• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১০ই জুন, ২০২৩ ইং
Mujib Borsho
Mujib Borsho
রামেক হাসপাতালের হিমঘরে এন্ড্রু কিশোরের পাশে স্বজনের ফেলে যাওয়া আজাদ

কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের পরকালে পাড়ি জমানো দু’দিন হলো। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের হিমঘরে তিনি অপেক্ষা করছেন দুই সন্তানের জন্য। এই সময় তার পাশে আছেন নওগাঁর পত্মীতলা উপজেলার জামগ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক আজাদ আলী। তিনি মারা গেছেন গত শনিবার।

এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ একনজর দেখার জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে সাত হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আসছেন সন্তানেরা। কিন্তু পাশের জেলা থেকে আজাদ আলীর জন্য কেউ আসছেন না। তিনি মারা গেছেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে। রামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আজাদ আলী গত শনিবার রাতে মারা যান। করোনা আতঙ্কে ভোররাতে ভাই এবং শ্বাশুড়ি তার মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান।

সেদিন থেকে তাদের দুজনের মুঠোফোন নম্বর দুটি বন্ধই পাওয়া যাচ্ছিল। শত চেষ্টা করেও পুলিশ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। পরে আজাদ আলীর মরদেহ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। নিঃসঙ্গ আজাদ আলীর মরদেহের পাশে সোমবার রাতে একই ফ্রিজে রাখা হয় এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ। এখন হিমঘরে এ দুটি মরদেহই আছে।

রামেক হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজাদ আলী করোনায় মারা গেলেও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা তার মরদেহ জীবাণুমুক্ত করেছে। এরপর ফ্রিজে মরদেহ রাখা হয়েছে। পরে ফ্রিজের অন্য একটি ড্রয়ারে এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ রাখা হয়। এখন ফ্রিজে এ দুটি মরদেহ আছে।

প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোরের জন্য কাঁদছে গোটা বাংলাদেশ। কিন্তু গ্রাম্য চিকিৎসক আজাদ আলীর মরদেহটিই নিতে আসছেন না কেউ। ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস দম ফুরাইলেই ঠুস’ এন্ড্রু কিশোরের কণ্ঠে গাওয়া এ গানের অর্থটি যেন পরিপূর্ণভাবেই ফুটে উঠেছে আজাদ আলীর ক্ষেত্রে।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বুধবার দুপুরে আজাদ আলীর বড় ভাই রাহাত আলী জানালেন, তারা চার ভাই, চার বোন। আজাদ আলী সবার ছোট। বোনদের বিয়ে হয়ে গেছে। তারা চার ভাই একই বাড়িতে থাকতেন। আজাদ স্ত্রী এবং চার বছরের এক ছেলে ও আট বছরের এক মেয়ে রেখে গেছেন।

মরদেহ না নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেছিলেন, লাশ আনলে রাতের মধ্যেই দাফন করতে হবে। সেটা সম্ভব না। তাই হাসপাতালে কোয়ান্টামকে বলেছিলাম যেন লাশ রাজশাহীতেই দাফন করে দেয়া হয়। আমি জানি লাশ সেখানে দাফন হয়ে গেছে। এখনও দাফন হয়নি সেটা জানি না। এখন লাশ নেয়ার সুযোগ থাকলে তারা নেবেন।

রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, লাশ হিমঘরে রেখে আমরা অপেক্ষা করছি। তারা না এলে পুলিশ লাশের দায়িত্ব নেবে এবং কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দাফন করবে।

উল্লেখ্য উপমহাদেশের  কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের বোনজামাই প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস জানিয়েছেন, এন্ড্রু কিশোরের ছেলে সপ্তক বুধবার রাতে অস্ট্রেলিয়া থেকে ঢাকায় আসবেন। আর মেয়ে সপ্তক আসবেন ১৩ জুলাই রাতে। আগামী ১৫ জুলাই এন্ড্রু কিশোরের শেষকৃত্যের সাম্ভাব্য দিন ধরে রাখা হয়েছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

জুন ২০২৩
শনিরবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্র
« মে  
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।