চরভদ্রাসনে করোনা প্রতিরোধে ইউএনও’র করুন বার্তা
মো. মনির হোসেন পিন্টু,চরভদ্রাসন(ফরিদপুর)প্রতিনিধি: বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ প্রানঘাতী নোভেল করোনা ভাইরাসে জর্জরিত। এ প্রানঘাতী ভাইরাসের কবল থেকে বাদ পরেনি আমাদের বাংলাদেশও । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মত বাংলাদেশও এ ভাইরাস মোকাবেলায় নানা ধরনের পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাকে লক ডাউন ঘোষনা করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানা ধরনের পদক্ষেপ। সরকারি অফিস, স্কুল, কলেজসহ আরো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। জনগনকে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে নিজ নিজ ঘরে থাকার আহবান জানানো হচ্ছে।
এদিকে, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার মতো ফরিদপুরের চরভদ্রাসন প্রশাসনও এ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ গ্রহন ও বাস্তবায়ন করে চলেছেন। চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা উপজেলায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দিনরাত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা, বিদেশ আগতদের খোজঁখবর নিয়ে বাড়িবাড়ি গিয়ে তাদের হোমকোয়ারেন্টাইনে থাকতে বাধ্য করা, সাধারন জনগনকে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া নিজ ঘরে থাকতে অনুরোধ করা, গরিব, দুঃখী, অসহায় ও হত-দরিদ্র পরিবারে রাতের অন্ধকারে গিয়ে প্রতিনিয়িত খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করাসহ করোনা প্রতিরোধে ও মোকাবেলায় নানা ধরনের কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে চলেছেন তিনি।
ইতিমধ্যে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পরা এ বৈশ্বিক নোভেল করোনা ভাইরাসকে একাত্তরের যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ এক অদৃশ্য যুদ্ধ মোকাবেলায় সকল উপজেলাবাসীকে তার ব্যাক্তিগত ফেইসবুক প্রোফাইল থেকে গতকাল রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সকল উপজেলাবাসীর দৃষ্টি আকর্ষন করে এক করুন বার্তা দিয়েছেন। নিচে তার ফেইসবুক প্রোফাইল থেকে করা পোষ্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
ইউএনও’ জেসমিন সুলতানা- আমরা যারা একাত্তরের অনেক পরে জন্মগ্রহণ করেছি, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারিনি বলে প্রায় সময়ই আপসোস হয়।আমার মনে হয় এই আপসোস উশুল করার সময় এসেছে এখন।সারা পৃথিবীতে এখন প্রানঘাতী করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে।আমরা এমন এক ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছি,যে ভাইরাসকে খালি চোখে দেখা যায়না, যার কোন প্রতিষেধক আবিস্কৃত হয়নি। যদি আমরা বড় কোন ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া এই মহামারী হতে নিষ্কৃতি পাই,তবে বেচে থাকলে আমি গর্বভরে বলতে পারব- ভাইরাসের বিরুদ্ধে সারা পৃথিবীর এই যুদ্ধে আমিও ছিলাম একজন যোদ্ধা।আমি আমার দেশের মানুষকে করোনা ভাইরাস এবং অনাহারে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষার জন্য ঝাপিয়ে পড়েছিলাম ভয়ংকর এক যুদ্ধে।
আপনিও কি আমার মত করে গর্বভরে বলতে পারবেন এ কথা? সরকার আমাকে যে দ্বায়িত্ব দিয়েছে সে দ্বায়িত্ব পালন ছাড়া দেশের সচেতন একজন নাগরিক হিসেবে আপনিও পারেন এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিতে।এজন্য আপনাকে যে ৩ টি কাজ করতে হবে, সেগুলো হচ্ছে-
১/ ঘরে থাকা
২/ঘরে থাকা এবং
৩/ ঘরে থাকা
কষ্ট করে হলেও কিছুদিনের জন্য ঘরে থাকুন,বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোন,সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখুন,প্রয়োজন অনুযায়ী মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করুন।
কিছুদিনের জন্য আপনার এই ঘরে থাকাটাই হবে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ।কারণ আমরা সবাই এখন জানি, বাহক ছাড়া করোনা ভাইরাস একস্থান হতে অন্যস্থানে স্থানান্তর হতে পারেনা এবং এই ভাইরাসকে বহন করে মানুষ।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পৃথিবীতে ছিলাম না,তাই অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারিনি।এখন যে যুদ্ধে নেমেছে সারা পৃথিবী, আসুন আমি আপনি সবাই ঘরে থাকার মাধ্যমে সে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি।সবাই মিলে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে আমরা জিতবই ইনশাআল্লাহ। আবার আমাদের পৃথিবী হয়ে উঠবে প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর ভালোবাসাময় এক পৃথিবী।