কুষ্টিয়ায় কুমারখালীর নন্দলালপুর ইউপির ১২ বস্তা ত্রানের চাউল চুরির মূল হোতা ব্লক সুপারভাইজার শামীমা ইয়াসমিন ও শরিফুল মেম্বার
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি ॥
কুষ্টিয়ায় কুমারখালীর নন্দলাল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের এলোঙ্গী পাড়ার শরিফুল মেম্বারের বাড়ি থেকে ত্রানের ১২ বস্তা চাউল করা হয় বলে জানা গেছে। গত সোমবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমারখালী উপজেলার পিআইও মাহাম্মুদ ঊল্লাহ ও সমাজ সেবা অফিসার মহাম্মাদ আলীর নেতৃত্বে শরিফুল মেম্বারের বাড়ি থেকে ত্রানের ১২ বস্তা চাউল করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলি প্রতিবেদককে জানিয়েছে।
উক্ত ওয়ার্ডের স্থানীয় জনগন জানান, অসহায় গরীব দুখীদের মাঝে বরাদ্দকৃত চাউল বিতরন না করে ব্লক সুপারভাইজার শামীমা ইয়াসমিনের সহযোগীতায় ১২ বস্তা চাউল শরিফুল মেম্বার তার সহযোগীদের নিয়ে অতি গোপনে সরিয়ে তার নিজ বাড়ীতে রেখে দেয়।
চাউল বিতরনের সময় ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক নিয়োগকৃত এক দফাদার উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ব্লক সুপারভাইজার শামীমা ইয়াসমিনের কানে-কানে শরীফুল মেম্বার কথা বলার পরই ১২ বস্তা চাউল গায়েব করে দেয়। ভূক্তভোগীরা এটাও বলেন, মেম্বারকে তাদের বরাদ্দের কথা বললে তিনি মেম্বার তাদেরকে বলেন এবার আপনাদের নামে কোন বারাদ্দ আসেনি আগামীতে আসলে তখন দেখব, তবে ঐ মেম্বার ঐ সকল ভুক্তভোগীদের আইডি কার্ডের কপি আগেই নিয়ে রেখেছিল। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে উর্ধতন কর্তপক্ষের নজরে আসলে আজকে এই অভিজান চালালেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর। হাতে নাতে তার বাড়ী থেকে উদ্ধারকৃত ত্রানের চাউল আটক হলে বিষয়টি জানাজানি হলে কুমারখালী উপজেলার পিআইও মাহাম্মুদ ঊল্লাহ ও সমাজ সেবা অফিসার মহাম্মাদ আলীর কাছে চোরাইকৃত ত্রানের চাউল ফেরত দেন বর্তমানে উক্ত ১২ বস্তা ত্রানে চাউল ইউনিয়নের রক্ষিত আছে বলে চেয়ারম্যান নওশের আলী জানান। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে তদবির করে যাচ্ছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
উক্ত এলাকার গরীব দুখী মানুষের দাবি যে শরিফুল মেম্বার দিনের বেলায় কি ভাবে চাউল চুরি করে নিয়ে যায় সবার চোঁখের সামনে দিয়ে। এ বিষয়ে ওখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, চাউল বিতরনের সময় যেখানে তার সহযোগীরা উপস্থিত ছিলেন, তাদের হাতে হাতে বস্তাগুলি ধরিয়ে দেয় এবং পরবর্তীতে সেগুলো চলে যায় তার নিজ বাড়ীতে। এ বিষয়টি নিয়ে সমাজ সেবা অফিসার মহাম্মদ আলীর সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি জানান, মেম্বারের বাড়ী থেকে যে ১২ বস্তা চাউল উদ্ধার করা হয়েছে সঠিক, তবে আমি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবো।
এ বিষয়ে গতকাল সকালে ইউপি অফিসে সরেজমিনে গিয়ে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বললে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি সত্য এবং আটককৃত চাউল এখন ইউনিয়ন পরিষদে মজুদ করে রেখে গেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদ্বয়। মেম্বার শরিফুল বর্তমানে চাউলগুলি বিতরনের জন্য আমার উপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছেন। তিনি আরে বলেন ব্লক সুপারভাইজার শামীমা ইয়াসমিন চাল চুরির বিষয়ে আমাকে মোবাইলে জানিয়েছেন তবে লিখিত কোন অভিযোগ এখনো আমাকে প্রদান করেন নাই। চুরি হওয়া চাউল ২৪ ঘন্টার মধ্যে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার নিয়ম থাকলেও ব্লক সুপাভাইজার এখনো পর্যন্ত চেয়াম্যানের কাছে কোন প্রকার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নাই সে কারনে উর্ধতন কর্র্তপক্ষকে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছি না বলে চেয়ারম্যান নওশের আলী বলেন।
এদিকে ব্লক সুপারভাইজার শামীমা ইয়াসমিন এর সাথে কথা বললে তিনি সম্পূর্ন অস্বীকার করছেন যে, এ বিষটি আমি জানিনা, অথচ তিনি মুঠোফোনে চেয়ারম্যান নওশের আলীর কাছে স্বীকার করেন। এতেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, ব্লক সুপারভাইজার শামীমা ইয়াসমিন ও শরীফুল মেম্বার দুজনেই প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। এলাকাবাসী চাল চোর শরিফুল মেম্বার ও ব্লক সুপারভাইজার শামীমা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ফুলে ফেঁপে উঠে বলেন তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।