বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় কৃষক হত্যাকান্ডের ঘটনার প্রতিবাদে ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার উপজেলার চতুল ইউনিয়নের পোয়াইল গ্রামের ভাঙচুর ও লুটপাটে ক্ষতিগ্রস্থ সরোয়ার শেখ (৮০) বাদি হয়ে মামলাটিকরেন।
এ মামলায় আসামি করা হয়েছে ৩০ জনকে। বোয়ালমারী থানা পুলিশ মামলার সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পোয়াইল গ্রামের আজিম মোল্যা (৩৩), আসাদ মোল্যা (৩৫), জাসুদ ফকির (৩০), আক্কেল মোল্যা (৪৫), সামচু মোল্যা (৩৮),শহিদুল মৃধা (৩৮), মিজানুর শেখ (৩৮)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার রাতে বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহবায়ক জামাল মাতুব্বর ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসমত মাতুব্বরের লোকজন দুই স্থানে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন শেষে রাতে খিচুরি ভোজের আয়োজন করে।
ওই গ্রামে জামাল মাতুব্বর ও হাসমত মাতুব্বরের মধ্যে দীর্ঘদিনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিলো। হাসমত
পক্ষের আকমল শেখ অনুষ্ঠানের খিচুরি খেয়ে বাড়ি এসে স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিড়ি কেনার জন্য দোকানে যায়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার গলায় ও শরীরে মারাত্মকভাবে কুপিয়ে রাস্তার পাশে
রেখে যায়। পরে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। আকমল হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে হাসমত গ্রুপের লোকজন প্রতিপক্ষ জামাল মাতুব্বরের সমর্থকদের বাড়িতে বুধবার দিবাগত রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর ও গবাদি পশুসহ ১৫-২০টি বাড়ির মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জামাল মাতুব্বরের সমর্থক সরোয়ার শেখ (৮০) বাদি হয়ে ৩০ জনকে আসামি করে শুক্রবার সকালে বোয়ালমারী থানায় দ্রুত বিচার আইন ২০০২ (সংশোধন) আইন
২০০১ এর ৪/৫ ধারায় মামলা দায়ের করেন।
শুক্রবার বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহাদত হোসেন বলেন, লুটপাটের ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। মামলার ৭ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি
আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় আকমল শেখ (৬০) নামে এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে গ্রাম্য দলাদলির প্রতিপক্ষ লোকজনের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে নিহত কৃষক পক্ষের লোকজন। এর আগে গত ২০১৮ সালে যুবলীগের আহবায়ক জামাল মাতুব্বর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসমত মাতুব্বরের মধ্যে সংঘর্ষে জামালের চাচাতো ভাই দেলোয়ার মাতুব্বর নিহত হয়।