মনির মোল্যা, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সালথায় একটি ব্রিজের দুইপাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। যে কারণে ব্রিজের ওপর দিয়ে চলছে না কোনো ধরণের যানবাহন। গত পাঁচ বছর ধরে ব্রিজটি এভাবে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ফলে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২৭ মিটার ব্রিজটি স্থানীয় ৭টি গ্রামের জনসধারণের জন্য দশ পয়সার কোনো উপকারে আসছে না। বরং ব্রিজের সংযোগ সড়ক এখন স্থানীয় সকলের পথে কাটা হয়ে রয়েছে। সংযোগ সড়কের বেহাল দশা নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিকবার প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও তা আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গট্টি ও আটঘর ইউনিয়নের সীমান্তে দিয়ে বয়ে গেছে মালঞ্চ বিল। বিলের উত্তর পাড়ে অবস্থান করছে আটঘর ইউনিয়নের খোয়াড়, গোয়ালপাড়া, সেনহাটি ও ভাবুকদিয়া গ্রাম। আর দক্ষিন পাড়ে অবস্থান করছে সিংহপ্রতাব, নারানদিয়া ও মেম্বার গট্টি গ্রাম। এই ৭টি গ্রামে বসবাসরত বাসিন্দারা বেশিরভাগ কৃষক।
স্থানীয় বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আশরাফুল ইসলাম মুনাম বলেন, দুই ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য ১২ বছর আগে বুড়িদিয়া স্কুলের পিছনে মালঞ্চ বিলের ওপর ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই ব্রিজটি নির্মাণ করে সরকার। ব্রিজের দু’পাশে মাটি কেটে নির্মাণ করা হয় কাচা রাস্তা। পরে ওই রাস্তার ওপর ইট বিছিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচলে উপযোগী করে দেওয়া হয়।
ফলে এসব গ্রামের কৃষকরা তাদের কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে অনেক সুবিধা হয়। কিন্তু গত পাঁচ বছর আগে বিলের পানির চাপে ব্রিজটির দু’পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে ধসে যায়। এরপর থেকে ব্রিজের ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনো লাভ হয়নি।
স্থানীয় কৃষক সোহেল মাতুব্বর ও ইলিয়াস হোসেন বলেন, সারাজীবন আমরা পাট-ধান ও পেঁয়াজ মাথায় করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করেছি। মালঞ্চ বিলের ওপর ব্রিজটি হওয়ায় আমরা অনেক খুশি হয়েছিলাম। ব্রিজ হওয়ার পর কয়েক বছর মাথায় করে নিয়ে বাজারে ফসল বিক্রি করতে হয়নি। ভ্যান, নসিমন ও গাড়িতে করে কৃষিপণ্য বাজারজাত করেছি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ব্রিজের দু’পাশের সড়ক ভেঙে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই বর্তমানে সেই আগের মতো ফসল মাথায় করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদের। যে কারণে ব্রিজটি আমাদের দশ পয়সার কোনো কাজে লাগছে না। আমরা ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়ক দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।
সালথা উপজেলা প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া বলেন, ব্রিজটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক সংস্কার জরুরী। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সংস্কার করার জন্য। ইতিমধ্যে সংস্কারের জন্য ঢাকায় এস্টিমেট পাঠানো হয়েছে।
১৭ জানুয়ারি ২০২৪