মনির মোল্যা, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সালথায় ফসলি জমিতে হালি পেঁয়াজের চারা রোপনের ধুম পড়েছে। এখানকার কৃষকদের প্রধান অর্থকরী মসলা জাতীয় ফসল পেঁয়াজ। এর চাষ করে বছরের অর্থনৈতিক চাহিদা মিটিয়ে থাকেন তারা। যেকারণে তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে প্রতিদিন খুব সকালে মাঠে নামেন। সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও তাদের মাঠেই পড়ে থাকতে দেখা যায়। সবগুলো জমিতেই দল বেধে পেয়াঁজ উৎপাদনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মোট কথা হালি পিয়াজ লাগানোর ধুম লেগেছে।
সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সালথায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষের লক্ষমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। ফরিদপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হালি পেঁয়াজ চাষ হয়ে থাকে সালথা উপজেলায়।
তবে গতবারের উৎপাদিত পেঁয়াজের আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় অনেক কৃষক এবার অন্য ফসল আবাদ করছেন বলে জানা গেছে। তাই পেঁয়াজের আবাদ এবার তুলনামূলক কম হচ্ছে।
সরেজমিনে কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঠান্ড ও কুয়াশা উপেক্ষা করে খুব সকালে একেকটা জমিতে দুজন করে শ্রমিক ছোট হাত নাঙ্গল দিয়ে জমির গুড়া মাটির ফাঁক করে দিচ্ছেন আর ৩০-৪০ জনের একদল শ্রমিক সারিবদ্ধভাবে বসে সেখানে পেঁয়াজের চারা রোপন করছেন। অন্যদিকে আরো একদল শ্রমিক পেঁয়াজের চারা (হালি) উত্তোলন করে এনে জমিতে কর্মরত শ্রমিকের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন। এরপর জমিতে চারা রোপনের কাজ শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গেই শ্যালোমেশিন দিয়ে জমিতে সেচ ও সার-ওষুধ ছিটিয়ে দেয়া হচ্ছে। এভাবেই চলছে পুরো এলাকায় পেঁয়াজ আবাদের কর্মযজ্ঞ।
সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের চান্দাখোলা এলাকার কৃষক মতিউর রহমান বলেন, এবার আমি ১৫ কেজি পেঁয়াজের বীজ বপণ করেছিলাম। সেখান থেকে যে চারা উৎপাদিত হয়েছে, তা দিয়ে ১৫ বিঘা জমিতে হালি পেঁয়াজ রোপন করছি। প্রতিবিঘা জমিতে ১৫ হাজার টাকা মত খরচ হচ্ছে। কিন্তু বাজারে পেঁয়াজের যে দাম, এই দাম চলমান থাকলে পেঁয়াজ আবাদ করে আমাদের লোকসান শুনতে হবে। আশা করি এবার পেঁয়াজের ফলন ও দাম ভাল পাবো।
সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জীবাংশু দাস বলেন, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে এবার ১০ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা পরিমানে মোট আবাদি জমির ৮০ শতাংশ। তবে এবার পেঁয়াজের পাশাপাশি অনেকে সরিষা ও গমের আবাদ করছেন। আমাদের পক্ষ থেকে এসব ফসল উৎপাদনে কৃষকদের নানা ধরণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
২১ ডিসেম্বর ২০২২