আগামী ৯ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইন ভর্তি কার্যক্রম। এবার শুধু অনলাইনে ভর্তি আবেদন করা যাবে, যা চলবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। একজন শিক্ষার্থী ১৫০ টাকা ফি দিয়ে কমপক্ষে ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করতে পারবে। পাশাপাশি এবছর শিক্ষামন্ত্রী ভর্তি ফি কিস্তিতে পরিশোধের সুবিধা রাখার আহ্বান জানান।
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক অনলাইন সভায় এসকল সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
সভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে যেন সমস্যা না হয় সেদিকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে। কোভিড-১৯ এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই হয়তো ভর্তি ফি একসাথে দিতে পারবে না। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা যেন কিস্তিতে ভর্তি ফি দেয়ার ব্যবস্থা রাখে’।
তবে ভর্তি প্রক্রিয়ায় জটিলতা ও ব্যয় কমাতে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া এবছর থেকে বাতিল করা হয়েছে।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক জানান, একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে এবার ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছাড়া অন্য কোটা থাকবে না। তবে প্রতিবন্ধী, বিকেএসপির শিক্ষার্থী, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে জাতীয় পর্যায়ে অসামান্য সাফল্যের অধিকারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ জন্য তাদের সনাতন (ম্যানুয়ালি) পদ্ধতিতে আবেদন করতে হবে।
অর্থাৎ কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৯৫ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে যা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে পূরণ করা হবে।
এছাড়া স্কুল ও কলেজ সংযুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত যোগ্যতা সাপেক্ষে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিজ প্রতিষ্ঠানের স্ব স্ব বিভাগে (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) ভর্তির সুযোগ পাবে। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব বিভাগে ভর্তি নিশ্চিত করেই কেবল অবশিষ্ট শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাবে। তবে এ সকল প্রতিষ্ঠানের সকল ভর্তিই অনলাইন হবে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশে দেরি হয়। গত ৩১ মে ফলফল প্রকাশ করা হলেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় একাদশে ভর্তি পিছিয়ে যায়।
প্রকাশিত ফলাফল অনুসারে এবছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন পরীক্ষার্থী। এসকল শিক্ষার্থীরা এখন একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অপেক্ষা করছেন।
আগামী ৯ আগস্ট থেকে একাদশে অনলাইনে ভর্তি আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। প্রথম পর্যায়ে ২০ আগস্ট পর্যন্ত আবেদন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। http://www.xiclassadmission.gov.bd এই ওয়েবসাইটে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে পারবে। তবে বিগত বছর গুলোর মতো এবার আর SMS এর মাধ্যমে আবেদনের সুযোগ নেই।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে বর্তমানে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আসন রয়েছে প্রায় ২৩ লাখ। ফলে উচ্চমাধ্যমিক ভর্তিতে আসন নিয়ে সমস্যা হবে না।বরং আসন খালি থাকবে। তবে সমস্যা হলো, ভালো কলেজগুলোতে আসন কম। ফলে সেখান তীব্র প্রতিযোগিতা হয়।
এসএসসি পরীক্ষার শেষ পর্যায়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি সংক্রান্ত কাজগুলো ঠিক করে রেখেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বোর্ড। তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল গত মে মাসের শুরুর দিকে এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করে, ১০ মে থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন নেওয়া শুরু হবে। সেই অনুযায়ী ১ জুলাই থেকে ক্লাস শুরুর কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পুরো শিক্ষাপঞ্জিই ওলটপালট হয়ে যায়।
গত বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকা বোর্ডের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। বুয়েটের কারিগরি সহায়তায় অনলাইনে ভর্তির এই কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে।
তবে ভর্তির কাজটি অনলাইনে হলেও কবে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে তা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নয়। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৬ আগস্ট পযন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা রয়েছে।