ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদর বাজারের প্রাণ কেন্দ্রে জামে মসজিদ থেকে পাইলট হাই স্কুল পর্যন্ত প্রায় ২শ’ মিটার পাকা রাস্তা খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি সহ বার মাস কর্দমাক্ত হাটু পানি জমে রয়েছে। রাস্তার মধ্যে দুর্গন্ধময় কর্দমাক্ত পানিতে দিনরাত ছোট বড় বিভিন্ন শ্রেনীর যানের ভীরে বিপন্ন পরিবেশের মধ্যে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারনরা। একই সাথে উক্ত রাস্তার পচা কর্দমাক্ত পানির মধ্যে বাজারের হোটেল, রেষ্টুরেন্ট ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ফেলার কারনে হুমকীর মধ্যে পড়েছে জনস্বাস্হ্য। ফলে ওই একটি রাস্তা সংস্কারের অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন উপজেলার রাখো জনগোষ্ঠী।
জানা যায়, উপজেলা সদর বাজার জামে মসজিদ থেকে পূর্বদিকের হাই স্কুল রোডটি জনাকীর্ণ ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে উপজেলার গো-হাটা, পিয়াজ রসুন হাটা, পাইলট হাই স্কুল, সরকারি কলেজ ও গোপালপুর পদ্মার ঘাটে যাওয়ার একমাত্র রুট। রাস্তাটি প্রায় এক বছরকাল ধরে জনচলাচলের অযোগ্য হওয়ার ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। এছাড়া উক্ত রাস্তার কর্দমাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত পানি বিষিয়ে তোলেছে বাজারের পরিবেশ। উক্ত রাস্তা সংলগ্ন অন্ততঃ ১০টি হোটেল রেষ্টুরেন্টে দেখা দিয়েছে অস্বাস্হ্যকর পরিবেশ। এতে হুমকীর মধ্যে পড়েছে জনস্বাস্হ্য। শনিবার সকালে এক নসীমুন চালক আমীর হোসেন (৩৫) জানায়, “ পুরো লোড গাড়ী এ রাস্তায় নামিয়ে খানাখন্দের কারনে আর উঠতে পারি নাই। আধাঘন্টা পর বাজারের লেবার ডেকে এনে অনেক কষ্ট করে নসীমুন গাড়ীটি হাই স্কুল রোডে ঘুরিয়েছি। সে জানায়, ব্যবসায়ীরা যতই অনুরোধ করুক, এ ভাঙ্গা রাস্তা সংলগ্ন ব্যবসায়ীদের মালামাল আর আনবো না”।
খোজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে বাজারের মধ্যের উক্ত রাস্তা আরসিসি রোড নির্মানের জন্য ২২ লাখ টাকা মূল্যমানে টেন্ডার হওয়ার পরও প্রশাসনিক জটিলতার কারনে রাস্তাটি সংস্কার হয় নাই। শনিবার উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বাঁধন জানান, “ প্রায় এক বছর আগে দু’টি টেন্ডারমূলে দু’জন ঠিকাদারকে রাস্তা সংলগ্ন ড্রেন নির্মান ও রাস্তা সংস্কারের কাজ দেওয়া হয়েছিল। আগে রাস্তা সংলগ্ন পানি নিঃস্কাশনের ড্রেন নির্মান কাজ সম্পন্ন করার পর আরসিসি রোড নির্মান করার শর্ত ছিল। কিন্ত ড্রেন নির্মানের সাব-ঠিকাদার দুলাল হোসেন ফরিদপুর শহরের দুর্নীতির দায়ে আটককৃত সাজ্জাদ হোসেন বরকতের ‘প্রত্যাশা ট্রেডার্স’ লাইসেন্স মূলে কাজ শুরু করেছে বিধায় ড্রেন নির্মানেরই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট প্রশাসনিক জটিলতা নিরসনের জন্য ইতিমধ্যে আমি এক্সেন স্যারের সাথে কথা বলেছি। আগের টেন্ডার বাতিল করে রি-টেন্ডার দিয়ে কাজ করা কিছু সময়ের ব্যপার বলেও তিনি জানান”।
আর উক্ত আরসিসি রাস্তা নির্মান কাজের ঠিকাদার সুপ্তি ট্রেডার্সের মালিক আবুল কালাম জানান, “ উপজেলা বাজারের প্রাণ কেন্দ্রে উক্ত রাস্তার ১৭০ মিটার এলাকা প্রায় সময় পানি জমে থাকে বলে আরসিসি রোড নির্মানের জন্য ২২ লাখ টাকা দরপত্রমূলে প্রায় এক বছর আগে আমি ঠিকাদারী কাজটি নিই। আরেক ঠিকাদার দুলাল হোসেন ৭৭ লাখ টাকা ব্যায়ে উক্ত রাস্তা সংলগ্ন ড্রেনসহ উপজেলার আরও কয়েকটি ড্রেন নির্মানের জন্য ‘প্রত্যাশা ট্রেডার্স’ লাইসেন্সের অধীনে কাজ শুরু করার কিছুদিন পর সংশ্লিষ্ট মূল লাইসেন্সধারী মালিক সাজ্জাদ হোসেন বরকত দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার হয়েছেন। এখন ‘প্রত্যাশা ট্রেডার্স’ ঠিকাদারী লাইসেন্স বাতিল করে রি-টেন্ডার দিয়ে ড্রেন ও রাস্তা নির্মান করতে প্রায় দু’বছর সময় লাগবে বলে তিনি জানান”।