মেরামত কাজ চলাকালীন পুনরায় ভেঙে গেল ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধের প্রায় ৪৫ মিটার। এর আগে গত ১৯ জুলাই ফরিদপুর সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের শহর রক্ষাবাঁধের প্রায় ৭০ মিটারের মত জায়গা প্রবল পানির চাপে ভেঙে যায়। এতে সদর উপজেলার সাথে সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থানীয় জনগণের সহায়তায় অতি অল্প সময়ের মাঝেই বাঁধটি মেরামত করতে সক্ষম হয়।
কিন্তু গত কয়েকদিনে পদ্মার পানি ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে প্রচন্ড চাপে থাকা বাঁধটি আজ ২৭ জুলাই বিকাল ৪.৩০ টার দিকে পুনারায় ভেঙে যায়। এতে এলাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। পানির প্রবল স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে নিজাম তালুকদারের বসত বাড়িটি। হুমকির মুখে রয়েছে তার ছোট ভাই দেলোয়ার তালুকদারের বসত বাড়িটিও। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজা, পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু।
এদিকে বাড়িঘর হারানোয় পথে বসেছে নিজাম তালুকদার। তিনি জানান, আমাগের বাড়িঘর পদ্মায় ভাইঙ্গা গেছিল। এই জায়গায় আইসা আবার ঘর বানাইছিলাম, পানিতে সব নিয়া গেল। আমি একেবারে পথে বইসা গেলাম। তিনি আরও জানান, তার ঘরের প্রায় সকল আসবাবপত্রই পানিতে ভেসে গেছে। জানা যায় তার ঘরে খাট, আলমারি, টিভি, ফ্যানসহ চাল, ডাল, তরিতরকারি সব কিছুই পানিতে ভেসে গিয়েছে। তার ছোট ভাই দেলোয়ার তালুকদারের ঘরের সকল মালামাল স্থানান্তর করা হচ্ছে। যে কোন সময় তার বাড়িটিও পানিতে ভেসে যাবে।
জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, পানির চাপ বেশি থাকায় বাঁধটি বেশ কয়েক জায়গায় দুর্বল হয়ে গেছে। গত রবিবার বাঁধটি ভাঙলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় জনগণের সহায়তায় বাঁধের ভাঙা অংশটি আমরা মেরামত করতে সক্ষম হই। উভয় পাশের লোকজন পায়ে হেটে চলাচলও শুরু করেছিল কিন্তু আজ হঠাৎ করেই মেরামত করা অংশের পাশ থেকে প্রায় ৪৫ মিটারের মত জায়গা পুনরায় ভেঙে যায়। একপাশে পানির প্রবল চাপ থাকায় এমনটি হয়েছে।
আগামীকাল সকালে ইঞ্জিনিয়ার আসবে, তারা দেখে সিদ্ধান্ত নিবে কিভাবে বাঁধের মেরামত কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, নিম্নাঞ্চলের যারা পানিতে তলিয়েছে তাদেরকে আমরা নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসছি। এছাড়া বাঁধের উপর যারা আশ্রয় নিয়েছে তাদেরকেও আশ্রয়কেন্দ্রে প্রেরণ করা হচ্ছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে, নিয়মিত খাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে। আশাকরি কেউ খাদ্য সংকটে থাকবে না। এ পর্যন্ত পুরো জেলার বন্যা কবলিতদের জন্য ৪০০ মেট্রিকটন চাল, ৭ লক্ষ টাকা ও পর্যাপ্ত শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।