পাবনার বেড়ায় অবৈধ ক্লিনিকে সিজার অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যু,নির্বিকার উপজেলা প্রশাসন
নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা:পাবনার বেড়ায় দি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড ক্লিনিকে সিজার অপারেশনে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সাথী খাতুন(২২) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে অজানা কারনে উপজেলা প্রশাসন রয়েছেন নির্বিকার। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে ছাড়াও সচেতন মহলেও উঠেছে সমালোচনার তুমুল ঝড়। নিহত সাথি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার চৌহানী গ্রামের জহুরুল ইসলামের স্ত্রী।
জানা যায়,বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ কর্মরত ডাঃ শারমিন সুলতানা এ সিজার অপারেশন করেছেন। আর এ্যানেসথিসিয়া করেছেন ডাক্তার খ.ম ইসমাইল হোসেন শাওন।নিহতের স্বামী জহুরুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রী-সন্তান সম্ভ্যবা হওয়ায় বেড়ার দি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড ক্লিনিকে বৃহঃবার (০৯ এপ্রিল) ভর্তি করি। ক্লিনিকের মালিক মিসাইল আমার স্ত্রীর দ্রুত সিজার করার জন্য জোড়াজুড়ি করে। দ্রুত সিজার করা না হলে মা ও সন্তানকে বাঁচানো যাবে না বলে ভয় ভিতি দেখান। আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানের কথা ভেবে সিজার করাতে রাজি হয়। সিজার করার পর আমার স্ত্রী’র অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অবস্থার অবনতি হলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ এনায়েতপুর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। পরে এনায়েতপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি মারা যান। তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, এই ক্লিনিকের চিকিৎসক, নার্স ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমার স্ত্রীর প্রাণ গেল। তাতে সহযোগীতা পাননি উপজেলা প্রশাসনের।এখন একদিকে তিনি স্ত্রী বিয়োগের শোকে কাতর, অন্যদিকে সদ্য নবজাতককে নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। ডাঃ শারমীন সুলতানা বলেন, সিজার করার পর রক্তের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। রোগীর স্বজনরা রক্তের ব্যাবস্থা করতে না পারায় আমরা এনায়েতপুর হাসপাতালে নেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করি।তিনি আরও বলেন, পাবনা সদর হাসপাতালের আরএমও ডাঃ আনান সাহেবের ক্লিনিক এটি। তার অনুরোধে ও মানবিক কারনে আমি সিজার করেছি।এ্যানেসথিসিয়া ডাক্তার খ.ম ইসমাইল হোসেন শাওন বলেন,ডাঃ শারমিন সুলতানা ম্যাডাম আমাকে অনুরোধ করায় আমি সেখানে গিয়ে এনেসথেসিয়া করেছি।
বিশ্বস্ত সুত্র জানায়,ক্লিনিকটি গত দেড় বছর যাবত অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে রোগী ভর্তি ও অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
কোন সনদ ছাড়াই এনেসথেসিয়া ও অপারেশন করেন ইসমাইল। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে এর বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করেনি প্রশাসন। পাবনার সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মেহেদী ইকবাল জানান, অনুমতি না নিয়ে কেউ কোন ক্লিনিক বা হাসপাতাল পরিচালনা করতে পারবে না। বেড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সরদার মোহাম্মদ মিলন মাহমুদ জানান,
আমি বিষয়টি শুনেছি এবং ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি বেড়া ইউএনও সাহেবকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তিনি আমার অনুরোধে সাড়া দেননি। প্রশাসন ছাড়া আমি কিভাবে ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।
একাধিক সুত্র জানায়, থানা পুলিশ ও ইউএনও কে ম্যানেজ করেই চলে ক্লিনিক মালিকের রমরমা ব্যাবসা। এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনামের ০১৭৬২-৬২১০২৩ নাম্বারে বারংবার কল করলে তিনি রিসিভ করেনি ।