মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক রাহাত খানকে দাফন করা হয়েছে। শনিবার (২৯ আগস্ট) বাদ জোহর মিরপুরের বু্দ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত হন তিনি।
এর আগে, জাতীয় প্রেস ক্লাবে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে রাহাত খানের। আজ শনিবার (২৯ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে তাঁর জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা শেষে সর্বস্তরের মানুষ তাঁর মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
জানাজায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়েনর সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল।
এছাড়া জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহা, বিএফইউজে’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া কাজল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফরাজ, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়াসহ মরহুমের পরিবারের সদস্য ও সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অংশ নেন জানাজায়।
জানাজা শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে রাহাত খানের মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেওয়া হয় তাঁর সর্বশেষ কর্মস্থল ‘প্রতিদিনের সংবাদ’ কার্যালয়ে। এর পর বাদ জোহর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয় রাহাত খানকে।
এর আগে, গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর নিজ বাসায় মারা যান রাহাত খান। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। রাহাত খানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেছেন।
রাহাত খান বাংলাদেশের খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক। তিনি ১৯৪০ সালের ১৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার পূর্ব জাওয়ার গ্রামের খান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কথাসাহিত্যিক হিসেবে সমাদৃত হলেও কর্মসূত্রে রাহাত খান আপাদমস্তক সাংবাদিক। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। শিক্ষাজীবন শেষ করে ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে যোগদান করেন তিনি।
তারপর একে একে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেন রাহাত খান।
ষাটের দশক থেকে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকে কর্মরত ছিলেন। তিনি ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৬ সালে পান একুশে পদক। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান ১৯৭৩ সালে।
২০১৩ সালে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় দৈনিক বর্তমান পত্রিকা। সর্বশেষ তিনি দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। জনপ্রিয় ও বিখ্যাত থ্রিলার সিরিজ মাসুদ রানার রাহাত খান চরিত্রটি তাঁকে অনুসরণ করেই তৈরি করা।
তার উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘অনিশ্চিত লোকালয়’, ‘অমল ধবল চাকরি’, ‘ছায়া দম্পতি’, ‘শহর’, ‘হে শূন্যতা’, ‘হে অনন্তের পাখি’, ‘মধ্য মাঠের খেলোয়াড়’, ‘এক প্রিয়দর্শিনী’, ‘মন্ত্রিসভার পতন’, ‘দুই নারী’, ‘কোলাহল’ প্রভৃতি।