মোঃ মঈন উদ্দীন চিশতী, দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ সরকারি নির্দেশনায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা থেকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আগাম বোরো ধান কাটতে কৃষি শ্রমিক পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে ৩১ জন ধান কাটার শ্রমিক পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) চিরিরবন্দর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার অফিস মাঠ হতে সরকারিভাবে নওগা জেলার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে ৩১ জন কৃষি শ্রমিক। চিরিরবন্দর থেকে ধান কাটার শ্রমিক প্রেরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা সিদ্দিকা। এছাড়াও এসময় উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আজমল হক, চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার প্রমূখ।
শ্রমিকদের হাতে হাতে কৃষি বিভাগের প্রত্যায়নপত্র, উন্নতমানের ফেস মাস্ক, খাবার, জীবাণুনাশক স্প্রে, প্রয়োজনীয় ওষুধসহ বিভিন্ন উপকরণ তুলে দেওয়া হয়।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ক্ষেতের পাকা ধান কাটতে শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়ায় সরকার প্রধানের নির্দেশে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার ধান কাটার শ্রমিক বিশেষ ব্যবস্থায় প্রেরণের উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা সিদ্দিকা জানান, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে সকল উপজেলা থেকে প্রতিদিন কৃষি বিভাগ ও পুলিশের সহযোগিতায় ধান কাটার শ্রমিক পাঠানো হবে। ইতোমধ্যে নেত্রকোনায় দুটি মাঠের ধান কাটার অটোমেশিন প্রেরণ করা হয়েছে। ধান কাটতে যাওয়া কৃষি শ্রমিকদের খরচ সরকার বহন করছে।
প্রতি বছর বোরো মৌসুমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে কৃষি শ্রমিকরা দেশের হাওর ও দক্ষিণ অঞ্চলে আগাম বোরো ধান কাটতে বিভিন্ন জেলায় যায়। কিন্তু এবার মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি বিধিনিষেধ ও লকডাউনের কারণে কেউ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে পারছেন না। এতে করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আগাম বোরো ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছে সেখানকার চাষিরা। এ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীসহ কৃষি মন্ত্রণালয় নির্দেশনায় চিরিরবন্দর উপজেলা হতে ধান কাটার শ্রমিক পাঠানোর বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদুল হাসান রনি জানান, শ্রমিকরা যাতে করোনার সংক্রমণ থেকে নিরাপদে থাকে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার লোকজনের সাথে তাদের কেউ মেলামেশা করতে পারবে না। সেখানকার প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তার মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রত্যেক শ্রমিককে আলাদা করে থাকার ও খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শ্রমিকরা সেখান থেকে মাঠে গিয়ে ধান কাটার পর আবার নিজ নিজ কক্ষে ফিরে যাবেন।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে এ অঞ্চল থেকে এক হাজার কৃষি শ্রমিকের তালিকা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদেরকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাতে ধান কাটতে পাঠানো হবে।