ডিজিটাল ঋণের যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের শীর্ষ মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের গ্রাহকরা জরুরি প্রয়োজনে মোবাইলের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ঋণ নিতে পারবেন। ঋণের সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। এই ঋণ পেতে কোনো নথিপত্র জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। শুধু বিকাশ অ্যাপে ক্লিক করে ঋণ আবেদন করতে হবে। বিকাশে লেনদেন প্রতিবেদন ও ব্যবহার ধরন দেখে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ঠিক করবে গ্রাহক ঋণ পাওয়ার যোগ্য কি-না। ঋণ পাওয়ার যোগ্য হলে তাৎক্ষণিকভাবে সিটি ব্যাংক ওই গ্রাহককে ঋণ দেবে এবং মুহূর্তেই ঋণের টাকা চলে যাবে বিকাশ হিসাবে।
প্রাথমিকভাবে একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় বিকাশের কিছু নির্দিষ্ট গ্রাহক সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। সফলভাবে প্রকল্প শেষে বাড়বে ঋণের পরিমাণ ও আওতা। সিটি ব্যাংক ও বিকাশ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, প্রকল্প সফলভাবে শেষ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে এই সেবা আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করবে সিটি ব্যাংক। ঋণ পাওয়ার উপযুক্ত বিকাশ গ্রাহকেরা এই সেবা পাবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, চীন, ভারত, ফিলিপাইনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ধরনের ঋণ প্রকল্পে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ঋণ প্রস্তাব পর্যালোচনা সুবিধা দেয় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আলিবাবা গ্রুপের অ্যাফিলিয়েট ‘অ্যান্ট ফিনান্সিয়াল’। এই প্রকল্পেও গ্রাহকদের ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্ট করবে এই বিশ্বখ্যাত ফিনটেক প্রতিষ্ঠানটি।
জানা যায়, ঋণ নেওয়ার পরের তিন মাসে সম-পরিমাণ তিন কিস্তিতে নির্ধারিত ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে। গ্রাহকের বিকাশ হিসাব থেকবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঋণ পরিশোধ হয়ে যাবে। নির্ধারিত পরিশোধ তারিখের আগে গ্রাহককে ক্ষুধে বার্তা এবং অ্যাপস এর মাধ্যমে এ সংক্রান্ত তথ্য পাঠানো হবে।
সিটি ব্যাংকের এই ডিজিটাল ঋণ গ্রহণকারীরা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করছেন কি-না, তা মূল্যায়িত হবে। পরবর্তীতে যে কোনো ধরনের ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেই এই মূল্যায়ন বিবেচিত হবে। কোনো গ্রাহক ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে বিধিবিধান অনুসরণে সিটি ব্যাংক ঋণ খেলাপির তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করবে।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, আমাদের দেশে অনেকেরই বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হঠাৎ অর্থের প্রয়োজন হয়। সেটি কিভাবে আরো সহজে তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায় এবং তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে সেই অর্থ ব্যবহার করতে পারেন, এটি মাথায় রেখেই এই ডিজিটাল ঋণের যাত্রা।
বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর বলেন, প্রান্তিকসহ সকল শ্রেণির মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন এবং আর্থিক অর্ন্তভুক্তিতে আরো জোরালো ভূমিকা রাখতে বিকাশের মত কার্যকর ডিজিটাল আর্থিক প্ল্যাটফর্ম ও বিশাল গ্রাহক ভিত্তিকে ব্যবহার করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সৃজনশীল নতুন নতুন সেবা প্রচলন করতে পারে। সিটি ব্যাংকের এই ডিজিটাল ঋণ প্রকল্প তারই একটি উদাহরণ। জরুরি মুহূর্তে তাৎক্ষণিক জামানতবিহীন এই ঋণ প্রান্তিক মানুষ, তরুণ সমাজ, প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের জন্য আর্শীবাদ হবে।
সংবাদ সুত্র ঃঃ কালেরকন্ঠ