সরকারি আইন লঙ্ঘন করে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় মধুমতি নদীসহ খাল-বিল ও জলাশয়ে কারেন্ট ও বেড় জাল অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে জাটকা, ডিমওয়ালা, পোনা মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী অকালে মারা যাওয়ায় জীববৈচিত্র্য হুমকিতে পড়েছে।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ,উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মৎস্যজীবিদের কাছ থেকে ম্যানেজ হয়ে যথাযথভাবে তদারকি ও অভিযান না চালানোর কারণে জেলেরা ওই নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার বন্ধ করেনি।
গত শুক্রবার মধুমতির নদীর আলফাডাঙ্গা উপজেলার টিকরপাড়া, বানা, দীগনগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে জেলেরা কারেন্ট ও বেড় জাল পেতে মাছ ধরছেন। এতে বড় মাছের পাশাপাশি ধরা পড়ছে জাটকা এবং পাঙাশ, রুই, কাতল ও আইড় মাছের পোনা। এ ছাড়া এ জালে ডিমওয়ালা পুঁটি, ট্যাংরা, বজুরি, কই, পাবদা, ঢেলা ও বাইলা মাছ, ব্যাঙ, সাপ ও কুঁচেসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীও আটকা পড়ছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুমন লাল দেবনাথ বলেন,মৎস্যজীবীদের ম্যানেজ বিষয় অস্বীকার করে তিনি বলেন, ১৯৫০ সালে সরকারের জারি করা মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কারেন্ট জালের উৎপাদন, বুনন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ, বহন, মালিক হতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। আইন ভঙ্গ করে যিনি কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরবেন, তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা এক থেকে দুই বছরের কারাদন্ড দেওয়া হবে। এ বিষয় তিনি অব্যশই গুরুত্ব দিবেন ও অভিযান করবেন।
নিষেধাজ্ঞা কথা উপজেলার টিকরপাড়া এলাকার জেলে পরিশোধ,মহাদেব,শান্ত বলেন, জাল সহজে পরিবহনযোগ্য ও দাম কম। এতে মাছ ধরা পড়ে বেশি। এ জন্য এ জালে মাছ ধরছেন।
নাম না বলা শর্তে উপজেলার এক মৎস্যজীবী দাবি করেন, তাঁর উপজেলায় এখন প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ টন মাছ ধরা হচ্ছে। বেশির ভাগ মাছই শিকার হচ্ছে কারেন্ট ও বেড় জালে। এর ৬০-৬৫ শতাংশই জাটকা, দেশি জাতের ডিমওয়ালা মাছ ও মা ইলিশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার মৎস্য দপ্তরের এক কর্মচারী বলেন, কারেন্ট ও বেড় জালের ব্যবহার বন্ধ না হলে দেশি জাতের মাছ টিকবে না। বিপন্ন হবে সাপ ও ব্যাঙসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীর জীবন। বিনষ্ট হবে জলজ জীববৈচিত্র্য। তিনি অভিযোগ করে বলনে,মৎস্য দপ্তরের লোকজনের উদাসীনতায় কারেন্ট জালের ব্যবহার বাড়ছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, কারেন্ট ও বেড় জালের ব্যবহার বন্ধ হয় ব্যাপারে গুরুত্ব দিব। কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ খতিয়ে দেখবো।