বটগাছ বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদের মাঝে অন্যতম। আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় বটবৃক্ষ এখনো চোখে পড়ে। বটগাছ পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সমস্ত পাতা ঝরে যায়, বসন্তে গাছে নতুন পাতা গজায় এবং গ্রীষ্মে গাছে ফল ধরে। ফল ধরার মৌসুমে গাছের পাকা ফল খাওয়ার জন্য নানান প্রজাতির পাখির আগমন ঘটে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যর বৃদ্ধি, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, সুশীতল ছায়া দান, পশু-পাখির নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে বটগাছ বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানের হাট-বাজার, দেবালয়, তীর্থস্থান, সাধু সন্নাসীর আশ্রমস্থল, ঈদগাহসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বটগাছের উপস্থিতি চোখে পড়ে।
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের আরশাদ মাতুব্বরের ডাঙ্গী (নয়া ডাঙ্গী) গ্রামের প্রধান সড়কের পাশে পাশ্ববর্তি সদরপুর ও চরভদ্রাসন সিমানা ঘেষেঁ প্রায় শতবর্ষী এ বটবৃক্ষটি। কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িঁয়ে থাকা শতবর্ষী এ বটবৃক্ষটি আজ ২০ জুলাই বিকালে হটাৎ করে রাস্তার ওপর উপড়ে পরে যায়। এতে, পাশ্ববর্তি সদরপুর ও চরভদ্রাসনে সকল ধরনের যান-বাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে, শতবর্ষী বটবৃক্ষটি এক নজর দেখতে আশেপাশেরসহ দুর-দুরান্তের বিভিন্ন এলাকার মানুষ ছুটে আসে।
স্থানীয়রা জানান, এ বটবৃক্ষটি কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িঁয়ে ছিলো। কেন যে আজ হটাৎ করে গাছটি নিজ থেকে একা একা ওঠে পড়লো বুঝতে পারছিনা। আবার, কেউ কেউ বলছেন, পানি বাড়ার কারনে গাছের গোড়া নরম হয়ে নিচ থেকে গোড়াসহ ওঠে পরেছে। গাছটি হটাৎ করে উপড়ে পরায় স্থানীয়দের মানুষের মাঝে এক অজানা রহস্য ও গুঞ্জন চলছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা লাক আজাদ তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে জানান, এটি অতি প্রাচীন বটবৃক্ষ। আমার অনুমান ইতোমধ্যে গাছটি শততম জন্মদিন পার করেছে। তিনি আরো জানান, এবটবৃক্ষতলে কতদিন ক্লান্ত দুপুরে সুশীতল ছায়ায় বিশ্রাম নিয়েছি। স্থানীয়রা এর নীচে বাশঁ দিয়ে বেঞ্চ তৈরি করে দিয়েছেন। খাঁসেরহাট ও দেবনগড়হাটগামী মানুষজন যাতায়াতের পথে এবটবৃক্ষের নিচে বিশ্রাম নিতেন।
ওই গ্রামের বাসিন্দা মোতা মোল্যা জানান, ঐতিহ্যবাহী এ বটগাছটি আমি ছোট বেলা থেকে এমনি আকার-আকৃতি দেখে আসছি, তা ছাড়া আমাদের পূর্ব-পুরুষদের মুখে এ গাছটির ব্যাপারে নানান গল্প শুনেছি। এ গাছটির নিচে অনেক লোকের সমাগম ঘটতো, মাঝে মাঝে কারা যেনো গাছটির নিছে পুজোঁ-প্রার্থনাও দিতো।
জানা যায়, আরশাদ মাতুব্বরের ডাঙ্গী (নয়া ডাঙ্গী) গ্রামসহ আশেপাশের কয়েক গ্রামের মুরুব্বিরা দুর-দুরান্তের পথিকদের বিশ্রামের কথা ভেবে প্রধান সড়কটির পাশে প্রায় শত বছর পূর্বে এ বটগাছটি লাগিয়ে ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমনি সুলতানা জানান, শুনেছি বটগাছটি বহুদিনের পুরোনো। এ বটগাছটি কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িঁয়ে ছিলো। হটাৎ করে এতো বড় বটগাছটি কিভাবে ভেঙ্গে পরায় অবাক লাগছে। শুনলাম গাছটি হটাৎ করে আজ বিকালে প্রধান সড়কের ওপর ভেঙে পরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তাই এবিষয়ে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছি।