• ঢাকা
  • বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
বাংলাদেশ বিমানে ধ্বস

ছবি- বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স

বাংলাদেশ বিমানে ধ্বস! 

নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯)-এর কারণে সারা বিশ্বের মতো দেশের অ্যাভিয়েশন খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বাংলাদেশ থেকে দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইট বাতিলের সংখ্যা বেড়েছে।

একই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞা ও যাত্রী সংকটের কারণে ফ্লাইটের সংখ্যাও কমাচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো।

পরিস্থিতি চলমান থাকলে আর্থিক সংকটে পড়াসহ আরও নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করছেন এই খাত সংশ্লিষ্টরা।

করোনা ভাইরাসের জেরে ১০টি রুটে সপ্তাহে ৭৪টি ফ্লাইট কমিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কুয়ালালামপুর, কাঠমান্ডু, কলকাতা, দিল্লি, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, দোহা, জেদ্দা, মদিনা, কুয়েত; এই দশটি গন্তব্যে এতদিন সপ্তাহে বিমানের ১৪২টি ফ্লাইট চালু ছিল।

এয়ারলাইন্সগুলোর টিকিট বিক্রি করা ট্রাভেল এজেন্ট ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন। কারণ, ফ্লাইট বন্ধ হলে বা যাত্রী কমে গেলে তাদের ব্যবসা থেমে যায়।

বাংলাদেশে এ ধরনের প্রায় তিন হাজারের বেশি এজেন্ট রয়েছেন, বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে এই সেক্টরে।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর কোষাধ্যক্ষ মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে এজেন্টগুলোর ব্যবসায় ধস নেমেছে।

এই পরিস্থিতি চলমান থাকলে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকাটাই প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে। ব্যবসা না থাকলে অফিস পরিচালনা ও কর্মীদের বেতন দেওয়া সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী কমানো শুরু করেছে। বিকল্প সমাধান না পেলে এই খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমে যাত্রীরা যাতায়াত করেন। এক্ষেত্রে সব চেয়ে বেশি যাত্রী চলাচল করেন ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে।

গত ডিসেম্বরের আগে এই বিমানবন্দরে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতেন। দেশি-বিদেশি ২৮টি এয়ারলাইন্স শাহজালালে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ২০১৮ সালে শাহজালাল বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক যাত্রী ছিল ৭০ লাখ ৭৪ হাজার ৯২৪ জন। ২০১৯ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ লাখ ১৬ হাজার ১২৫ জন।

তবে করোনার প্রভাবে গত দুই মাসে কী পরিমাণ যাত্রী কমেছে, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের প্রকোপের আগের মাসে ২০-৩০ হাজার মানুষ এই বিমানবন্দর ব্যবহার করতেন। এখন মনে হয় ২০ হাজারের নিচে নেমে এসেছে।’

জানা যায়, বিভিন্ন দেশ তাদের দেশে বাংলাদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এরমধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত ও মালদ্বীপ। এ কারণে এসব রুটে চলাচলকারী এয়ারলাইন্সগুলোকে বিপত্তিতে পড়তে হয়েছে। সর্বশেষ ৯ মার্চ বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের নাগরিকদের কাতারে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

কাতার এয়ারওয়েজসহ বাংলাদেশি তিনটি এয়ারলাইন্স এই রুটে যাত্রী পরিবহন করতো। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে কাতারে সব ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

৯ মার্চ মালদ্বীপ সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি জানিয়েছে, ১৪ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ভ্রমণের ইতিহাস থাকা কাউকে মালদ্বীপে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

৭ মার্চ কুয়েত তাদের দেশে এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশিদের বিমান চলাচল স্থগিত করেছে। এই রুটে সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করতো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

কুয়েতের স্থগিতাদেশের কারণে দুটি ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

এছাড়াও বাংলাদেশ ফ্লাইট পরিচালনা করে কুয়েত এয়ারলাইন্স। এই এয়ারলাইন্সটি বাংলাদেশ, মিসর, লেবানন, সিরিয়া, ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায় ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত করেছে।

বাংলাদেশ থেকে অনেক যাত্রী কুয়েত এয়ারলাইন্স ব্যবহার করে এসব গন্তব্যে যাতায়াত করতেন। ফলে তাদেরও পড়তে হয়েছে বিপত্তিতে।

এছাড়াও ২৭ ফেব্রুয়ারি বিদেশিদের ওমরাহ পালন সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে সৌদি আরব। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের সৌদি আরবগামী যাত্রীদের বড় অংশই ছিল ওমরাহ-যাত্রী।

এর বাইরেও এমিরেটস এবং স্পাইস জেটও বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ-যাত্রী পরিবহন করতো। সৌদি আরবের সাময়িক স্থগিতাদেশের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে এসব এয়ারলাইন্সকে।

সতর্কতার অংশ হিসেবে ইতালির সঙ্গে ইতোমধ্যে বিমান চলাচল স্থগিত করেছে কাতার এয়ারওয়েজ। এছাড়াও থাই এয়ারওয়েজ, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স, চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইটের সংখ্যা কমিয়েছে।

যাত্রী সংকটের কারণে ঢাকা-গুয়াংজু রুটে সপ্তাহে চারটি ফ্লাইট কমিয়েছে বাংলাদেশের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোকাব্বির হোসেন বলেন, ‘করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় যাত্রী কমে গেছে। তাই ১০ রুটের ফ্লাইট সংখ্যা ১৪২টি থেকে ৭৪টি কমিয়ে এখন ৬৮টি চালু রাখা হয়েছে।

৯ মার্চ থেকে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে, পরিস্থিতির পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকবে। কোনও যাত্রী যদি এসব ফ্লাইটের টিকিট কেটে থাকেন, তবে তারা অন্য ফ্লাইটে যেতে বা টাকা রিফান্ড নিতে পারবেন।’

 

সংবাদ সুত্র ঃ বাংলা ট্রিবিউন

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।