সাংবাদিক শাহীন রেজার প্রচেষ্টায় কুষ্টিয়া বালিয়াপাড়ার
মোঃ চাঁদ আলী,কুষ্টিয়া প্রতিনিধি॥ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশের ন্যায় কুষ্টিয়াও চলছে অঘোষিত লকডাউন। আর এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে কুষ্টিয়াসহ সমগ্র দেশের শ্রমজীবি মানুষ। সাংবাদিক শাহীন রেজার অনুরোধে বালিয়াপাড়ার ২২টি অসচ্ছল, দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়ালেন কুষ্টিয়ার সুযোগ্য পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত ও কুষ্টিয়া সদর ও উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত ত্রান থেকে আজ সেই ২২টি পরিবারের বাড়ীতে-বাড়ীতে ভ্যানযোগে পৌছে দিলেন সাংবাদিক ও শিক্ষক শাহীন রেজা এবং আলামপুর বালিয়াপাড়া কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক।
ত্রান সামগ্রী পাওয়া ও বিতরনের বিষয়ে সাংবাদিক শাহীন রেজার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯’ করোনা পরিস্থিতিতে আমি লোক মুখে জানতে পারি যে, আমাদের গ্রামবাসী না খেয়ে গৃহবন্দি অবস্থায় দিন যাপন করছে এরূপ পরিস্থিতির সংবাদ পাওয়া মাত্রই ছুটে যাই গ্রামে, আমার নিজ গ্রামের পাড়া মহল্লায় ঘুরে-ঘুরে দেখি যে প্রকৃত অসহায় শ্রমজীবি মানুষেরা না খেয়ে দিন পার করছে। এ সকল অসহায় মানুষেরা কখনো ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, ভিজিএফ এর চাউলসহ বিভিন্ন ধরনের ভাতা তারা পান নাই। এলাকাবসীর দু:খ কষ্টের সহযোদ্ধা না হতে পেরে নিজের বিবেককে প্রচন্ডরকম বাঁধা দিচ্ছিল মর্মে যে, আজ যদি আমার ধন সম্পত্তি থাকত তাহলে এই মুহুর্তে এই সকল অসহায়দের মাঝে বিকিয়ে দিতাম। কিন্ত আমি নিজেই একজন অসহায় মানুষ, আমার দেওয়ার সাধ থাকলেও সাধ্য নেই।
তিনি আরো বলেন, আমি কুষ্টিয়া শহরের বাসায় ফিরে ঐ সকল অসচ্ছল ব্যক্তিদের মধ্য থেকে প্রকৃত অসহায়দের ২২জনের একটি নামের তালিকা তৈরী করে গত ৬ এপ্রিল তারিখ রাতে কুষ্টিয়ার সুযোগ্য পুলিশ সুপার এ এম তানভীর আরাফাতের ম্যছেঞ্জারে সেন্ড করি। তিনি তাৎক্ষনিতভাবে আমাকে রিপ্লে দিলেন যে, আপনি আতা ভাইয়ের সাথে কথা বলেছেন ? আমি উত্তর দিলাম না, আমার উত্তর পাওয়ার সাথে সাথে সাথেই উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা ভাইয়ের সাথে কথা বলে আমাকে পূণ:রায় রিপ্লে দিলেন যে, আপনি এখনি উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা ভাইকে ফোন করেন আমি বলে দিয়েছি। পুলিশ সুপার মহোদয় যে এত দ্রুত কাজটি করে ফেলবেন তা আমি কখনোই ধারণাই করতে পারি নাই। তখন রাত বাজে প্রায় সাড়ে দশটা।
এসপি’র কথামত উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা ভাইয়ের মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি বলেন, উক্ত ২২ জনের তালিকাটি বালিয়াপাড়া কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিকীর হাতে পৌঁছে দেন আমি দেখছি বিষয়টা। অনেক কারিকুলাম শেষে গত ১৩ তারিখ বিকালে উপজেলা অফিস থেকে ২২ জনের বরাদ্দকৃত খাদ্য সামগ্রী হাতে পেয়ে আজ ১লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে কাঠ ফাঁটা দুপুরে বালিয়াপাড়া গ্রামের নিরন্ন মানুষের বাড়ীতে-বাড়ীতে পৌছে দিলাম আমি ও অধ্যক্ষ। ২২টি পরিবার খাদ্য সামগ্রী হাতে পেয়ে তারা যে কি খুশী আমি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবোনা। খাদ্য সামগ্রী বিতরনের ঐ মুহুর্তগুলি আমি কখনোই ভুলতে পারবো না, তখন আমার একটা কথাই বাংরবার মনে হচ্ছিল যে, আমার মত আরো কিছু ব্যক্তি যদি এই গরীব দুখীদের পাশে দাড়াতো তাহলে এই দূর্দিনে সকলেই খেয়ে পরে বাঁচত। আমাদের গ্রামে আরেকজন ব্যক্তি গরীব দুখীদের সেবা করে যাচ্ছেন তিনি আমার এক বড় ভাই টিপন মৃধা সে এটি কলেজের অধ্যক্ষ বর্তমানে তার সাথে সমন্বয় করে আমি কাজ করে যাচ্ছি।
শাহীন রেজা আরও বলেন, আগামী ৪/৫ দিন পর বালিয়াপাড়া গ্রামে আরও কিছু নিরন্ন মানুষকে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করবো, সে ব্যবস্থা ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। তিনি গ্রামের ধর্ণাঢ্য গ্রামবাসী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এই সকল গ্রামবাসীর পাশে এসে দাড়ান এবং তাদেরকে বাঁচান।
বালিয়াপাড়া গ্রামের নিরন্ন মানুষের পাশে দাড়ানো ব্যক্তি দুজন একজন কুষ্টিয়ার সুযোগ্য পুলিশ সুপার ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সেইসাথে ধন্যবাদ জানাই সাংবাদিশ ও শিক্ষক শাহীন রেজাকে তিনি যে এই মহতী উদ্দ্যোগ হাতে নিয়ে গ্রামের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তাকেও জানাই হাজার-হাজার সালাম শ্রদ্ধা।