করোনা নিয়ে কোন চিন্তা নেই ফরিদপুরের জনগণের কেনা কাটা চলছে উৎসব মুখর পরিবেশে
জিল্লুর রহমান রাসেল, ফরিদপুর:
আগামীকাল পবিত্র শবে বরাত। শবে বরাতের আগের রাতেই মানুষ ইবাদত বন্দেগী করে থাকেন। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে স্তব্ধ গোটা বিশ্ব।করোনার সংক্রমন রোধে সকল প্রকার সামাজিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে।বাঙালি উৎসব মুখর পরিবেশে এই শবে বরাত পালন করে থাকে।কিন্তু এবার বিষয়টা ভিন্ন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে জনসমাগম সম্পুর্ন নিষিদ্ধ, তাই এবার ইবাদত বন্দেগী যার যার ঘরেই।
তাই বলে কি হালুয়া, রুটি, গোশত এসব খাওয়া থেমে থাকবে? দরকার হয় করোনা ভাইরাস সাথে নিয়ে আসবে কিন্তু হালুয়া রুটি খাওয়া বন্ধ করা যাবে না। অন্তত আজকের বাজারের চিত্র দেখে তাই মনে হলো।
সরেজমিনে দেখা গেল জেলা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে হাটে বসেছে কিছু দোকান আর জনগণের ভীড়ে সেখান দিয়ে হাটাই দায়।আরও বেশি ভয়ঙ্কর চিত্র হাজী শরিয়তুল্লাহ বাজারের, সেখানে গিয়ে মনে হলো শহরের অর্ধেক জনগণ এখানেই। একজন ক্রেতাকে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, ভাই এই দুর্যোগে আপনারা কেন এভাবে বাহিরে এসেছেন? সরকার সকলকে ঘরে থাকতে বলছে, জনসমাগম করতে নিষেধ করছে আর আপনারা সে কাজ গুলোই বেশি বেশি করছেন, বিপদে পড়লে আপনারাই সরকারকে গালি গালাজ করবেন। উত্তরে তিনি বললেন আজ শবে বরাত, তাই বাজার করতে এসেছি।
আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করলে সকলেই একই উত্তর দেয়।এদিকে ঘোষণা হয়েছে সকাল ৭ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দোকান খোলা থাকবে। ১ টার পরে ঔষধের দোকান ব্যাতিত সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এই নির্দেশনাকে বাস্তবায়ন করতে মাঠে রয়েছে পুলিশ ও সেনা সদস্যদের যৌথ বাহিনী। যার নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা প্রশাসনের দুজন নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ জাকির হোসেন ও আফরোজ শাহিন খসরু।
তারা বিক্রেতাদের বেলা ১ টার মধ্যে দোকান বন্ধ করার নির্দেশ দেন এবং ক্রেতাদের খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ঘরেই থাকার আহ্বান জানান। ১ টার পরে কোন দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে শাস্তি প্রদান করা হবে বলে সকলকে সতর্ক করেন।
এ বিষয়ে আফরোজ শাহিন খসরু বলেন, প্রশাসনের নির্দেশ ১ টার পরে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে, শুধু ঔষধের দোকান খোলা রাখা যাবে। এই ঘোষণা গতকাল থেকেই কার্যকর হয়েছে। আজ ১ টার পর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় শহরের চকবাজার এলাকার বাবুল ব্রাদার্সকে ৫০০০ টাকা, ইসলামীয়া বেকারিকে ৫০০০ টাকা ও একটি মোবাইলের দোকানকে ২০০০ টাকা মোট ১২০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এরপরও যদি আইন অমান্য করে তাহলে আরও বড় ধরনের শাস্তি দেওয়া হতে পারে।
এদিকে গতকাল পুলিশ সুপার মোঃ আলীমুজ্জামান বলেন,করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা লক্ষে ফরিদপুর জেলায় আজ থেকে কোন কিছুই প্রবেশ করতে পারবে না এবং এ জেলা থেকে কোন কিছুই বাহিরে যেতে পারবে না। এ জন্য প্রতিটি এন্ট্রি পয়েন্টে চেক পোষ্ট বসানো হয়েছে।