ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় ভাড়া বাড়ি থেকে সম্পা (২২) ভৌমিক নামে এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা সুনিতী বসাক বাদি হয়ে স্বামী বিকাশ বিশ্বাসকে (২৬) প্রধান আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলায় আরো তিনজনকে আসামী করা হয়েছে। তবে তারা পলাতক রয়েছে। রোববার ভোরে বোয়ালমারী পৌরসদরের সাবরেজিস্ট্রি অফিসের পাশে শাহনেওয়াজের পঁাচতলা ভবনের নিচতলায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে।
নিহতের মা দাবী করছে, তার মেয়েকে তার স্বামী বিকাশ বিশ্বাসসহ পরিবারের লোকজন হত্যা করার পর আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার জন্য ঘরের মধ্যে ঝুলিয়ে রেখেছে। পুলিশ স্বামী বিকাশ বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালমারী পৌরবাজারে ভাড়া থাকা উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের শেরাপুর গ্রামের বিমল বিশ্বাসের ছেলে বিকাশ বিশ্বাসের সাথে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বসবাস করা বোয়ালমারী উপজেলার বেড়াদী গ্রামের শ্যামল ভৌমিক ও সুনিতী বসাকের মেয়ে সম্পা ভৌমিকের বিয়ে হয় ২০১৭ সালের ২৩ জুলাই গোপালগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে। এ বছরের ১ জানুয়ারি মেয়েকে তুলে দেওযার পর থেকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করা হতো সম্পাকে। যদিও বিয়ের সময় স্বর্ণালংকারসহ জিনিসপত্র দেওয়া হয়। এ বছরের ১৭ জুলাই আরো ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয় স্বামী বিকাশকে। এরপরও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। রোববার ভোরে বিকাশের বাবা বিমল বিশ্বাস ফোন করে মেয়ের পরিবারকে জানায়, সম্পা অসুস্’ কিন্তু তারা সকালে এসে দেখেন লাশ পুলিশে থানায় নিয়ে গেছেন।
সুনিতী বসাক অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হ”েছ। এ জন্য সম্পার স্বামী বিকাশ বিশ্বাস (২৬), বিলাস বিশ্বাস (২৮), লিটা বিশ্বাস (৩০) ও শ্বশুর বিমল বিশ্বাসকে (৫৮) আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
তবে বিকাশ বিশ্বাসের বাবা বিমল বিশ্বাস জানান, তার বেটার বৌ আত্মহত্যা করেছে। হত্যা করার কোন ঘটনা ঘটেনি।
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুর রহমান বলেন, যৌতুকের দাবিতে হত্যাকান্ডের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ এর ক/৩০ ধারায় মামলা হয়েছে। তিনি নিজে হত্যাকান্ডের ঘটনাস্হল পরিদর্শন করেছেন। সুরতহাল করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর পাঠানো হয়েছে।