বিদ্যুতের মেইন লাইন ঘেষে অপরিকল্পিত বিল্ডিং ভবন নির্মানের জ্বের
চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি :-
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদরে বিএস ডাঙ্গী গ্রামের মোঃ মোশারফ হোসেন মাষ্টারের একমাত্র শিশু পুত্র মোহাম্মদ আলী (১১) গত ক’দিন আগে প্রতিবেশী জীবন মোল্যার ছেলে আঃ কুদ্দুস মোল্যার নির্মানাধীন বিল্ডিং ভবন ঘেষে অরক্ষিত বৈদ্যুতের মেইন লাইনের তারে জড়িয়ে মুমূর্ষ অবস্হায় চিকিৎসাধীন থাকার পর গত সোমবার শিশুটির বাম হাতের অর্ধাংশ ও দু’ পায়ের তিনটি আঙ্গুলী কেটে ফেলা হয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর বিকেলে শিশুটি সাথীদের নিয়ে নির্মানাধীন বিল্ডিং ভবনের ৩য় তলায় খেলাচ্ছলে বিদ্যুৎ লাইনের মেইন তারের সাথে হাতের ছোয়া লেগে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাজধানী ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্হায় শিশুটির বাম হাতের অর্ধাংশ এবং বাম পায়ের দু’টি আঙ্গুল সহ ডান পায়ের একটি আঙ্গুল কেটে ফেলা হয়েছে। শিশুটি উপজেলা সদরের হাজীডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র। উক্ত স্কুলে শিশুটির পিতা মোঃ মোশারফ হোসেন একজন সহকারি শিক্ষক।
ক্ষ তিগ্রস্হ শিশুটির পিতা ও তার পরিবার জানায়, নির্মানাধীন বিল্ডিং ভবনের মালিকরা অর্থবিত্ত সম্পন্ন এলাকার প্রভাবশালী। কোনো অনুমোদন ছাড়াই সম্পূর্ন স্বেচ্ছাচারীতার মাধ্যমে তারা বৈদ্যতিক খুটির মেইন লাইন ঘেষে বিল্ডিং ভবন নির্মানাধীন রেখেছেন। এমনকি বিল্ডিং ভবনে ঢোকার সিড়ি পথ না আটকিয়ে তারা নির্মানাধীন কাজ অব্যাহত রেখেছে। ফলে সিড়িপথ খোলা পেয়ে শিশুরা ভবনের তয় তলায় উঠে খেলাচ্ছলে বিদ্যুতের মেইন লাইনের তারে জড়িয়ে শিশু মোহাম্মদ আলী জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে। এরপরও ওই প্রভাবশালী ভবন মালিকরা কোনো তোয়াক্কা না করে এবং বিদ্যুতের মেইন লাইন নিরাপদ দুরত্ব না রেখে ভবন নির্মান করে চলেছে।
এ ব্যপারে মঙ্গলবার উক্ত বিল্ডিং ভবন মালিক আঃ কুদ্দুস মোল্যা জানায়, ” আমি জিসান আহাম্মেদের কাছ থেকে বিল্ডিং ভবন নির্মানের অনুমোদন এনেছি এবং উপজেলা পল্লি বিদ্যুৎ অফিসে দরখাস্ত করেছি”।
আর উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বাঁধন জানান, ” উক্ত ভবন নির্মানের জন্য আমাদের কাছে কেউ কোনো লিখিত আবেদন করে নাই বা আমরা কাউকে অনুমোদন দেই নাই। তিনি আরও বলেন, জিসান আহাম্মেদ নামক কোনো লোক আমার দপ্তরে কর্মরত নাই। উপজেলা ভবন নির্মান কমিটির সভাপতি চেয়ারম্যান মহোদয় এবং সেক্রেটারী হচ্ছে উপ-প্রকৌশলী গোলাম মোর্শেদ, উক্ত ভবন নির্মান কমিটির কাছে কেউ আবেদন করে নাই বা ভবন নির্মান কমিটি কোনো অনুমোদন দেন নাই”। একই দিন উপজেলা পল্লি বিদ্যুৎ ইনচার্জ মফিজ উদ্দিন জানান, ” আমাদের কাউকে অবগত না করে সম্পূর্ন অপরিকল্পিতভাবে বাড়ীওয়ালা খাম-খেয়ালীপনা ও স্বেচ্ছাচারীতা করে বিদ্যুতের ফরফরটি লাইন ঘেষে বিল্ডিং ভবনটি নির্মানাধীন রেখেছেন। এতে ক’দিন আগে একটি শিশুর জীবন সর্বনাশ হয়েছে, ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে”।