিনে আক্রান্তের হিসেবে এই সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।
-
জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বাংলাদেশ বাংলাদেশের মত জনঘনত্বের একটি দেশে এই কমিউনিটি সংক্রমণ কতখানি বিপজ্জনক হবে,
-
এই প্রশ্নের জবাবে মি. মালেক বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশের জন্য দুর্বল দিক রয়েছে দুটি: এক, ছোট দেশ এবং জনসংখ্যা বেশি। মানুষ খুব কাছাকাছিভাবে বসবাস করে।
আর দ্বিতীয় সমস্যাটি হলো এর প্রবাসী নাগরিক, যাদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস বাংলাদেশে এসেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মি. মালেক জানান, করোনাভাইরাসের মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে মোট নয় লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশী দেশে ফিরে এসেছেন।
সর্বশেষ আক্রান্ত আঠারো ব্যক্তির মধ্যে ১২ জনই ঢাকার বাসিন্দা। এর আগে একদিনে সবচেয়ে বেশি নয় জনের দেহে এই ভাইরাস সনাক্ত করা হয়।
গত কয়েকদিন ধরে পরীক্ষা সংখ্যা বাড়ানোর পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নুতন একজন মারাও গেছেন। এনিয়ে কোভিড-১৯এ মোট ৯ জন মারা গেলেন বাংলাদেশে।
করোনাভাইরাস কমিউনিটি ট্রান্সমিশন পর্যায়ে পৌঁছে গেলে তা এই ভাইরাস মোকাবেলার চেষ্টা ও পরিকল্পনাকে কতখানি ক্ষতিগ্রস্ত করবে, এই প্রশ্নের জবাবে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জাতীয় সমন্বয় কমিটির প্রধান জাহিদ মালেক জানান, ভাইরাস মোকাবেলা ব্যবস্থাপনার আকার বাড়ানো হয়েছে।
“আগে আমরা দুটা-চারটা হাসপাতালের কথা ভাবতাম। এখন আমরা ১০টা হাসপাতালের কথা ভাবছি। আগে প্রতি জেলায় একটা কি দুটা পরীক্ষার সেন্টারের কথা ভাবতাম। এখন সেই সংখ্যাও আমরা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছি।”
-
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছুটিতে থাকা গার্মেন্টস শ্রমিকদের কাজে যোগদানে বাধ্য করার সমালোচনা করেন এবং বলেন যে এর ফলে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে।
“এটা উচিত হয়নি। বিষয়টি আমার মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে নয়,” বলছেন তিনি, “তবে এটা করা ঠিক হয়নি। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যাবে।”
সরকারের আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ৫ই এপ্রিল খোলার কথা থাকায় শনিবার (৪ঠা এপ্রিল) থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের অনেকেই কর্মস্থলের দিকে ফিরতে শুরু করেন।
কিন্তু কোন আগাম সতর্কতা ছাড়াই আবার কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হলে শত শত শ্রমিক নিজ বাড়িতে ফিরতে চাইলেও তারা আটকা পড়ে যান।
সংবাদ সুত্র ঃ বিবিসি বাংলা